ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

টাঙ্গাইলের সেই দূরদর্শী ছেলেটি এআই নিয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে যাচ্ছেন ফ্রান্সে

আরাফাত ইয়াছার

প্রকাশিত: ১৪:৩৩, ২৬ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৪:৩৫, ২৬ জুলাই ২০২৫

টাঙ্গাইলের সেই দূরদর্শী ছেলেটি এআই নিয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে যাচ্ছেন ফ্রান্সে

ছবি :সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে কাজ করতে করতে যিনি একসময় বাংলাদেশের তরুণদের অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে উঠেছেন—মেহেদী হাসান রিফাত, এবার সেই স্বপ্নকেই আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি যাচ্ছেন ফ্রান্সে AI বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য।

টাঙ্গাইল জেলার ছেলে মেহেদী শুরু করেছিলেন একেবারে সাধারণ অবস্থা থেকে। পরিবার, সমাজ কিংবা প্রতিষ্ঠানের সাপোর্ট ছাড়াও তিনি নিজের চেষ্টায় দেশের অন্যতম তরুণ AI উদ্যোক্তা হিসেবে উঠে এসেছেন।

ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে AI—অভিযাত্রার শুরু

মেহেদী পড়াশোনা করেছেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। তবে তার প্যাশন ছিল প্রযুক্তি নিয়ে—বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অটোমেশন, ডিজিটাল মার্কেটিং, এবং প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট।

এই আগ্রহ থেকেই ২০২১ সালের দিকে তিনি AI ও গ্লোবাল মার্কেটিং প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে একটি ডিজিটাল এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করেন—MarkTech Global, যা বর্তমানে দেশ ও বিদেশে বিভিন্ন ক্লায়েন্টকে AI-চালিত মার্কেটিং সমাধান দিয়ে থাকে।

AI বিষয়ক প্রথম বাংলা বই প্রকাশ

২০২৪ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় তার লেখা বই “ChatGPT & AI Millionaire”, যা বাংলাভাষায় AI নিয়ে লেখা প্রথম বই। AI নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে আগ্রহ তৈরি করতে বইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে পাঠকরা মনে করেন। বইটি রকমারি ও অনলাইনেও বেস্ট-সেলার হিসেবে সাড়া ফেলেছিল।

বাংলাদেশের প্রথম AI Influencer: ‘Marvella’

AI ব্যবহারের কনটেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে মেহেদী তৈরি করেন ‘Marvella’—একজন ভার্চুয়াল ইনফ্লুয়েন্সার, যাকে তিনি AI দিয়ে তৈরি করেছেন। এই Marvella প্রজেক্ট বর্তমানে দেশের বিভিন্ন তরুণ নির্মাতা ও শিক্ষার্থীদের কাছে অনুপ্রেরণায় পরিণত হয়েছে। এমনকি ‘Marvella’ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে কল্যাবরেশন করেও কাজ করেছে, যা বাংলাদেশে বিরল।

তরুণদের প্রতি বার্তা

মেহেদী এখন যাচ্ছেন ফ্রান্স—AI ও ডেটা সায়েন্স নিয়ে উচ্চতর গবেষণা ও পড়াশোনার জন্য। তার এই যাত্রা শুধু একটি ডিগ্রি অর্জনের উদ্দেশ্য নয়; বরং এদেশে ফিরে আরও বেশি দক্ষ জনবল গড়ে তোলার পরিকল্পনাও তার রয়েছে।

জনকণ্ঠকে দেওয়া এক অনানুষ্ঠানিক মন্তব্যে তিনি বলেন:

“আমি যতটুকু শিখেছি, সেটুকু একদিন আরও ১০ জনকে শেখাতে চাই। AI শুধু প্রযুক্তি নয়—এটা ভবিষ্যতের জীবনযাত্রা।”

মেহেদী হাসান মেহেদী বিশ্বাস করেন, সাফল্যের জন্য দরকার নিজের ওপর বিশ্বাস ও অবিরাম চেষ্টা। তিনি মনে করেন, প্রযুক্তি-শিক্ষা প্রতিটি তরুণের কাছে পৌঁছানো উচিত, তা সে মফস্বল হোক কিংবা শহর।

টাঙ্গাইলের এই তরুণ এখন বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে। তার এই পথচলা নিঃসন্দেহে দেশের তরুণদের জন্য একটি বড় অনুপ্রেরণা এবং প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনাও।

সানজানা

×