ফুলের বাগান নামে খ্যাত রাজধানীর গুলিস্তান। বৃহত্তর এলাকা। উপর দিয়ে চলমান ফ্লাইওভার। আন্ডারপাস। খানিকটা এগোলেই চোখে পড়বে বঙ্গভবন যেখানে রাষ্ট্রপতির অফিস ও বাসভবন। শিমু পার্ক, নাট্যশালা, বড় বড় মার্কেট, পুলিশ স্টেশন কত কি। ঢাকার সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ লোকালয় এই গুলিস্তান এলাকা। পায়ে পায়ে মানুষ। সুঁই ফালানোর এক ইঞ্চি জায়গা পাওয়া যায় না। এতকিছুর মাঝখানে রয়েছে মুরগির আড়ত। হাঁস, মুরগি, কবুতর, বেজি, পশু পাখি সকল কিছু পাওয়া যায় এখানে। কুকুর-বিড়ালও রয়েছে বিক্রির জন্য। দূষণের কথা বলবেন? সকল প্রকার দূষণ দেখতে পাবেন, হাজার হাজার পথিক পথ চলতে গিয়ে সঙ্গে নিতে হচ্ছে বাতাসে ওড়তে থাকা মোরগ-মুরগি, পশুপাখির যতসব পালক। বিক্রমপুরী ভাষায় ‘ফইড়’। ওইসব পালক জামা, পেন্ট, টুপি, সালোয়ার, কামিজ সবকিছুতে লেগে থাকবে। মুখম-ল বাঁচাতে গিয়ে অন্যসব অরক্ষিত থাকে ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। বায়ু দূষণ, পরিবেশ দূষণ, বস্ত্র দূষণ, যাত্রীবাহী বাস, যানবাহন দূষণ সে এক অস্বস্তিকর অবস্থার মুখোমুখি। রাস্তার ওপর শত শত মোরগ-মুরগির ঝুড়ি। হেঁটে যাবার সুযোগ নেই। রুমাল, টিসু পেপার কাজে আসবে না। গিলে খেতে হবে সব দুর্গন্ধ। আকাশে-বাতাসে, সড়কে সবদিকে উড়ছে পালক। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খামখেয়ালিপনায় যত্রতত্র রাখা হচ্ছে খাসি, বকরি, মোরগ, মুরগি, কুকুরছানা, বিড়াল, কবুতর, খরগোশ, নানা প্রজাতির পাখি। ময়লা-আবর্জনা, মৃতদেহ সবকিছুর ভেতর দিয়ে যাতায়াত চলে। বঙ্গভবনের ভেতরে পালক পাওয়া যেতে পারে নিঃসন্দেহে। কে বলবে? কাকে বলবে? মধ্যখানে সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্স। উয়ারী থানা। উয়ারী পুলিশ বক্স বা ফাঁড়ি। সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক? তিনি কি শহর ঘুরে দেখেন? রাজা যেন মহারাজা। সন্ত্রাসীদের আস্তানা। কোন্ সে পাবলিক যার সাহস আছে বলার।
এম আলী
শ্রীনগর।
অবমূল্যায়ন হলে ...
