
ছবি: জনকণ্ঠ
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট হামিদিয়া আলিম মাদরাসারএকটি একতলা একাডেমিক ভবন রয়েছে। ভবনটি ২০১০ সালের দিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আজও ভবনটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ভবনটির অনেক অংশ ধসে পড়েছে, ভবনের বিভিন্ন স্থানের বিম এবং পলেস্তারা খসে পড়ে রড বের হয়ে আছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার প্রায় ১৫ বছর আগে এই ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ। তবে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান করছেন শিক্ষকেরা। ভবনটির বেহাল দশার কারণে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শিক্ষার্থীরাও পাঠগ্রহণের সময় থাকেন আতঙ্কে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নে একমাত্র মাদরাসা এটি। এই মাদরাসায় ইবতেদায়ী থেকে আলিম পর্যন্ত লেখাপড়া হয়। লেখাপড়ার দিক থেকেও এগিয়ে আছে মাদরাসাটি। কিন্তু ভবনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে এটি যেকোনো সময় সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের এই বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না।
মাদরাসা কমিটির সভাপতি ও বালারহাট ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত রতন জানান, মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পার হলেও তেমন কোন সংস্কার হয়নি। বর্তমানে মাদরাসাটিতে ৩৫০ জন শিক্ষার্থী আছে, দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফলাফল এবারে দাখিল পরীক্ষায় ২৬ জন অংশগ্রহণ করে ২৩ জন পাশ করেছে । মাদরাসাটি পরিত্যক্ত ঘোষণা হওয়ার পরও শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। শিক্ষকেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করছেন। মাদরাসাটির পরিত্যক্ত ভবনটি সংস্কার জরুরি।
৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহজামিন, ফাহমিদা আরেফিন বলেন, এইখানে বসে লেখাপড়া করতে ভয় লাগে যদি ছাদ ভেঙে আমরা আহত হই। অভিভাবক সাইফুল ইসলাম ও আব্দুল হামিদ বলেন, পরিত্যক্ত ভবনে ক্লাস নেওয়া হয়। এ কারণে আমরা সন্তানদের মাদরাসায় পাঠাতে ভয় পাই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদরাসাটির তিন কক্ষবিশিষ্ট পরিত্যক্ত ভবনটিতে একটিতে শিক্ষক শিরনায়তন। আর বাকি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। ভবনটির প্রতিটি পিলারে বড় বড় ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ভবনের সামনের অংশের বিম ভেঙে গেছে। বিদ্যালয়ের ভেতরের বিমগুলোর অবস্থাও করুণ। যেকোনো সময় ভবনটি ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্যান্য শ্রেণির পাঠকক্ষের অবস্থা আরও নাজুক। সেগুলোও অনেক পুরনো ভাঙ্গা টিনের ছাউনির কয়েকটি কক্ষে চলে পাঠদান।
বালারহাট ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা তাহেরুল ইসলাম বলেন মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নে একটিমাত্র মাদ্রাসা সেটি হচ্ছে বালারহাট হামিদীয়া আলিম মাদ্রাসা বিগত সরকারের আমলে উন্নয়ন সংস্কার থেকে আমরা বৈষম্য শিকার, ঝুঁকিপূর্ণ জরাজীর্ণ খসে পড়া ভবনেই চলছে পাঠ দান ভবন না থাকায় ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছি বৃষ্টি দিনে ছাদের পানি পড়ে শিক্ষার্থীদের বইপত্র গা ভিজে যায়, ঝড় বাতাস এলেই শিক্ষক সহ ছাত্র-ছাত্রীরা ভবনের বাইরে বেরিয়ে আসে।আতঙ্ক নিয়ে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক ক্লাসে বসে থাকেন। মাননীয় সরকারের কাছে আমাদের দাবি অতি দ্রুত একটি বহুতল ভবন আমাদের মাদ্রাসায় হলে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক মনোরম পরিবেশে শিক্ষা প্রদান ও শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে বলে মনে করেন।
মিঠাপুকুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মোমেন মন্ডল বলেন,বালারহাট মাদ্রাসায় আমি কখনো যাইনি বিষয়টি আমার জানা নেই, মাদরাসার পরিত্যাক্ত ভবনের বিষয়টি ইউএনও স্যার সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।
আবির