ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

মানসিক চাপ থেকে মুক্তির সাধারণ ৭ অভ্যাস, যা আরও বেশি ক্ষতিকর

প্রকাশিত: ০৭:১৯, ২৫ জুলাই ২০২৫

মানসিক চাপ থেকে মুক্তির সাধারণ ৭ অভ্যাস, যা আরও বেশি ক্ষতিকর

ছবি: সংগৃহীত

আপনি কি মানসিক চাপ থেকে মুক্তি খুঁজছেন? কিন্তু দ্রুত আরাম পাওয়ার চেষ্টায় অনেকেই ফোন স্ক্রল করা, স্বস্তিদায়ক খাবার খাওয়া বা মদ পান করার মতো উপায় বেছে নেন। যদিও এগুলো প্রথমে কিছুটা সহায়ক মনে হয়, সময়ের সঙ্গে এগুলো উদ্বেগ বাড়িয়ে, ঘুমে ব্যাঘাত ঘটিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাতে পারে। আসলে, সব মানসিক চাপ কমানোর উপায় কাজ করে না যেভাবে আমরা ভাবি। যদি আপনি ক্লান্ত বা আটকে থাকার মত অনুভব করেন, তবে হয়তো আপনার অভ্যাসগুলো পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে। নানা গবেষণায় দেখা গেছে, এই সাতটি অভ্যাসই আসলে মানসিক চাপ বাড়াতে পারে।

১. ডুমস্ক্রলিং (অবাধে ফোন স্ক্রোল করা)

ফোনে অজান্তে বারবার স্ক্রল করা মনকে শান্ত না করে আরো চাপ বাড়ায়। নেতিবাচক খবর এবং অপরের জীবনের নিখুঁত ছবি দেখে আপনি আরও ক্লান্ত ও একাকী অনুভব করতে পারেন। এর বদলে সময় নিয়ন্ত্রণ করুন এবং পড়া, হালকা ব্যায়াম বা ছোট একটা হাঁটাহাঁটি করুন।

২. অতিরিক্ত চিন্তা

কোনো সমস্যা নিয়ে বারবার চিন্তা করা মানসিক অবসাদ, উদ্বেগ ও অনিদ্রার কারণ হতে পারে। সচেতন মনোযোগ (মাইন্ডফুলনেস) বা পাঁচটি দেখার/শোনার জিনিসের নাম বলা আপনার মন শান্ত রাখতে সাহায্য করবে।

৩. চাপের সময় অতিরিক্ত খাওয়া

মন খারাপের সময় খাবারে মন দেওয়া স্বাভাবিক, তবে দীর্ঘমেয়াদে এটি ওজন বৃদ্ধি ও দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স রাখুন এবং হাঁটাহাঁটি, বন্ধুদের ফোন করা বা শখের কাজ করুন।

৪. সমস্যা এড়িয়ে চলা

কঠিন কোনো আলাপ এড়িয়ে চলা সাময়িক স্বস্তি দিলেও সমস্যা বাড়ায়। ছোট ছোট কাজ ভাগ করে ধীরে ধীরে এগোনো উত্তম।

৫. মদ্যপান

মদ মস্তিষ্ককে চাপ মোকাবিলা করতে ব্যর্থ করে, উদ্বেগ বাড়ায় এবং ঘুমকে প্রভাবিত করে। এর বদলে হার্বাল চা, গরম গোসল বা সুরেলা সংগীত শুনুন।

৬. অবিরাম সমস্যা নিয়ে কথা বলা

আপনার সমস্যা নিয়ে কথা বলা দরকার, তবে অতিরিক্ত নেতিবাচকতা শুধুমাত্র চাপ বাড়ায়। সীমাবদ্ধ সময়ের জন্য কথা বলুন এবং সমাধান খোঁজার দিকে মনোযোগ দিন।

৭. অনিয়মিত ঘুম

মানসিক চাপ অনেক সময় অতিরিক্ত ঘুম পরে অনিদ্রায় পরিণত হয়। দুটোই স্বাভাবিক ঘুমের চক্রে বিঘ্ন ঘটায়, ফলে আপনি ক্লান্ত ও অস্থির বোধ করেন। নিয়মিত ঘুমের সময় ঠিক রাখুন এবং ৭ থেকে ৯ ঘণ্টার গুণগত মানসম্পন্ন ঘুম নিশ্চিত করুন।

মানসিক চাপ মোকাবেলার উপায়

  • মাইন্ডফুলনেস: শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম ও ধ্যান মানসিক চাপ কমায়।
  • ব্যায়াম: হালকা হাঁটাহাঁটি ইন্দোরফিন মুক্তি দেয় এবং চাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • প্রকৃতির মাঝে সময়: প্রতিদিন ২০ মিনিট পার্ক বা বাগানে সময় কাটানো নার্ভাস সিস্টেম শান্ত করে মেজাজ ভালো রাখে।

মানসিক চাপ মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তবে তা জীবন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। যদি চাপ বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা দৈনন্দিন কাজে সমস্যা সৃষ্টি করে, তবে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ নিন। দ্রুত আরামের বদলে সচেতন ও টেকসই পদ্ধতি বেছে নিন। ধীরে ধীরে সুস্থতা ফিরে আসবে, এক ছোট পদক্ষেপে এক সময় আপনি মানসিক চাপের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে পারবেন।

 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

রাকিব

×