ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এমন ৭টি বিস্ময়কর অভ্যাস 

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৮ জুলাই ২০২৫

ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এমন ৭টি বিস্ময়কর অভ্যাস 

ছবি: সংগৃহীত।

ভালো ঘুম না হওয়া শুধু আপনার স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যেই প্রভাব ফেলে না, এটি আপনার সামগ্রিক জীবনমানকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। তথাপি, সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ৩৫% প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিরাতে ৭ ঘণ্টার কম ঘুমান। চিন্তা-উদ্বেগ যেমন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়, তেমনি কিছু দৈনন্দিন অভ্যাসও এর পেছনে দায়ী। ঘুমের মান উন্নত করতে এসব অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন।

ব্রাইট সাইড-এর এক প্রতিবেদনে ঘুমে সহায়ক নয়, এমন কিছু সাধারণ অভ্যাস তুলে ধরা হয়েছে—যেগুলো থেকে বিরত থাকলে মিলতে পারে প্রশান্তিময় নিদ্রা।

১. ক্লান্ত হয়ে সরাসরি বিছানায় চলে যাওয়া:
দিনশেষে মাথা বালিশে রাখার জন্যই যেন প্রতীক্ষা। তবে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কিছু স্বস্তিদায়ক রাত্রিকালীন রুটিন তৈরি করলে মস্তিষ্ক দিনে ও রাতে পার্থক্য করতে পারে এবং দ্রুত ঘুমিয়ে পড়া সহজ হয়। হালকা স্ন্যাকস খাওয়া, হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল বা বই পড়ার মতো সহজ রুটিন ঘুমে সহায়ক হতে পারে।

২. ঘুমানোর আগে ব্ল্যাক টি পান করা:
চা অনেক সময় ঘুমে সাহায্য করলেও সব ধরনের চা উপকারী নয়। যেমন, ক্যামোমাইল বা ল্যাভেন্ডার চা ঘুমে সহায়ক হলেও ব্ল্যাক টি-তে উচ্চমাত্রায় ক্যাফেইন থাকে, যা নার্ভাসনেস ও ইনসোমনিয়া সৃষ্টি করতে পারে। ঘুমানোর আগে ব্ল্যাক টি এড়িয়ে চলাই উত্তম।

৩. ভুল ধরনের কম্বল ব্যবহার:
কম্বল ছাড়া ঘুমানো কষ্টকর হলেও সঠিক কম্বল না হলে তা ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। পলিয়েস্টার দিয়ে তৈরি কম্বল ধোয়া সহজ হলেও এটি ত্বককে নিঃশ্বাস নিতে দেয় না এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করে, ফলে অতিরিক্ত গরম অনুভূত হয়। এর বদলে উলের তৈরি কম্বল ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা, যা উষ্ণ রাখবে এবং ত্বককে শ্বাস নিতে দেবে।

৪. রাতে জিমে যাওয়া:
ব্যায়াম স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে, যা ভালো ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয়। কিন্তু ঘুমানোর ঠিক আগে জিমে যাওয়াটা ক্ষতিকর হতে পারে। শরীরের তাপমাত্রা তখন পর্যন্ত স্বাভাবিক হয় না, ফলে ঘুমে বিঘ্ন ঘটে। তাই রাতে ব্যায়াম করতেই হলে হালকা-প্রকৃতির এক্সারসাইজ বেছে নিতে হবে এবং ঘুমানোর অন্তত ৪ ঘণ্টা আগে তা শেষ করতে হবে।

৫. সকালের নাশতা বাদ দেওয়া:
নাশতা দিন শুরুর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সময়ের অভাবে অনেকেই নাশতা বাদ দেন, কিন্তু এটি শুধু ওজন বা মনোযোগে নয়, ঘুমের মানেও প্রভাব ফেলে। যারা নিয়মিত নাশতা বাদ দেন, তারা বেশি ক্লান্ত বোধ করেন এবং ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে।

৬. ঘুমাতে যাওয়ার সময় মোটা পাজামা পরা:
পছন্দের পাজামা পরে ঘুমাতে যাওয়া আরামদায়ক মনে হলেও কিছু পাজামা অত্যাধিক গরম হয়। শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা কমে গেলে ঘুম ভালো হয়। তাই হালকা, তুলতুলে, ও প্রাকৃতিক উপাদান যেমন কটন বা লিনেন দিয়ে তৈরি পোশাক ব্যবহার করুন।

৭. শোবার ঘরে কার্পেট থাকা:
কার্পেট ঘরকে আরামদায়ক করে তুললেও এটি ধুলো ও মাইটের আধার হয়ে ওঠে। এর ফলে ঘরের বাতাস দূষিত হয়ে ঘুমের মান নষ্ট করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, ঘরের বাতাসের মান ঘুমের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে এবং পরদিনের মনোযোগ ও কর্মক্ষমতাও নির্ধারণ করে।

আপনার ঘুম কি এই অভ্যাসগুলোর কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে? আপনি কি ঘন ঘন ঘুম ভাঙা সমস্যায় ভুগছেন, নাকি শান্তিতে “ঘুমের রাজ্যে” হারিয়ে যান?

ঘুমের উন্নত মান নিশ্চিত করতে অভ্যাস পরিবর্তন করা এখনই শুরু করুন—কারণ ভালো ঘুম মানেই ভালো জীবন।

মিরাজ খান

×