সবচেয়ে বেশি দামে অথচ সবচেয়ে কম সময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হওয়ায় স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব এবং আনুষ্ঠানিকতা অনেকের কাছেই উপেক্ষিত বলে মনে হয়। স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে আত্মঘাতী বিতর্ক স্বাধীনতার সুফলভোগীদের ক্ষমতা ও নষ্ট রাজনীতির উপাদানে পরিণত হওয়ায় দৃশ্যত উত্তর প্রজন্মের কাছে এটি ছুটির দিন হিসেবেই পালন করা হচ্ছে। এই দিনটিকে ছিনিয়ে আনতে কত মূল্য দিতে হয়েছিল শুধু পরীক্ষায় পাসের জন্য পাঠ্যবই থেকে মুখস্থ করলেও আমাদের তরুণরা সর্বজনীন জাতীয় উৎসব হিসেবে দিনটিকে পালন করতে শেখে নাই। বাস্তবতার নিরিখে কেবলমাত্র শহরকেন্দ্রিক অথবা সর্বোচ্চ উপজেলা পর্যায়ে সরকারী অনুষ্ঠান ছাড়া স্বাধীনতা দিবসের আনুষ্ঠানিকতা চোখে পড়ার মতো নয়। দেশে সর্বজনীন জাতীয় উৎসব মূলত তিনটি (স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ও বাংলা নববর্ষ)। স্বাধীন বাংলাদেশের চার দশকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে গ্রাম থেকে রাজধানী পর্যন্তু সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে ১ বৈশাখ বাংলা নববর্ষ। কিন্তু যার মাধ্যমে এটি সম্ভব হয়েছে সেই স্বাধীনতা দিবসকে আমরা উৎসবের আমেজে ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারিনি। আমাদের সকলকেই বিশ্বাস করানো দরকার জাতীয় ঐক্যের পূর্বশর্ত আমাদের স্বাধীনতা। স্বাধীনতা দিবস অবমূল্যায়ন হলে সেটি অটুট রাখা বিঘিœত হতে পারে। উৎসব পালনের জন্য সরকারী ছুটিকে আমরা যেন বিশ্রামের উপযোগ হিসেবে ব্যবহার না করিÑ দলমতের বাইরে সকলের কাছে এটাই প্রত্যাশা।
আকরাম খান
মধুখালী, ফরিদপুর।
সেবা ও শিশু অধিকার
কারণে-অকারণে, অভাব-অনটনে, ইচ্ছা-অনিচ্ছায় বা সচেতনতার অভাবেই ঘরেবাইরে, শিক্ষাদীক্ষায়, চলাফেরায়, খেলাধুলায় আমাদের শিশুরা তাদের অধিকার পাচ্ছে না। শিশুদের ঘিরে আছে নানা বৈষম্য। সাত থেকে চৌদ্দ বছর বয়সের শিশুদের দক্ষ জনমানুষ সৃষ্টিতে সৃজনশীল জীবন সম্পৃক্ত শিক্ষাদান এবং অনুপ্রাণিত করার দায়িত্বভার বর্তায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উপর। পনের থেকে একুশ বছর বয়সে তাদের স্বাধীন মতামত দেয়ার সুযোগ প্রদানে এভাবে ভূমিকা রাখবে পরিবার, প্রতিষ্ঠান, সমাজ এবং রাষ্ট্রসংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা; এটাই অধিকার। সেবা কিংবা পুনর্বাসনের নামে এই নগরীর সুসজ্জিত ঘরে যে, শিশুনির্যাতন চলছে তার শেষ কোথায়? শুধু এখানেই নয়, শিশুদের পুনর্বাসন ও সেবার নামে হয়তবা এরকম হাজারও তথাকথিত বাহারী নামের প্রতিষ্ঠানে শিশুরা নির্মম নির্যাতন ভোগ করছে, যা আমাদের দৃষ্টির অগোচরে। সত্যিকার শিশু সেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তা ব্যক্তিরা এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল তৎপর হোক এটাই বিবেকের দাবিÑ শিশুরা সুনাগরিক হয়ে গড়ে উঠুক। কোন দেশের উন্নয়নের কাক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে তথাকথিত সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করা যেমন জরুরী, তেমনি পঁচনধরা, দুর্গন্ধযুক্ত সামাজিক, রাজনৈতিক পরিবেশ থেকে জাতিকে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ উপহার দিতে হলে; শিশু অধিকার বাস্তবায়ন করা অনিবার্য। এ দায়ভার শুধু সনদ, নীতি, আইন, সরকার এবং দাতাগোষ্ঠীর নয়। সরকারী নির্দেশনা, সামাজিক জাগরণ, রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি, স্থানীয় সরকারের পৃষ্টপোষকতার সমন্বিত প্রকল্প। প্রয়োজন, স্বার্থপর মহলের বোধদয়। অন্যথায় যে হারে শিশুদের জিহাদী প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন অপরাধী কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, সর্বোপরি পুনর্বাসনের নামে তাদের নিয়ে যে ব্যবসা শুরু হয়েছেÑ তা ‘আইয়ামে জাহেলিয়া’ যুগকেও হার মানাবে।
রহিম আব্দুর রহিম
ৎধযরসধনফঁৎৎধযরস@যড়ঃসধরষ.পড়স
ইতিহাসের মিথ্যাচার?
