
ছবিঃ সংগৃহীত
সম্প্রতি পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলে দেখা গেছে খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে। নিষিদ্ধ সংগঠন সিকস ফর জাস্টিস (SFJ)-এর এই প্রধান নেতা পাকিস্তানের জিও নিউজে হাজির হয়ে ভারতের বিরুদ্ধে বিতর্কিত ও উসকানিমূলক মন্তব্য করেন।
একটি ভাইরাল ভিডিওতে পান্নুন বলেন, শিখরা নাকি ভারতের হয়ে যুদ্ধ করতে চায় না। তিনি সেখানে মুসলিমদের ধর্মীয় স্লোগান ‘নারা-এ-তাকবির’ উচ্চারণ করেন, যার উত্তর সাধারণত ‘আল্লাহু আকবর’ দিয়ে দেওয়া হয়। ইসলাম ধর্মে এই স্লোগানটি আল্লাহর প্রশংসা ও বিশ্বাসের প্রকাশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, পান্নুন ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলেও স্লোগান দেন এবং দাবি করেন সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে পাকিস্তান বিজয়ী হয়েছে।
কেন এইসব করছেন পান্নুন?
গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুনের সংগঠন SFJ দীর্ঘদিন ধরেই পাঞ্জাবের যুব সমাজকে খালিস্তানপন্থী চিন্তাধারায় প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি, এই সংগঠন পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ISI-এর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। শুধু প্রচারণা নয়, অস্ত্র ও মাদকের মাধ্যমে তরুণদের বিপথে চালানোর অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
এদিকে, ভারত যখন যুক্তরাষ্ট্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক মিশন পাঠাচ্ছে—যার উদ্দেশ্য হলো পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে মদতের প্রমাণ তুলে ধরা—সেই সময় SFJ সেখানে ভারতের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করেছে। পান্নুন এই প্রতিনিধি দলকে অপমান করে বলেছে, “Delegation of Devils”।
তিনি মার্কিন প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন যেন এই ভারতীয় মিশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তার দাবি, ভারত 'অপারেশন সিন্ধুর' নামে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, এমনকি নানকানা সাহিবের মতো পবিত্র স্থানকেও আঘাত করেছে—যা ভারত সরাসরি অস্বীকার করেছে।
পান্নুনের জীবনের বিপদ ও ভারতের প্রতিক্রিয়া
পান্নুন বহুদিন ধরেই ভারতের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে আসছেন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে থাকেন। তবে কিছুদিন আগে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ পায়—যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত সংস্থা FBI জানায়, ভারতের প্রাক্তন এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা পান্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই ঘটনায় সেই কর্মকর্তা এখন FBI-এর 'মোস্ট ওয়ান্টেড' তালিকায় রয়েছেন।
গুরপতবন্ত সিং পান্নুনের মতো ব্যক্তিদের কার্যকলাপ শুধু ভারত নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই অশান্তি ও বিভাজনের বার্তা বহন করে। যখন দুই দেশ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তখন এমন উসকানিমূলক কথাবার্তা এবং অপপ্রচারে বাড়ছে উদ্বেগ।
মারিয়া