ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যুদ্ধ করলো ভারত-পাকিস্তান, জয়ী হলো চীন

প্রকাশিত: ০০:২২, ২১ মে ২০২৫

যুদ্ধ করলো ভারত-পাকিস্তান, জয়ী হলো চীন

ছবিঃ সংগৃহীত

চারদিনের টানা সংঘর্ষ শেষে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে শেষ হলো যুদ্ধবিরতি। উভয় পক্ষই নিজেদের বিজয় দাবি করলেও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন—এই সংঘর্ষে প্রকৃত লাভবান হয়েছে চীন।

সংঘাতের সূত্রপাত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর এক বন্দুকধারীর হামলায়, যেখানে নিহত হন ২৬ জন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠীকে দায়ী করে। এর জবাবে ৭ মে ভারত শুরু করে ‘অপারেশন সিদুর’, যার লক্ষ্য ছিল পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের অভ্যন্তরে অবস্থিত সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করা। এরপর শুরু হয় পাল্টাপাল্টি হামলা—ব্যবহার করা হয় ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও আধুনিক যুদ্ধবিমান।

এই যুদ্ধে ভারত ফ্রান্স ও রাশিয়ার তৈরি রাফাল ও সুখই জেট ব্যবহার করলেও, পাকিস্তান ব্যবহার করে চীনা প্রযুক্তির জে-১০ ও জেএফ-৭ যুদ্ধবিমান। ইসলামাবাদ দাবি করেছে, তারা ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে। যদিও দিল্লি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি, তবে পুরোপুরি অস্বীকারও করেনি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সাফল্য চীনা প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে থাকে, তবে এটি চীনের প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য এক বাস্তব ‘ডেমো’। এতদিন অনেক দেশ চীনা অস্ত্রকে সস্তা ও অনির্ভরযোগ্য মনে করলেও, সেই ভাবনায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। চীনা জে-১০ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম ইতিমধ্যে ৪০ শতাংশ বেড়েছে। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই যুদ্ধবিমান ঘিরে চলছে উদযাপন। অনেকে একে ‘ডিপ সিক মোমেন্ট’ হিসেবে দেখছেন, যেখানে প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বকে চমকে দিয়েছে চীন।

তবে সবাই একমত নন। লন্ডনের কিংস কলেজের অধ্যাপক ওয়াল্টার ল্যাডউইক বলেন, এখনই রাফাল ও জে-১০ তুলনা করা যৌক্তিক নয়। বরং ভারতের হামলার কৌশল নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি, বিশেষ করে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস না করেই পাকিস্তানে স্ট্রাইক করাকে তিনি ঝুঁকিপূর্ণ বলেছেন।

ভারত দাবি করছে, তারা পাকিস্তানের অন্তত ১১টি বিমানঘাঁটিতে আঘাত করেছে, যদিও এই তথ্য সরকারি সূত্রে নিশ্চিত করা হয়নি। এতে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি ও গুজব। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত হয়তো কৌশলগতভাবে এগিয়ে ছিল, তবে তথ্য নিয়ন্ত্রণের দুর্বলতার কারণে সেই অর্জন স্পষ্ট হয়নি।

এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো উভয় পক্ষকে যুদ্ধবিরোতির দিকে ঠেলে দেয়। তবে এই সংঘর্ষ ভারতের জন্য বড় এক সতর্কবার্তা—বিশেষ করে যদি চীনা অস্ত্রের বাস্তব কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়।

চীন সরকারিভাবে কিছু না বললেও, দেশটির প্রতিরক্ষা মহল এবং সামাজিক মাধ্যমে এই সংঘর্ষকে মনস্তাত্ত্বিক বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এখন প্রশ্ন উঠছে—এই যুদ্ধ কি শুধুই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ছিল, নাকি চীন এক অদৃশ্য তৃতীয় শক্তি হিসেবে এতে সক্রিয় ছিল?

সূত্রঃ https://www.facebook.com/share/v/12EAb6KS3oS/

ইমরান

×