ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের ফেডারেল মন্ত্রিসভা দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনীরকে ‘ফিল্ড মার্শাল’ পদে পদোন্নতির অনুমোদন দিয়েছে। ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সামরিক সংঘাতে অসাধারণ কৌশলগত নেতৃত্ব এবং ‘অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস’ ও ‘মার্কা-ই-হক’-এ বিজয়ের জন্য তাঁকে এই সর্বোচ্চ সামরিক মর্যাদায় ভূষিত করা হয়েছে বলে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়।
গত মাসে কাশ্মীরের পাহালগামে হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। ৬-৭ মে রাতে ভারতের একাধিক বিমান হামলায় পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরে বেসামরিক প্রাণহানি ঘটে এবং পাকিস্তান পাল্টা জবাবে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে বলে দাবি করে পাকিস্তান।
পরবর্তীতে দুই দেশের বিমানঘাঁটিতে পাল্টাপাল্টি হামলা ও ভারতের পাঠানো ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। অবশেষে ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। উভয় দেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুদ্ধবিরতির কোনো মেয়াদ নেই, যা এই সপ্তাহান্তে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার গুজবকে খণ্ডন করেছে।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘মার্কা-ই-হক ও অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুসে সাহসিকতা, কৌশল ও নেতৃত্বের জন্য জেনারেল আসিম মুনীরকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভা সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন করেছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সেনাপ্রধান জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি শত্রুকে পরাজিত করতে যে কৌশলগত নেতৃত্ব দিয়েছেন, তা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
এর আগে পর্যন্ত পাকিস্তানের মাত্র একজন সেনাপ্রধান জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ুব খান এই মর্যাদা পেয়েছেন, যা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর আদলে সর্বোচ্চ সামরিক পদ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “জেনারেল মুনীরের অতুলনীয় নেতৃত্বে পাকিস্তান ‘মার্কা-ই-হক’-এ ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করেছে।”
সেনাপ্রধানের পদোন্নতির পাশাপাশি মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পাকিস্তান বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জাহার আহমেদ বাবর সিদ্দিকীর মেয়াদ শেষে তাঁর দায়িত্ব অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া অপারেশন চলাকালে অসামান্য অবদান রাখা সেনা সদস্য, শহীদ ও সাধারণ নাগরিকদের উচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারিকে অবহিত করেছেন।
প্রেসিডেন্ট জারদারি বলেন, ‘জেনারেল আসিম মুনীরের নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনী দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। তিনি এই পদোন্নতির যোগ্য, কারণ তিনি কৌশলগত দক্ষতায় ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দিয়েছেন।’
পদোন্নতির প্রতিক্রিয়ায় সেনাপ্রধান বলেন, ‘এই সম্মান ব্যক্তি নয়, বরং পুরো জাতি ও সশস্ত্র বাহিনীর। আমি তা শহীদ ও প্রবীণ সেনাদের উৎসর্গ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতির যে আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে এই পদে উন্নীত হয়েছি, তার জন্য লক্ষ লক্ষ ‘আসিম’ প্রাণ দিয়েছে।’
পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি সেনাপ্রধানকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘সেনাপতি এই মর্যাদা অর্জন করেছেন কঠোর পরিশ্রম, প্রতিভা ও পেশাগত দক্ষতার মাধ্যমে।’
সূত্র: দ্য ডন।
রাকিব
