ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শত শত কোটি টাকার আয় মৎস্য খাতের  দেখিয়ে কর সুবিধা নেওয়া হয়েছে

কৃষিভিত্তিক খাতে কর অব্যাহতি প্রত্যাহার করা হতে পারে 

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:৫০, ২১ মে ২০২৫

কৃষিভিত্তিক খাতে কর অব্যাহতি প্রত্যাহার করা হতে পারে 

কৃষিভিত্তিক খাতে কর অব্যাহতি

কৃষি খাত থেকে আয় করলে তার ওপর বর্তমান ৩ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ হারে আয়কর প্রদান করতে হয়। তবে আগামী বাজেটে এনবিআরের নতুন পদক্ষেপের পরে এসব খাতের আয়ের ওপর নিয়মিত হারে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হতে পারে। কর অব্যাহতি তুলে নেওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আসন্ন বাজেটে বহুল আলোচিত মৎস্য ও পোল্ট্রি খাতের বিদ্যমান আয়কর সুবিধা বাতিল করে স্বাভাবিক করহার প্রবর্তনের কথা ভাবছে সরকার।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে এসব খাত থেকে আয় করলে তার ওপর ৩ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ হারে আয়কর প্রদান করতে হয়। তবে আগামী বাজেটে এনবিআরের নতুন পদক্ষেপের পরে এসব খাতের আয়ের ওপর নিয়মিত হারে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হতে পারে। এ তালিকায় আসতে পারে হাঁস-মুরগি ও চিংড়ি হ্যাচারির আয়ও।

এছাড়া তালিকায় যুক্ত হতে পারে পোলট্রির পেলেটেড ফিড উৎপাদন, গবাদিপশু, চিংড়ি ও মাছের পেলেটেড ফিড উৎপাদন, বীজ উৎপাদন ও বিপণন, গবাদিপশুর খামার, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্যের খামার, ব্যাঙ উৎপাদন খামার, হর্টিকালচার, তুঁত চাষ, মৌমাছি চাষ প্রকল্প, রেশম গুটিপোকার খামার, মাশরুম খামার এবং ফ্লোরি কালচারের আয়।
বিশেষজ্ঞরা এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তবে প্রকৃত খামারিদের কিছুটা সুরক্ষার পক্ষে মত দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি, পোলট্রি, মাছ ও গবাদিপশুর খাদ্য উৎপাদনের ওপর কর বাড়লে এসব খাদ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে বলেও তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এনবিআর বর্তমানে যে আদেশ (এসআরও) দুটির মাধ্যমে এই কর অব্যাহতি প্রদান করা হচ্ছে, সেগুলো পর্যালোচনার আওতায় আনা হয়েছে এবং বাতিল করা হতে পারে।

এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, ট্যাক্স এক্সেম্পশন (কর অব্যাহতি) ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার অংশ হিসেবে এসব খাতের সুবিধা বাতিলের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, যদি এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়, তাহলে অতিরিক্ত প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব হতে পারে। তিনি জানান, এনবিআর এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব তৈরি করেছে, যা সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হবে।

এরপর প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত হবে। আগামী ২ জুন এসব পরিবর্তন অধ্যাদেশ আকারে পাস করতে পারে সরকার। বর্তমানে এসব খাত থেকে বার্ষিক আয় হলে প্রথম ১০ লাখ টাকার ওপর ৫ শতাংশ, পরবর্তী ১০ লাখ টাকার ওপর ১০ শতাংশ এবং অবশিষ্ট আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। অথচ এর বিপরীতে, ব্যক্তি করদাতাদের সর্বোচ্চ করহার বর্তমানে ৩০ শতাংশ এবং অধিকাংশ কোম্পানিকে ২৭.৫ শতাংশ হারে কর দিতে হয়।

×