
ছবি: সংগৃহীত।
স্টারলিঙ্ক হলো স্পেসএক্সের একটি স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কনস্টেলেশন। এটি ২০১৯ সালে প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এর কক্ষপথে ৭,০০০-এর বেশি স্যাটেলাইট রয়েছে, এবং পরিকল্পনা আছে মোট ১২,০০০ বা তার বেশি স্যাটেলাইট স্থাপনের।
স্টারলিঙ্কের মূল লক্ষ্য হলো এমন সব এলাকায় ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া যেখানে ফাইবার অপটিক কেবল বা মোবাইল নেটওয়ার্ক স্থাপন করা সম্ভব নয়। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চল, সুন্দরবনের গ্রাম বা সিলেটের দুর্গম এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ প্রায়ই অনুপলব্ধ। স্টারলিঙ্ক এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। এটি শুধু গ্রামীণ এলাকার জন্য নয়, শহরে বিকল্প ইন্টারনেট সেবা হিসেবেও কাজ করতে পারে। ঐতিহ্যবাহী ইন্টারনেট সেবার তুলনায় স্টারলিঙ্কের সুবিধা হলো এটি দ্রুত স্থাপনযোগ্য এবং অবকাঠামোর উপর নির্ভরশীলতা কম। শুধু একটি ছোট ডিশ অ্যান্টেনা এবং বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেই যথেষ্ট।
বিশ্বখ্যাত স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। মঙ্গলবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়ব।
তিনি জানান, সোমবার বিকেলে স্টারলিংকের পক্ষ থেকে ফোন কলে এই বিষয়ে জানানো হয় এবং মঙ্গলবার সকালে এটি চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত করা হয়। এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা বাস্তবায়িত হলো বলে তিনি উল্লেখ করেন।
দুটি প্যাকেজে শুরু
বাংলাদেশে স্টারলিংক প্রাথমিকভাবে ‘রেসিডেন্স’ ও ‘রেসিডেন্স লাইট’ নামের দুটি প্যাকেজ চালু করছে। মাসিক খরচ রেসিডেন্স প্যাকেজে ৬,০০০ টাকা এবং রেসিডেন্স লাইট প্যাকেজে ৪,২০০ টাকা। তবে সেবাটি চালুর জন্য প্রয়োজনীয় ডিশ ও যন্ত্রপাতির সেটআপ বাবদ এককালীন খরচ হবে ৪৭,০০০ টাকা।
ফয়েজ আহমদ জানান, এই ইন্টারনেট সেবায় কোনো স্পিড বা ডেটা লিমিট থাকবে না। গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ৩০০ এমবিপিএস গতির আনলিমিটেড ডেটা উপভোগ করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, “খরচ কিছুটা বেশি হলেও এই সেবার মাধ্যমে দেশের প্রিমিয়াম গ্রাহকদের জন্য টেকসই, উচ্চমান ও উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবার বিকল্প তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে এখনো ফাইবার অপটিক বা উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছায়নি, সেখানে স্টারলিংক একটি কার্যকর সমাধান দিতে পারবে।”
এনজিও, উদ্যোক্তা ও ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বছরব্যাপী নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করতে স্টারলিংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন ফয়েজ আহমদ।
বাংলাদেশের গ্রাহকরা এখন থেকেই স্টারলিংকের অফিসিয়াল চ্যানেল ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডার করতে পারবেন।
নুসরাত