ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

কাশ্মীর হামলার তিন সন্দেহভাজনকে হত্যা করল ভারত, দাবি সব হামলাকারী নিধনের

প্রকাশিত: ২০:১২, ২৯ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২০:১২, ২৯ জুলাই ২০২৫

কাশ্মীর হামলার তিন সন্দেহভাজনকে হত্যা করল ভারত, দাবি সব হামলাকারী নিধনের

কাশ্মীরের পাহেলগামে এপ্রিল মাসে ঘটে যাওয়া পর্যটক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিন সশস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যার মাধ্যমে সব হামলাকারীকে নিধন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

সোমবার শ্রীনগরের উপকণ্ঠে ভারতীয় সেনাবাহিনী, আধাসামরিক বাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে এই তিনজন নিহত হন। মঙ্গলবার লোকসভায় দেওয়া এক বক্তব্যে অমিত শাহ বলেন, “যারা বাইসারানে হামলা চালিয়েছিল, তারা ছিল তিনজন সন্ত্রাসী। তাদের সবাইকেই হত্যা করা হয়েছে।”

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পর্যটন অঞ্চল পাহেলগামের কাছে বাইসারানে হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই হিন্দু তীর্থযাত্রী ছিলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চার দিনব্যাপী সীমান্ত সংঘর্ষ হয়, যাতে দুইপক্ষ মিলিয়ে ৭০ জনেরও বেশি নিহত হয়।

অমিত শাহ জানান, নিহত তিনজনই পাকিস্তানের নাগরিক এবং তাদের মধ্যে দুজন ছিল লস্কর-ই-তইয়বার সদস্য। “ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে তাদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ রয়েছে,” বলেন শাহ।

এই অভিযান চালানো হয় দাচিগামের পার্বত্য অঞ্চলে, যা শ্রীনগর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষ্যমতে, হামলার পরপরই একটি উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যাতে হামলাকারীরা দেশত্যাগ করে পাকিস্তানে ফিরে যেতে না পারে।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা এবং ফরেনসিক প্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অভিযানে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলোই এপ্রিলের হত্যাযজ্ঞে ব্যবহৃত হয়েছিল।

হত্যাকাণ্ডের সময় হামলাকারীরা নারী ও শিশুকে আলাদা করে পুরুষদের মুসলিম ঘোষণা পাঠ করতে বলেছিল বলে জানিয়েছেন বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা।

প্রাথমিকভাবে “দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট” (TRF) নামের একটি গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করলেও পরে ব্যাপক জনরোষের মুখে তা প্রত্যাহার করে। চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্র TRF-কে “বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন” হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।

উল্লেখ্য, মুসলিম-অধ্যুষিত কাশ্মীর অঞ্চল ১৯৪৭ সাল থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্ত। অঞ্চলটি নিয়ে দু’দেশই পূর্ণ দাবি জানিয়ে আসছে এবং এ নিয়ে তারা দুইটি যুদ্ধ সহ একাধিক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। ১৯৮৯ সাল থেকে কাশ্মীরে ভারতবিরোধী বিদ্রোহ চলছে, যেখানে স্বাধীনতা বা পাকিস্তানের সঙ্গে একত্রীকরণের দাবি জানানো হচ্ছে। ভারত দাবি করে, এসব সহিংসতায় পাকিস্তানের মদত রয়েছে, যদিও ইসলামাবাদ বলে থাকে, তারা শুধুই কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের সংগ্রামে কূটনৈতিক সমর্থন জানায়।

Jahan

আরো পড়ুন  

×