স্বাধীনতা দিবসের আগে খালেদা জিয়া শুধু জেনারেল জিয়াউর রহমানের নামটি উল্লেখ করলেন। এ কথা শুনে অবাক ও বিস্মিত না হয়ে পারিনি। তাঁর এ বক্তব্য যাঁরা প্রচার করেছেন, বলবো একাত্তরে যা যা ঘটেছিল তাঁরা তা জানেন না। একাত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে তার নামে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে জনগণ যুদ্ধ করেছিল। সেই স্বাধীনতা সংগ্রামে সবার আগে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিলÑ তোফায়েল আহমেদ, আসম আবদুর রব, নূরে আলম সিদ্দিকী, আবদুল কুদ্দুস মাখন, শাহজাহান সিরাজসহ অসংখ্য ছাত্রনেতা ও প্রাক্তন ছাত্র নেতাদের। স্বাধীনতা সংগ্রামের আগে ছাত্র নেতৃবৃন্দ দিনের পর দিন সংগ্রাম করেছেন। জেল-জুলুম সহ্য করেছেনÑ শেখ ফজলুল হক মনি, মতিয়া চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক, সিরাজুল আলম খানসহ অসংখ্য ছাত্রনেতা।
মনে পড়ে, ডাকসুর ভিপি আসম আবদুর রব উড়ালেন স্বাধীন বাংলার পতাকা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছাত্ররা-ই একাত্তরে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়েছেন, জয় বাংলা বাহিনী গঠন করেছেন, ১৯৭১সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেনÑ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা’। প্রশ্নÑ তখন মেজর জিয়া কোথায় ছিলেন? অতীতের গৌরবময় কথা তিনি জানবেনইবা কি করে। তিনি তো ১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পরে স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে জোট বেঁধে স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচার করেই চলছেন। এও বলবো, যাঁরা স্বাধীনতা দিবসের আগে বঙ্গবন্ধু’র নামটি উহ্য রাখেন তিনি বা তাঁরা ‘স্বাধীনতা’ বিশ্বাস করেন কিনা তাতে সন্দেহ রয়েছে।
লিয়াকত হোসেন খোকন
ঢাকা।
টেস্ট পরীক্ষা সমাচার
সম্প্রতি টেস্ট পরীক্ষা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। টেস্ট পরীক্ষা নেয়া হবে না এমন কথা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা নির্দেশে নেই। এক্ষেত্রে দুটি মাত্র শর্ত রাখা হয়েছে। শারীরিক অসুস্থতা বা কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যদি কোন ছাত্রছাত্রী টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারে এবং যারা এক বা দুই বিষয়ে ফেল করে শুধু তাদের ক্ষেত্রে দেখা হবে যে তারা ক্লাসে ৭০ ভাগ উপস্থিত ছিল কিনা। কিন্তু যদি কোন ছাত্রছাত্রী দুই বা তিন বিষয়ে ফেল করে আর ৭০ শতাংশের কম উপস্থিত থাকে, তবে তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম অনুসরণ করা হবে না। ফাইনাল পরীক্ষায় পাসের হার বেড়ে যাওয়ায় নির্বাচনী পরীক্ষা অনেকটাই অর্থহীন হয়ে পড়েছে। কোন স্কুল বা কলেজেই নির্বাচনী পরীক্ষায় খুব বেশি ছাত্রছাত্রীকে আটকানো হয় না। কারণ শিক্ষক, অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীরা জানে যে ফাইনাল পরীক্ষা দিলেই পাস করা যাবে। স্কুলের পরীক্ষাগুলো পাস করাই সবচেয়ে কঠিন। আর এখানেই চলে শিক্ষার সবচেয়ে বড় বাণিজ্য। হাজার হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য চলে এই পরীক্ষাগুলো নিয়ে।
