
আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার আগেই মানুষ নিজেদের কষ্টার্জিত সঞ্চয় সিন্দুকে রাখতেন। এখন সেই দায়িত্ব নিয়েছে ব্যাংক। কিন্তু প্রশ্ন হলো আপনি যেই ব্যাংকে টাকা রাখছেন, সেটা কি আদৌ নিরাপদ?
সাম্প্রতিক সময়ে অনেকেই অভিযোগ করেছেন, ব্যাংকে টাকা থাকলেও তা তোলার সময় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তাই ব্যাংকে টাকা রাখার আগে জেনে নেওয়া জরুরি কোন ব্যাংক নিরাপদ।
প্রচলিত সূচক কি এখনও কার্যকর?
একসময় ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য বুঝতে ক্রেডিট রেটিং, ক্যামেলস রেটিং, মূলধন পরিস্থিতি, খেলাপি ঋণের হার ইত্যাদি সূচক দেখা হতো। তবে গত ১০ বছরে এসব পদ্ধতির কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। কারণ, রেটিং এজেন্সিগুলোর স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে এবং নিরীক্ষা সংস্থাগুলো অনেক ক্ষেত্রেই ভুল রিপোর্ট দিয়েছে।
ভালো ব্যাংক চেনার উপায় কী?
১. খেলাপি ঋণের হার দেখুন:
যে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ৫%–এর নিচে, সেটি তুলনামূলক ভালো।
১০%–এর বেশি হলে সেখানে আমানত রাখা ঝুঁকিপূর্ণ।
২. ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কেমন?
পরিচালকদের সততা, ভাবমূর্তি ও আর্থিক দক্ষতা দেখে আন্দাজ করা যায় ব্যাংক কতটা নিরাপদ।
৩. বার্ষিক প্রতিবেদন ও শীর্ষ ঋণগ্রহীতা:
ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে কিছু শীর্ষ ঋণগ্রহীতার নাম উল্লেখ থাকে। তারা কারা এবং তাদের পেমেন্ট রেকর্ড কেমন তা যাচাই করুন।
৪. অতিরিক্ত সুদ = বিপদের ইঙ্গিত:
যে ব্যাংক অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি সুদ দেয়, সেখানে আর্থিক সংকট থাকার সম্ভাবনা বেশি। বেশি সুদ মানেই বেশি লাভ নয়, হতে পারে ভবিষ্যতের ঝুঁকি।
৫. সেবার মান ও প্রযুক্তি:
অনলাইন ব্যাংকিং, অ্যাপ, ATM–এর সহজলভ্যতা ইত্যাদি দেখে ব্যাংকের আধুনিকতা ও গ্রাহকবান্ধবতা বোঝা যায়।
অতএব…
টাকা রাখার আগে যাচাই করুন ব্যাংকটি কি “তলাবিহীন ঝুড়ি”?
কারণ, টাকা আটকে গেলে ক্ষতি শুধু আপনারই। আর সময়মতো টাকা না পেলে তার আসল মূল্যও হারিয়ে যায়।
নিজের টাকাকে নিরাপদ রাখতে চোখ-কান খোলা রাখুন। সুদ নয়, নিরাপত্তাই হোক আপনার প্রথম অগ্রাধিকার।
Jahan