ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

ইতিহাস বদলে দেওয়া ২০টি যুদ্ধবিমান, যুদ্ধের আকাশে ছিল যাদের রাজত্ব!

প্রকাশিত: ১৫:৩৬, ২৬ জুলাই ২০২৫

ইতিহাস বদলে দেওয়া ২০টি যুদ্ধবিমান, যুদ্ধের আকাশে ছিল যাদের রাজত্ব!

ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ২০টি যুদ্ধবিমান

১. Grumman F6F Hellcat (যুক্তরাষ্ট্র)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রশান্ত মহাসাগরে জাপানের বিপক্ষে এই বিমান যেন এক অকুতোভয় রক্ষক। মাত্র ২৭০টি হারিয়েও ৫,২০০–র বেশি শত্রু বিমান ভূপাতিত করেছিল। এটিই যুদ্ধের ভাগ্য বদলে দেয়।

২. Supermarine Spitfire (যুক্তরাজ্য)
ব্রিটেনের আকাশযুদ্ধের প্রতীক। হিটলারের বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি এই বিমান। এর ডিজাইন এবং রোলস-রয়েস ইঞ্জিন আজও কিংবদন্তি।

৩. P‑51 Mustang (যুক্তরাষ্ট্র)
এই দীর্ঘপাল্লার যুদ্ধবিমান না থাকলে ইউরোপে মিত্র বাহিনী এতটা এগোতে পারত না। যুদ্ধের শেষ দিকে এটি শত্রুপক্ষের জন্য আতঙ্ক হয়ে ওঠে।

৪. MiG‑15 (সোভিয়েত ইউনিয়ন)
কোরিয়ার আকাশে যখন যুক্তরাষ্ট্র আধিপত্য স্থাপন করতে চাইছিল, তখন এই সোভিয়েত বিমানে হানা দেয় নতুন বাস্তবতা। শক্তিশালী, কিন্তু নিচু উড়ানে দুর্বল ছিল।

৫. F‑86 Sabre (যুক্তরাষ্ট্র)
MiG‑15-এর জবাব দিয়েছিল এই বিমান। তার গতি, নকশা, এবং পাইলটদের প্রশিক্ষণের সমন্বয় যুদ্ধক্ষেত্রে সোনা ফলায়।

৬. F‑15 Eagle (যুক্তরাষ্ট্র)
এখনও পর্যন্ত আকাশযুদ্ধে কোনোবার হারেনি—এটা শুধু প্রযুক্তি নয়, পরিকল্পনা ও দক্ষতার জয়। ১০৪টি শত্রু বিমান ভূপাতিত করেছে একটিও না হারিয়ে।

৭. F‑35 Lightning II (যুক্তরাষ্ট্র)
আধুনিক যুগের ভবিষ্যত। একে বলে “stealth jet”—শত্রু দেখতে পায় না, অথচ আঘাত হানে ঠিক সময়ে, নির্ভুলভাবে।

৮. F‑22 Raptor (যুক্তরাষ্ট্র)
আকাশে একেবারে ‘দেখা যায় না, ধরা যায় না’ টাইপের বিমান। শত্রু জানতেই পারে না কোথা থেকে আঘাত আসছে।

৯. F/A‑18 Super Hornet (যুক্তরাষ্ট্র)
এই বিমান aircraft carrier থেকে উঠতে পারে, বহন করতে পারে বিস্তর অস্ত্র, আবার ফিরে আসে নিরাপদে। টেকসই এবং ভরসাযোগ্য।

১০. Eurofighter Typhoon (ইউরোপ)
যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি ও স্পেন একসঙ্গে মিলে এই যুদ্ধবিমান তৈরি করেছে। এটি আধুনিক, স্মার্ট, আর কৌশলগতভাবে খুবই পারদর্শী।

১১. Saab Gripen (সুইডেন)
হালকা ও দ্রুত, কম খরচে তৈরি এই বিমান উন্নত fly-by-wire প্রযুক্তি দিয়ে চালিত। ছোট রাস্তায়ও অবতরণ করতে পারে।

১২. Su‑27 Flanker (রাশিয়া)
দীর্ঘপাল্লার এই শক্তিশালী বিমানটি সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষ সময়ের গর্ব। এখনো তার উন্নত সংস্করণ ব্যবহার হচ্ছে।

১৩. MiG‑29 (সোভিয়েত ইউনিয়ন)
স্বল্প পাল্লার যুদ্ধের জন্য দুর্দান্ত। মাথায়-লাগানো টার্গেটিং সিস্টেম নিয়ে অনেক আধুনিক ফাইটার জেটের চেয়েও এগিয়ে।

১৪. MiG‑31 (রাশিয়া)
একেবারে উচ্চমাত্রার স্পিডে ও উচ্চতায় চলতে পারে। শীতল যুদ্ধের সময় এটি ছিল সোভিয়েতদের আকাশ রক্ষার প্রধান ভরসা।

১৫. MiG‑25 Foxbat (রাশিয়া)
গতি ছিল চোখ ধাঁধানো—Mach 3-এরও ওপরে যেতে পারত। তবে অতিরিক্ত গতির কারণে ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যেত বলে সীমাবদ্ধতা ছিল।

১৬. F‑14 Tomcat (যুক্তরাষ্ট্র)
"Top Gun" ছবির এই বিমান বাস্তবেও ছিল US Navy‑এর রত্ন। এর দীর্ঘপাল্লার রাডার ও মিসাইল অনেক দূর থেকেও শত্রুকে গুঁড়িয়ে দিত।

১৭. Spad XIII (ফ্রান্স)
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কার বিমান। ধাতবের বদলে কাঠ আর কাপড় দিয়ে তৈরি হলেও সাহস আর কৌশলে এই বিমান ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল।

১৮. Mitsubishi A6M Zero (জাপান)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে এটি ছিল আকাশের রাজা। অসাধারণ গতি ও লম্বা পাল্লা ছিল, তবে পরে পশ্চিমা বিমানগুলো এটি পেছনে ফেলে দেয়।

১৯. Messerschmitt Bf 109 (জার্মানি)
হিটলারের জার্মানির মূল যুদ্ধবিমান। অসংখ্য যুদ্ধে অংশ নিয়েছে—Spitfire-এর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল এটি।

২০. F‑15EX Eagle II (যুক্তরাষ্ট্র)
এখনকার যুগের নতুন F‑15। সব পুরনো গুণ ধরে রেখেই আধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি যোগ করে ভবিষ্যতের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।

কেন এই তালিকাটি আলাদা?
এই তালিকাটি শুধু প্রযুক্তি বা গতি দিয়ে বানানো হয়নি। প্রতিটি বিমানের পেছনে রয়েছে মানুষের বুদ্ধি, সাহস, চেষ্টার গল্প—কখনো যুদ্ধক্ষেত্রে বেঁচে ফেরার, কখনো একটি জাতিকে রক্ষা করার, কখনো প্রযুক্তিকে একধাপ এগিয়ে নেওয়ার।

 

মারিয়া

×