বিপ্লব
ফরিদপুর।
সাগরিকা এক্সপ্রেস প্রসঙ্গে
চট্টগ্রামÑচাঁদপুর রেল যোগাযোগ একটি রাষ্ট্রীয় গণপরিবহন মাধ্যম এবং চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুর হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত অতি সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে অতি গুরুত্বপূর্ণ এ রেলপথে বর্তমানে ২টি ট্রেন চলাচল করছে। ‘সাগরিকা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চট্টগ্রামÑচাঁদপুরের মধ্যবর্তী ১৮০ কিলোমিটার দুরত্ব অতিক্রম করতে ৩ ঘন্টার স্থলে ব্যয় করে ৮-৯ ঘন্টা। চট্টগ্রামের নিকটবর্তী লোকাল স্টেশনের যাত্রীরা এ ট্রেনের সিট দখল করে রাখে। এ কারণে চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে সাগরিকা এক্সপ্রেস-এ উঠতে পারে না। এসব লোকাল স্টেশনের যাত্রীরা বিনা টিকেটে ভ্রমণ করে। যাত্রীদের অভিযোগ, একটি চক্র বাস মালিকদের থেকে নিয়মিত মোটা অঙ্কের মাসোহারা পাচ্ছে। এ কারণে চাঁদপুরের ও দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীরা, সরাসরি এ ট্রেনে চলাচল করতে পারছে না। পূর্বাঞ্চলীয় রেল প্রশাসনের চরম অব্যবস্থাপনার কারণেই দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা চট্টগ্রাম থেকে, ঢাকাপথে গন্তব্যে যেতে ২০০ কিলোমিটার বা অতিরিক্ত পথ পরিক্রমণে বাধ্য হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে লাকসাম পর্যন্ত লোকাল যাত্রীদের আপডাউন যাতায়াতে ৩০টি ট্রেনে চলাচলের সুযোগ আছে, তা ছাড়া রেলপথের সমান্তরালে সড়কপথে আছে হরেক রকমের হাজার যানবাহন এবং এ সকল যাত্রীদের কোনও বিপজ্জনক নদী পারাপারের প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে সাগরিকা এক্সপ্রেসেও দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের চলাচলে অগ্রাধিকার দেয়া জরুরী। সাগরিকা এক্সপ্রেসকে আন্তঃনগর ট্রেনে উন্নীত করে চির অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের জনগণকে চলাচলের সুযোগ দিলে ট্রেনটি রেলের সবচেয়ে লাভজনক ট্রেনে পরিণত হবে।
সম্প্রতি ট্রেনটিকে বেসরকারী খাতে ছেড়ে দেয়ায় কায়েমী স্বার্থবাদী, আঞ্চলিক আধিপত্যবাদী ও দুর্নীতিবাজচক্রের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। ট্রেনটির মান উন্নয়ন ও দুপুর ১২টার মধ্যে চাঁদপুর পৌঁছানোর দাবি দীর্ঘদিনের। এ দাবি দুটি বাস্তবায়িত হলে চাঁদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার ৫ কোটি গণমানুষের চট্টগ্রামে যাতায়াত সুগম হবে।
এম.এ. শাহেনশাহ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সিটি নির্বাচন
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর বহুল আলোচিত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন হতে যাচ্ছে। স্থানীয় নির্বাচন হলেও বর্তমান বাস্তবতায় এটাকে এখন দলীয় নির্বাচন বলা যায়। শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলে ২০ দলীয় জোট আরেকটি মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে দীর্ঘ তিন মাস ধরে হরতাল-অবরোধে সারাদেশে পেট্রোলবোমার আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছে অসংখ্য মানুষ। এখন লক্ষ্য করছি