
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ খাতে একটি নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। বিশ্বের অন্যতম ধনী উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স পরিচালিত স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা স্টারলিংক দেশে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হতে যাচ্ছে। সফলভাবে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শেষ হলে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে সেবাটি চালু হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) জানায়, ইতোমধ্যে সেবাটি চালুর জন্য প্রয়োজনীয় গাইডলাইন প্রণয়ন সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্টারলিংকের মাধ্যমে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষত দেশের প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকাগুলো—যেখানে এখনো অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ পৌঁছায়নি—সেখানেও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কারণ স্টারলিংক সরাসরি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সরবরাহ করে, যা ভূ-ভিত্তিক অবকাঠামোর ওপর নির্ভরশীল নয়।
প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বড় করপোরেট হাউজ, ই-কমার্স এবং ডিজিটাল ব্যবসা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো স্টারলিংকের সম্ভাব্য গ্রাহক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এদিকে টেলিকম বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রযুক্তি কেবল ইন্টারনেটের মানোন্নয়নই নয়, বরং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি এবং ডিজিটাল অর্থনীতিতেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবায় দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান একচেটিয়া (মনোপলি) অবস্থা ও ভোগান্তি কাটিয়ে একটি প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি হতে পারে।
তবে স্থানীয় ইন্টারনেট সেবাদাতা (ISP) প্রতিষ্ঠানগুলোর একাংশ বলছে, তারা এখনই কোনো চাপ অনুভব করছেন না। যদিও বিশ্লেষকদের ধারণা, ভবিষ্যতে প্রতিযোগিতায় কিছু আইএসপি ব্যবসায় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, স্টারলিংকের মাধ্যমে গ্রাহকরা উচ্চমানের ভিডিও স্ট্রিমিং, গেমিং এবং ভিডিও কলিংয়ের সুবিধা পাবেন। যদিও এই সেবার খরচ তুলনামূলক বেশি হতে পারে, তবুও উন্নত গতি ও নিরবচ্ছিন্ন সংযোগের কারণে অনেকেই এটির প্রতি আগ্রহ দেখাতে পারেন।
সব মিলিয়ে, স্টারলিংকের আগমন বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের গতিকে আরও বেগবান করতে পারে—বিশেষ করে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে আধুনিক ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দিতে এটি হতে পারে একটি বড় মাইলফলক।
ফারুক