ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেবেন বাংলাদেশের সাগর-হিমেল

জাহিদুল আলম জয়

প্রকাশিত: ০১:০৩, ২১ মে ২০২৫

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেবেন বাংলাদেশের সাগর-হিমেল

মাহফিজুর রহমান সাগর ও নাজমুল হক হিমেল (ডানে)

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য দারুণ সুসংবাদ। ঐতিহাসিক ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেবেন লাল-সবুজের দুই সাঁতারু। তারা হলেন মাহফিজুর রহমান সাগর ও নাজমুল হক হিমেল। ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়া যে কোনো সাঁতারুর জন্যই আজন্ম লালিত স্বপ্ন। কখনো নির্ধারিত স্লট পাওয়া যায় না।

কখনো এটা সাঁতারুদের জন্য হয়ে পড়ে ব্যয়বহুল। কিন্তু এত কিছুর পরও যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সকে বিভক্ত করা আটলান্টিক মহাসাগরের এই চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার সুযোগ হয়, তাহলে সেটা সেই সাঁতারুর জন্য রোমাঞ্চকর এক ঘটনা বলা যায়।
আর সেই রোমাঞ্চকর অভিযানে নামতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ দুই সাঁতারু মাহফিজুর রহমান সাগর ও নাজমুল হক হিমেল। আগামী ৭ জুলাই ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে যুক্তরাজ্য যাবেন এই দুই সাঁতারু। সেখানে গিয়ে অন্তত ১০ দিন অনুশীলন করবেন দুজন। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) অডিটোরিয়ামে মঙ্গলবার ৩৭তম জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতারের সংবাদ সম্মেলনে এসে এই সুসংবাদটি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শাহীন।

এর আগে বাংলাদেশের তিনজন সাঁতারু ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমকারী প্রথম এশীয় ব্রজেন দাস। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ সালের মধ্যে মোট ছয়বার চ্যানেলটি অতিক্রম করেন। এই চ্যানেল সবচেয়ে কম সময়ে সাঁতারে পার হওয়ার রেকর্ডও গড়েছিলেন তখন। এরপর ১৯৬৫ সালে আবদুল মালেক ও ১৯৮৭ সালে মোশাররফ হোসেন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন।
দুই বারের অলিম্পিয়ান সাগর মূলত ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার স্লট খুঁজতে থাকেন। তার সঙ্গী হিসেবে পেয়ে যান হিমেলকে, যিনি বর্তমানে চীন প্রবাসী। এক সময়ের জাতীয় দলের সাঁতারু হিমেল এই সুযোগ পেয়ে ভীষণ উচ্ছ্বসিত। বয়সভিত্তিক সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন হিমেল।

ইংলিশ চ্যানেলের জন্য কতটা প্রস্তুতি নিতে হয়েছে এবং এর পেছনের গল্পটা বলেছেন কিশোরগঞ্জের এই সাঁতারু, ??‘প্রায় ৩৭ বছর পর ব্রজেন দাস স্যার এবং মোশাররফ হোসেন স্যারের পর আমরা দুজন বাংলাদেশি যাচ্ছি। নিঃসন্দেহে এটা একটা ব্রেক থ্রু। এটা গর্বের বিষয়। এবং আশা করি এখন যে প্রজন্ম আছে তারাও আমাদের থেকে অনুপ্রেরণা পাক।’ অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে হবে।

তবে সে সবের জন্যও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন সাঁতারু হিমেল, ‘ওখানে জেলি ফিশ আছে। পানির তাপমাত্রা সেখানে ১৫-১৯ ডিগ্রি। তবে আমি চীনে ১৯ ডিগ্রিতে সাঁতার কেটেছি। খুব একটা অসুবিধা হয়নি। তবে ১৫ ডিগ্রি হলে চ্যালেঞ্জিং থাকবে।’ 
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে একজন সাঁতারুর প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশন থেকেও তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের দুই সাঁতারু মূলত ২০২৮ সালের আগে কোনো স্লট পাচ্ছিলেন না। তবে কলকাতার দুই সাঁতারুর সহযোগিতায় চলতি বছরে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার সুযোগ মিলেছে তাদের। যে কারণে চার সাঁতারু মিলে একটা র‌্যালি করবেন ইংলিশ চ্যানেলে।

×