সিটি নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারকে কিছু শর্ত দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়। উল্লেখ্য, তিন সিটিতে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ জনসংখ্যা রয়েছে। ফলে যে কোন রাজনৈতিক দলের জন্য এই নির্বাচন অতীব গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে নির্বাচনকালীন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের জন্য বিএনপি জোটের অন্যতম দাবি হচ্ছে কারাগারে আটক নেতাদের মুক্তি এবং বিভিন্ন হত্যা মামলায় আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করে প্রকাশ্যে প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগের সুযোগ দেয়া। প্রশ্ন হচ্ছে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সরকারকে অনুরূপ দাবি দিয়ে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে প্রমাণ করতে পারতÑ সরকার তার প্রশাসনিক ক্ষমতা দিয়ে পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন করেছে। তাহলে অবশ্যই সেই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হতো। তখন জনগণের সেন্টিমেন্ট সরকারের বিরুদ্ধে যেত, তাতে আজকের আন্দোলনের যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারত। কিন্তু তা না করে নির্বাচন প্রতিহত করার নামে সারাদেশে তা-ব চালিয়েও নির্বাচন ঠেকাতে না পারা যে তাদের রাজনৈতিক হঠকারি সিদ্ধান্ত ছিল আজকের বাস্তবতায় তা আরেকবার প্রমাণ হলো।
শহীদুল আলম শহীদ, চট্টগ্রাম।
হরতাল প্রসঙ্গে
ক্ষেত্রবিশেষ হরতাল-অবরোধ করার নিয়ম-কানুন থাকলেও হরতাল-অবরোধের নামে অন্যের চলাফেরার পথ আটকে রাখার কোন নিয়ম-কানুন নেই। অন্যের গাড়িতে-বাড়িতে বোমা মারা ও আগুন জ্বালিয়ে দেয়ার কোন বিধি বিদান নেই। অন্যকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারার কোন আইন-কানুন নেইÑ যারা ঐসব অপকর্ম করছে নিঃসন্দেহে তারা অমানুষ, বা মানুষরূপী শয়তান। তারা দেশ ও জনগণের শত্রু। তাই আসুন, শত্রুর মোকাবিলায় আমরা হাতে হাতে ধরে তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি। নয়ত তাদের অপকর্মের পাপের ভাগী আমাদেরও হতে হবে, কারণ অন্যায় করা আর অন্যায় সহ্য সমান অপরাধ। আমরা তাদের অন্যায় আর সহ্য করতে পারছি না, তাই যারা ঐসব অন্যায় করছে, তাদের ঘৃণা জানাই।
মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম
নবাবগঞ্জ, ঢাকা।
টকশো নিয়ে
দেশের বিশেষ বিশেষ নাগরিকদের মুখে ভদ্র, শিক্ষিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মুখে টকশোতে শোনা যায় দেশে প্রচলিত আইন সকলের জন্য সমান, আসলেই কি তাই? আপনারা যেই টকশোতে বসে কথাগুলো বলেনÑ সেই টকশোতে কি কখনও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক কৃষক শ্রমিক শ্রেণীর মানুষগুলো কি টিভি চ্যানেলগুলোতে টকশোতে তাদের মতামত প্রকাশের জন্য আমন্ত্রণ পায়? উত্তর যদি হয় না, তাহলে আমার প্রশ্ন কেন আমন্ত্রণ পাবে না? দেশের কৃষক শ্রমিক তারা কি নাগরিক নয়? তারা কি বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে না? বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় কথা বলবে এতে সমস্যা কোথায়। এটা সত্য যে হয়ত বা এই সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকগুলো অন্য ভদ্র শিক্ষিত বা বিশিষ্ট নাগরিকদের মতো সাজিয়ে গুজিয়ে বাংলা ইংরেজীর সংমিশ্রণে কথা বলতে পারবে না। এটাও সত্য যে, হয়ত দেশের মূল চালিকাশক্তি অর্থনৈতিক বিষয়ে খুব একটা ভাল আলোচনা করতে পারবে না। