
ছবি : সংগৃহীত
ডায়াবেটিস এমন একটি নীরব ঘাতক, যা শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ধীরে ধীরে প্রভাব ফেলে। অনেকেই ডায়াবেটিসের সাধারণ উপসর্গ যেমন ঘন ঘন পিপাসা, বারবার প্রস্রাব, অতিরিক্ত ক্ষুধা বা ওজন হ্রাস সম্পর্কে জানেন। কিন্তু অনেক সময় এই রোগটি তার উপস্থিতি জানান দেয় কিছু “অদ্ভুত পায়ে” প্রকাশের মাধ্যমে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিসের কিছু ‘অজানা’ বা কম পরিচিত উপসর্গ পায়ে দেখা যায়, যা অবহেলা করলে বড় বিপদ হতে পারে। নিচে এমন কিছু লক্ষণ তুলে ধরা হলো :-
১. পায়ের অস্বাভাবিক অবশ ভাব বা ঝিনঝিনে অনুভব
পায়ে হঠাৎ করে অদ্ভুত রকমের অবশভাব, পিনচিং বা "পিন-নিডলস" অনুভব করা ডায়াবেটিসজনিত নার্ভ ক্ষতির (ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি) প্রথম লক্ষণ হতে পারে।
২. পায়ের ত্বকে শুষ্কতা ও ফাটা
ডায়াবেটিসে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়, যার ফলে পায়ের ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে। পায়ের পাতা বা গোড়ালির চামড়া যদি নিয়মিত ফেটে যায়, সতর্ক হোন।
৩. ঘন ঘন পায়ে ইনফেকশন বা ঘা হওয়া
ডায়াবেটিসে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় পায়ে ছোটখাটো কাটা-ঘা সহজেই বড় আকার ধারণ করতে পারে এবং সারতেও সময় নেয়।
৪. পায়ের তাপমাত্রা কমে যাওয়া
অনেকেই খেয়াল করেন—শরীর গরম থাকলেও পা ঠান্ডা লাগে। এটি হতে পারে রক্ত চলাচলের সমস্যা এবং ডায়াবেটিসের পূর্বাভাস।
৫. নখ ও আঙুলের রঙ পরিবর্তন
পায়ের নখ কালচে হয়ে যাওয়া বা আঙুলের ত্বক নীলচে হতে শুরু করলে দ্রুত পরীক্ষা করানো উচিত। রক্ত চলাচলের ব্যাঘাতের কারণে এমনটি হতে পারে।
৬. পায়ে ব্যথা বা হেঁটে যেতে কষ্ট হওয়া
ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির ফলে অনেকেই বলেন, “হাঁটলে মনে হয় কেউ পায়ের ওপর ইট চাপা দিয়েছে।” এমন ব্যথা উপেক্ষা করবেন না।
করণীয় কী?
🔹 পায়ের প্রতি নজর রাখুন। প্রতিদিন ভালোভাবে ধুয়ে মুছে ময়েশ্চারাইজ করুন।
🔹 পায়ে কাটা-ছেঁড়া হলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
🔹 রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
🔹 সন্দেহ হলে পায়ের নার্ভ টেস্ট (নিউরোপ্যাথি স্ক্রিনিং) করান।
🔹 পায়ে কোনো পরিবর্তন টের পেলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
পা আপনার শরীরের নীরব বার্তাবাহক। অবহেলা নয়, বরং সচেতনতাই হতে পারে ডায়াবেটিস প্রতিরোধের প্রথম ধাপ। আপনার পায়ে অস্বাভাবিক কিছু নজরে এলে তা হতে পারে শরীরের এক গোপন সতর্ক সংকেত।
Mily