ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

‘ব্রেন-ইটিং’ অ্যামিবা! পানিতে নামলেই হতে পারে মৃত্যু- সতর্ক না হলে সর্বনাশ!

প্রকাশিত: ১৫:২৬, ২৬ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৫:২৬, ২৬ জুলাই ২০২৫

‘ব্রেন-ইটিং’ অ্যামিবা! পানিতে নামলেই হতে পারে মৃত্যু- সতর্ক না হলে সর্বনাশ!

ছবি: সংগৃহীত।

দক্ষিণ ক্যারোলিনায় একটি নতুন ‘ব্রেন-ইটিং’ অ্যামিবা সংক্রমণের ঘটনা ফের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ফক্স নিউজ ডিজিটাল জানিয়েছে, স্থানীয় এক লেকে সাঁতার কাটার পর একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পরে জানা যায়, সে Naegleria fowleri নামক প্রাণঘাতী অ্যামিবার সংস্পর্শে এসেছিল—যা উষ্ণ মিঠা পানিতে (যেমন হ্রদ, নদী, হট স্প্রিংস) জন্মায় ও বেড়ে ওঠে।

এই অ্যামিবা দ্বারা সৃষ্ট রোগের নাম Primary Amebic Meningoencephalitis (PAM), যা প্রায় সবক্ষেত্রেই প্রাণঘাতী। কলম্বিয়ার প্রিসমা হেলথ রিচল্যান্ড হাসপাতাল ২২ জুলাই শিশুটির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে, বলে জানিয়েছে সাউথ ক্যারোলিনা ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ (DPH)।

ব্রেন-ইটিং অ্যামিবা: আসলে কী করে এটি?
Naegleria fowleri বাস্তবে ‘মস্তিষ্ক খেয়ে ফেলে’ না। বরং, যখন নাক দিয়ে জোরে পানি ঢুকে পড়ে (যেমন লাফিয়ে পড়া, পানিতে ডুব দেয়া, বা অপর্যাপ্তভাবে পরিষ্কার নেটি পট ব্যবহার করা), তখন এই অ্যামিবা নাকের ভেতর দিয়ে ঘ্রাণ স্নায়ু বেয়ে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায় এবং সেখানে টিস্যু ধ্বংস করতে শুরু করে।

পরিসংখ্যান ভয় জাগায়:
১৯৬২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১৫০টির বেশি সংক্রমণের মধ্যে মাত্র ৪ জন রোগী বেঁচে ফিরেছেন, জানিয়েছে সিডিসি।

প্রাথমিক উপসর্গ যেগুলো হালকাভাবে নিলে চলবে না:
PAM রোগের উপসর্গগুলো ভাইরাসজনিত সাধারণ অসুস্থতার মতোই, যা একে আরও বিপজ্জনক করে তোলে। সাধারণত সংক্রমণের ১ থেকে ১২ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়:

তীব্র মাথাব্যথা (বিশেষ করে কপালের মাঝখান বা চোখের পেছনে), জ্বর, বমি ভাব বা বমি, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, ভারসাম্য হারানো, আলোতে সংবেদনশীলতা, বিভ্রান্তি বা আচরণগত পরিবর্তন।

চিকিৎসা না নিলে দ্রুত পরিস্থিতির অবনতি ঘটে—হ্যালুসিনেশন, খিঁচুনি ও কোমার মতো জটিলতা দেখা দেয়। এই পর্যায়ে পৌঁছালে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।

কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই অ্যামিবার হাত থেকে বাঁচতে নিচের নিয়মগুলো মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি:

কখনোই নাকে জোরে পানি প্রবেশ করতে দেবেন না—বিশেষ করে সাঁতার কাটা বা ডুব দেওয়া সময়।

উষ্ণ মিঠা পানিতে সাঁতারের সময় নাক ঢেকে রাখার জন্য নোজ ক্লিপ ব্যবহার করুন।

অগভীর ও উষ্ণ পানিতে পেছনের গাদাগাদা মাটি/আবর্জনা না নাড়াচাড়া করাই ভালো—কারণ সেখানেই অ্যামিবা থাকে।

নেটি পট বা নাক পরিষ্কারের যেকোনো পদ্ধতির জন্য শুধু সিদ্ধ, ডিস্টিলড বা জীবাণুমুক্ত পানি ব্যবহার করুন—নলকূপ বা কলের পানি নয়।

গরমে সতর্ক থাকুন:
গ্রীষ্মে হ্রদ বা নদীতে আনন্দ করতে সমস্যা নেই। তবে এরপর যদি তীব্র মাথাব্যথা বা আচরণগত অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, অবহেলা করবেন না। দ্রুত চিকিৎসা নিন। কারণ সময়ই এখানে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর।

সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।

মিরাজ খান

×