ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

রাশিয়ার হাতে নতুন পারমাণবিক সাবমেরিন: মস্কোর যে পদক্ষেপে দুশ্চিন্তায় পশ্চিমারা

প্রকাশিত: ০২:১৭, ২৬ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০২:৪৪, ২৬ জুলাই ২০২৫

রাশিয়ার হাতে নতুন পারমাণবিক সাবমেরিন: মস্কোর যে পদক্ষেপে দুশ্চিন্তায় পশ্চিমারা

ছবি: সংগৃহীত

আসছে রোববার রাশিয়ার নৌবাহিনী আর কুচকাওয়াজ করবে না মস্কোর রাজপথে। দেশটির নৌ দিবস উপলক্ষে যে বড়সড় আয়োজন হতো, তা এবার বাতিল করা হয়েছে নিরাপত্তাজনিত কারণে—এমনটাই বলছে ক্রেমলিন। তবে বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, এর পেছনে নিরাপত্তার চেয়ে বড় কোনো রাজনৈতিক বার্তা লুকিয়ে থাকতে পারে। কারণ, ইতোমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অংশগ্রহণে ফ্ল্যাগশিপ উদ্বোধন অনুষ্ঠান।

সেই অনুষ্ঠানে সামনে এসেছে রাশিয়ার চতুর্থ প্রজন্মের নতুন পারমাণবিক সাবমেরিন ‘কেনিয়াস পোজারসকি’। এই ডুবোজাহাজ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম এবং পারমাণবিক ওয়ারহেড নিয়ে হামলা চালানোর সামর্থ্য রাখে। আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ উত্তরাঞ্চলের নৌবহরে এটি যুক্ত হয়েছে সম্প্রতি।

শ্বেত সাগর তীরবর্তী সেভেরভিনস্ক শহরের ‘সেভমাশ’ জাহাজ কারখানায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন পুতিন। এই সেভমাশই রাশিয়ার একমাত্র পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে পুতিন বলেন, “আমাদের লক্ষ্য কৌশলগত পারমাণবিক সাবমেরিন সক্ষমতায় বিশ্বসেরা হওয়া। এভাবেই বিশ্বশক্তির ভারসাম্য রক্ষা করবে রাশিয়া।” তিনি আরও জানান, নৌপরমাণু ইউনিটের অংশ হিসেবে শিগগিরই আরও চারটি ‘বোরেই-এ’ শ্রেণীর সাবমেরিন যুক্ত হবে রুশ বহরে, যাদের মধ্যে দুটি বর্তমানে নির্মাণাধীন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, ‘কেনিয়াস পোজারসকি’ সাবমেরিনটি আসলে আগেই ফ্ল্যাগশিপ হওয়ার কথা ছিল, তবে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার সক্ষমতা যাচাইয়ে সময় লেগে যায়। তিনি আরও বলেন, রুশ নৌবাহিনীর আধুনিকায়ন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে শিগগিরই প্রেসিডেন্ট পুতিন সাংবাদিকদের সামনে কথা বলবেন।

যুক্তরাষ্ট্রকে চাপে ফেলতে চায় মস্কো?

২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া দখলের পর থেকেই রাশিয়া তার নৌবহরকে নতুন করে সাজাতে শুরু করে। ইতোমধ্যে পূর্ব এশিয়ায় পাঁচটি ‘বোরেই-এ’ শ্রেণীর সাবমেরিন মোতায়েন করেছে মস্কো।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া এখন এমন সাবমেরিন তৈরিতে জোর দিচ্ছে যেগুলো সহজে শনাক্ত করা যাবে না—যাতে করে মার্কিন সাবমেরিন ধ্বংসকারী জাহাজগুলো বিপাকে পড়ে। চতুরতার সঙ্গে গেম প্ল্যান সাজাচ্ছে মস্কো।

রাশিয়ার পরিকল্পনা অনুযায়ী, ব্যারেন্টস সাগর পেরিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উত্তরাঞ্চলীয় নৌবহরে পৌঁছাবে—এর পরেই শুরু হবে ‘আসল খেলা’। অর্থাৎ, রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্রকে ব্যবহার করতে চায় ‘নিবারণ কৌশলের’ অংশ হিসেবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুতিনের উপস্থিতি, বক্তব্য এবং ‘কেনিয়াস পোজারসকি’র ফ্ল্যাগশিপ হিসেবে উত্থান—সবমিলিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের মনে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করবে। মস্কোর এই প্রদর্শনী যেন এক ধরনের বার্তা, যে রাশিয়া এখনো পরমাণু শক্তির প্রতিযোগিতায় শীর্ষস্থানেই থাকতে চায়।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=cBLO1qhQIuk

রাকিব

×