
ছবি: সংগৃহীত।
স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে কিছু সহজ ও প্রাকৃতিক পানীয় অন্তর্ভুক্ত করলেই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাপেল সিডার ভিনেগার, গ্রিন টি, ব্ল্যাক কফি এবং সবজির স্মুদি রক্তে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় ও গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়াও দারচিনি চা, লেবু পানি, অ্যালোভেরা রস ও মেথি ভেজানো পানি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণে ইনসুলিনের কার্যকারিতা উন্নত করে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করাও অতিরিক্ত গ্লুকোজ শরীর থেকে বের করে দিতে সহায়তা করে।
চলুন জেনে নিই সকালের ১০টি এমন পানীয় যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সহায়ক:
১. অ্যাপেল সিডার ভিনেগার পানীয়:
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় ও খাবারের পর রক্তে শর্করার প্রতিক্রিয়া কমায়। ১-২ চামচ ভিনেগার এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খাবারের আগে অথবা রাতে ঘুমানোর আগে পান করলে উপকার পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই এটি পানি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে পান করতে হবে, নাহলে দাঁতের এনামেল ও হজমতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
২. গ্রিন টি:
গ্রিন টি-তে থাকা ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সহায়তা করে। প্রতিদিন ২-৩ মিনিট চা ভিজিয়ে গ্রিন টি পান করলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। চায়ে চিনি না দেয়াই ভালো।
৩. ব্ল্যাক কফি:
চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় ও বিপাক ক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। তবে খালি পেটে অতিরিক্ত ক্যাফেইন খেলে কর্টিসল হরমোন বাড়তে পারে, যার ফলে পরবর্তীতে শর্করা হঠাৎ কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই পরিমিত পরিমাণে গ্রহণই উত্তম।
৪. সবজির স্মুদি:
পালং শাক, কালে শাক, কম চিনি যুক্ত ফল, গ্রিক দই বা বাদামি মাখন দিয়ে তৈরি স্মুদি শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি, ফাইবার ও প্রোটিন দেয় যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৫. দারচিনি চা:
দারচিনিতে থাকা উপাদান ইনসুলিনের কার্যকারিতা অনুকরণ করে শর্করার মাত্রা হ্রাসে সাহায্য করে। এক টুকরো দারচিনি ১০ মিনিট ফুটিয়ে অথবা গুঁড়ো দারচিনি চা ইনফিউজারে দিয়ে চা তৈরি করা যায়। খাবারের আগে এটি পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
৬. লেবু পানি:
ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ লেবু পানি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় ও রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়। অর্ধেক লেবু এক গ্লাস গরম বা ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে দিনে কয়েকবার পান করা যেতে পারে।
৭. অ্যালোভেরা রস:
অ্যালোভেরা রস অগ্ন্যাশয়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও ইনসুলিন নিঃসরণে সহায়তা করে। প্রতিদিন ৩০-৫০ মিলিলিটার অ্যালোভেরা রস এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন। বাজারজাত চিনি যুক্ত অ্যালোভেরা জুস এড়িয়ে চলুন।
৮. মেথি ভেজানো পানি:
এক চামচ মেথি সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি পান করলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে। এতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার শর্করার শোষণ ধীর করে ও ইনসুলিন কার্যকারিতা উন্নত করে।
৯. পানি:
সাধারণ বিশুদ্ধ পানি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পর্যাপ্ত পানি শরীর থেকে অতিরিক্ত গ্লুকোজ বের করে দেয়। সকালে উঠে অন্তত ২ গ্লাস পানি পান করাই ভালো।
এই সব প্রাকৃতিক উপায়ে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ জীবন যাপন সম্ভব বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তবে যেকোনো পরিবর্তনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া শ্রেয়।
সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।
মিরাজ খান