ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

ওজন কমাতে সফলদের ৭ কার্যকর পরামর্শ—যা আপনিও অনুসরণ করতে পারেন

প্রকাশিত: ১৭:৫৩, ৮ জুলাই ২০২৫

ওজন কমাতে সফলদের ৭ কার্যকর পরামর্শ—যা আপনিও অনুসরণ করতে পারেন

ছবি: সংগৃহীত।

ওজন কমানোর জন্য কেবল ডায়েট ও শরীরচর্চা যথেষ্ট নয়। এর পেছনে থাকে দৃঢ় মানসিক শক্তি, ধৈর্য, নিষ্ঠা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—ধারাবাহিকতা। যাঁরা সফলভাবে ওজন কমিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে তা বজায় রেখেছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতা বলছে—ওজন কমানোর কোনো শর্টকাট নেই। তবে কিছু বাস্তবিক অভ্যাস গ্রহণ করলে ওজন কমানো যেমন সহজ হয়, তেমনি তা টেকসইও হয়। নিচে রইল তেমনই ৭টি কার্যকর টিপস—

১. প্রোটিন গ্রহণ বাড়ান, পেশি সংরক্ষণে সাহায্য করবে।
ওজন কমাতে চাইলে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন রাখাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিন ক্ষুধা কমায়, পেশি গঠনে সাহায্য করে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। দৈনিক নিজের ওজন প্রতি কেজির বিপরীতে ১.৬ থেকে ২.২ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন গ্রহণ উপকারী। চিকেন, ডিম, মাছ, দুধ, ডাল, ছোলা, পনির, সয়া ও প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট হতে পারে ভালো উৎস।

২. বাস্তবভিত্তিক ক্যালোরি ঘাটতি তৈরি করুন।
ওজন কমাতে হলে শরীর যত ক্যালোরি খরচ করে, তার চেয়ে কম ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে। তবে হঠাৎ করে খুব বেশি ক্যালোরি কমালে বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়, ফলে ওজন কমাতে সমস্যা হয়। প্রতিদিন ৫০০ ক্যালোরির ঘাটতি বাস্তবসম্মত এবং কার্যকর বলে প্রমাণিত। খাবার ট্র্যাক করার জন্য অ্যাপ বা ডায়েরি ব্যবহার করুন।

৩. প্রতিটি খাবারে প্রোটিন রাখুন।
প্রতিদিনের প্রতিটি মিল বা স্ন্যাকসে প্রোটিন রাখলে পেশির পুনর্গঠন ভালো হয় এবং ক্ষুধাও কমে। ডিম, দই, মুরগি, পনির, টোফু, বাদাম বা প্রোটিন শেক—যেকোনো প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার রাখতে পারেন আপনার ডায়েটে।

৪. শক্তি ব্যায়াম করুন যদি আগে না করেন।
ওজন কমাতে শুধু কার্ডিও নয়, শক্তি ব্যায়ামও অত্যন্ত জরুরি। এতে পেশি গড়ে ওঠে, যা বিশ্রামের সময়েও ক্যালোরি বার্ন করতে সাহায্য করে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত ২–৩ দিন স্কোয়াট, লঞ্জ, পুশ-আপ বা ওজন তুলে শক্তি ব্যায়াম করুন। নতুন হলে ফিটনেস ট্রেইনারের পরামর্শ নিন।

৫. চিনি এড়িয়ে চলুন, হাইড্রেটেড থাকুন।
প্রতিদিন অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করুন। এতে শরীর হাইড্রেটেড থাকবে ও ক্ষুধা কমবে। কোমল পানীয়, জুস, এনার্জি ড্রিংক—এসব এড়িয়ে চলুন। এমনকি বিস্কুট, ব্রেড, প্যাকেটজাত স্ন্যাকসেও চিনি থাকে, তাই সেগুলোরও সীমিত গ্রহণ জরুরি।

৬. খাওয়া ও শরীরচর্চার হিসাব রাখুন।
ফুড ডায়েরি বা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে নিজের খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চার অগ্রগতি ট্র্যাক করুন। এতে আপনি বুঝতে পারবেন কোন অভ্যাস আপনাকে পিছিয়ে দিচ্ছে (যেমন—রাতের বেশি খাওয়া বা আবেগে খাওয়া)। মাঝে মাঝে ভুল হলেও আতঙ্কিত না হয়ে ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন।

৭. ঘুম এবং মানসিক চাপের দিকে নজর দিন।
পর্যাপ্ত ঘুম এবং চাপমুক্ত মন শরীরের হরমোন ও বিপাকক্রিয়াকে ঠিক রাখে। প্রতিদিন ৭–৯ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন এবং ধ্যান, শ্বাসপ্রশ্বাস ব্যায়াম বা হালকা যোগাসনের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমান।

ওজন কমানোর সফল অভিজ্ঞতাগুলি বলছে—কঠোর নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি বাস্তব অভ্যাসই সাফল্যের চাবিকাঠি। আপনি যদি ধারাবাহিকভাবে এই অভ্যাসগুলো অনুসরণ করেন, তবে সঠিক পথে রয়েছেন।

মিরাজ খান

×