ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

পুলিশ মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে আইজিপি

সততা, পরিশ্রম আর স্বপ্ন জাতির ভবিষ্যৎ রচনা করে

প্রকাশিত: ১৫:১৯, ২৬ জুলাই ২০২৫

সততা, পরিশ্রম আর স্বপ্ন জাতির ভবিষ্যৎ রচনা করে

বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল বাহারুল আলম, বিপিএম বলেছেন, "সততা, পরিশ্রম আর স্বপ্ন জাতির ভবিষ্যৎ রচনা করে।"

আইজিপি আজ শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত সদস্যদের কৃতী সন্তানদের “বাংলাদেশ পুলিশ মেধাবৃত্তি-২০২৩” প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) আবু নাছের মো. খালেদ, বিপিএম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এআইজি (এডুকেশন, স্পোর্টস অ্যান্ড কালচার) শামীমা পারভীন।

কৃতি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশনস) শাহাজাদা মো. আসাদুজ্জামান এবং ডিএমপির কনস্টেবল মো. হযরত আলী। বৃত্তিপ্রাপ্তদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন এসএসসি পরীক্ষায় সাফল্য অর্জনকারী মো. নওরোজ ইসলাম যুবরাজ এবং এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্ব অর্জনকারী ইয়ানা আঞ্জুম।

মেধাবী সন্তানদের উদ্দেশে বাহারুল আলম বলেন, “জীবন সবসময় সোজা পথে চলে না—কখনো সাফল্য, কখনো ব্যর্থতা—এই দুই মিলেই জীবনের প্রকৃত রূপ। ব্যর্থতা এলে তোমরা কখনো ভেঙে পড়বে না, বরং তা থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও দৃঢ় চিত্তে এগিয়ে চলবে। মনে রাখবে, তোমাদের অদম্য মেধা, আকাশছোঁয়ার স্বপ্ন, পাহাড়সম দৃঢ়তা একদিন পৌঁছে দেবে সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে, যেখানে দাঁড়িয়ে পুরো পৃথিবী তাকাবে অবাক বিস্ময়ে।”

তিনি বলেন, “আমি মনে করি, আমাদের সন্তানেরা বড় হবে, তারা আরও কৃতিত্বপূর্ণ কাজ করবে। শুধু পড়াশোনায় নয়, তারা বাস্তব জীবনের কর্মক্ষেত্রেও সাফল্যের স্বাক্ষর রাখবে। আমাদের দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সুযোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে উঠবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমি চাই, এ শিশুরা, এ তরুণরা হোক আগামী দিনের আদর্শ দেশপ্রেমিক, মানবিক ও কর্মনিষ্ঠ নাগরিক। তারা হোক নৈতিক নেতৃত্বের প্রতীক, হোক সাহস ও সম্ভাবনার আলোকবর্তিকা।”

অভিভাবকদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, “আপনাদের সন্তানদের সাফল্যের পেছনে আপনাদের অবদান অনস্বীকার্য। দায়িত্বের প্রয়োজনে পরিবারের পুলিশ সদস্যটি অনেক সময় সন্তানদের জন্য যথেষ্ট সময় দিতে পারেন না। তবুও আপনারা সন্তানদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন—এটা সত্যিকারের এক বিরল বিপ্লব বলে আমি মনে করি। আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ পুলিশের এ মেধাবৃত্তি কর্মসূচি কেবল পুরস্কার নয়, এটি একটি দৃষ্টান্ত।”

তিনি আরও বলেন, “পুলিশে চাকরি করে আপনারা যেভাবে সন্তানদের যত্ন করেছেন, খেয়াল রেখেছেন, স্কুলে পাঠিয়েছেন এবং তারা কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করেছে—এটা আমাদের জন্য গর্বের।”

সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) আবু নাছের মো. খালেদ, বিপিএম বলেন, “বাংলাদেশ পুলিশের মেধাবী সন্তানদের আজকের এ স্বীকৃতির মূল উদ্দেশ্য হলো তাদের অনুপ্রাণিত করা—যাতে তারা দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেদের গড়ে তুলতে পারে।”

পরে প্রধান অতিথি মেধাবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও নগদ অর্থ তুলে দেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে গত ২১ জুলাই রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সকল বিষয়ে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৭৩৬ জন এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সকল বিষয়ে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ১৫৩ জনসহ মোট ৮৯৩ জন মেধাবৃত্তি পেয়েছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ২৪৮ জন এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৫০ জনসহ মোট ২৯৮ জনকে মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। অন্যান্যদের সংশ্লিষ্ট পুলিশ ইউনিটে মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। 

সানজানা

×