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয়ে খুবই পারদর্শী বটে। কোন রাজনৈতিক দল কেমন, কোন রাজনৈতিক নেতা কেমন, দেশের জন্য জাতির জন্য কোন দলের কিংবা কোন ব্যক্তির কি অবদান আছে, ছিল এসব ঠিকই বুঝে এবং জাতির সামনে টিভি চ্যানেলে টকশোতে অবশ্যই প্রকাশ করতে পারবে।
কিভাবে মানুষকে ভূমি অফিস, বিদ্যুত অফিস, পাসপোর্ট অফিস, লাইসেন্স অফিস, বিভিন্ন সরকারী হাসপাতাল কিংবা প্রাইভেট হাসপাতাল, গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ইত্যাদি স্থানে অহেতুক হয়রানি করা হয়, ঘুষ দিতে বাধ্য করা হয় এ সকল বিষয়ে তথাকথিত উচ্চমানের ব্যক্তিদের বাস্তব অভিজ্ঞতা মোটেও নেই, যাদের অবহেলা করে টিভি টকশোতে আমন্ত্রণ করা হয় না। একমাত্র দেশের সার্বিক অবস্থা তাদেরই আছে। কারণ এই কৃষক শ্রমিকই তো ভুক্তভোগী এবং প্রত্যক্ষদর্শী, সুতরাং শ্রেণী ভেদাভেদ পরিহার করুন।
কাজী নুরুল আমিন
শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ।
আর নয় পেট্রোলবোমা
আন্দোলনের নামে দেশে পেট্রোলবোমার আগুনে পুড়ছে মানুষ, পুড়ছে স্বপ্ন, পুড়ছে মানবতা, দেশের হাসপাতালগুলোতে যখন দগ্ধ মানুষে আর্ত-চিৎকারে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে, মানুষ যখন এই ভয়াবহ পেট্রোলবোমার কবল থেকে মুক্তি পেতে সন্ত্রাস আর নাশকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠছে, তখন এক শ্রেণীর উগ্র ধর্মান্ধ ও দলকানা ব্যক্তি মানবতাবোধকে জলাঞ্জলি দিয়ে পেট্রোলবোমার স্বপক্ষে সাফাই গাইছেন। তারা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে টিভি চ্যানেলগুলোতে আলোচক সেজে টকশোর আড়ালে সন্ত্রাস আর নাশকতাকে রাজনীতির সঙ্গে এক করে ফেলে সমাজে বিষ বাষ্প ছড়াচ্ছে। অন্যদিকে সুশীল সমাজ নামের গুটিকয়েক ব্যক্তি সরকারের বিরোধিতা করতে গিয়ে সব সময় আওয়ামী লীগ আর বিএনপি-জামায়াতকে একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ মনে করেন। অথচ শেখ হাসিনার সাহসী ও চ্যালেঞ্জিং নেতৃত্বের কারণে দেশে যে দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধিত হয়েছে আর তা কেবলমাত্র শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বেই সম্ভব, তা তারা কখনই স্বীকার করতে চান না। পাশাপাশি দেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এবং বিপক্ষের শক্তির মধ্যে যে একটি আদর্শিক দ্বন্দ্ব রয়েছে, তা তারা বেমালুম ভুলে যান। তারাও আজকে নাশকতা বন্ধে সংলাপকেই একমাত্র মূলমন্ত্র আখ্যা দিয়ে নিজেদের স্বার্থে জনগণের সামনে আসল সত্যকে আড়াল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দুঃখ একটাই, তথাকথিত আন্দোলনের নামে পেট্রোলবোমায় নিহত মানুষকে আর ফিরে পাব না কিংবা দগ্ধ মানুষ পেট্রোলবোমার অভিশাপ বয়ে বেড়াবে আজীবন। স্বজন হারানো মানুষের বেদনা ভোলা যাবে না কোনদিন।
এমএস আলম
চট্টগ্রাম।