ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ঘরে তৈরি এই ৫ পানীয় 

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ৮ জুলাই ২০২৫

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ঘরে তৈরি এই ৫ পানীয় 

ছবিঃ সংগৃহীত

সবকিছুই ওষুধের বোতল থেকে আসে না—অনেক সময় আমাদের প্রতিদিনের রান্নাঘরের উপাদানই হয়ে উঠতে পারে স্বাস্থ্যরক্ষার সহায়ক। যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রাকৃতিক পদ্ধতির প্রতি আগ্রহ রয়েছে, তাদের জন্য কিছু ঐতিহ্যবাহী পানীয় সহায়ক হতে পারে বলে বিশ্বাস করা হয়।

এই পানীয়গুলো কোনো জাদুকরী সমাধান নয়, তবে নিয়মিত পান করলে শরীরকে সামান্য হলেও ইতিবাচক দিকেই ঠেলে দিতে পারে। এগুলোর পেছনে রয়েছে পারিবারিক প্রজন্ম ধরে চলে আসা ব্যবহার, বন্ধুবান্ধবের অভিজ্ঞতা, এবং কিছু আধুনিক গবেষণার ইঙ্গিত।

১. মেথির ভেজানো পানি
রাতে ১ চা চামচ মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে সেই পানি পান করা হয়। এটি রক্তে শর্করার শোষণ ধীর করে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। এছাড়াও এটি ত্বক ও চুলের জন্য ভালো, প্রদাহ কমায় এবং মাসিকজনিত অস্বস্তিতেও সহায়ক।

প্রস্তুত প্রণালি:
১ চা চামচ মেথি ১ গ্লাস পানিতে রাতভর ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে ছেঁকে সেই পানি পান করুন।

২. গরম দারুচিনি পানি
দারুচিনি শুধু মিষ্টি স্বাদের মসলা নয়, এটি পরিপাক প্রক্রিয়ায় সহায়ক এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পারে বলে বিশ্বাস করা হয়।

প্রস্তুত প্রণালি:
অর্ধ চা চামচ গুঁড়ো দারুচিনি (অথবা ছোট একটি কাঠি) ১ কাপ ফুটন্ত পানিতে দিয়ে কয়েক মিনিট সিদ্ধ করুন। সামান্য ঠান্ডা হলে সকালে বা খাওয়ার পরে পান করুন।

৩. করলার রস
করলা স্বাদের দিক দিয়ে তেতো হলেও এতে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান থাকে যা ইনসুলিনের মতো কাজ করতে পারে, ফলে গ্লুকোজ শোষণে সহায়তা করে। এটি বহু ভারতীয় পরিবারে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়।

প্রস্তুত প্রণালি:
১টি মাঝারি আকারের করলা ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে বীজ ফেলে দিন। কিছুটা পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে ছেঁকে নিন। স্বাদ কমানোর জন্য লেবুর রস বা শসার রস মেশাতে পারেন। সকালে খালি পেটে ছোট এক গ্লাস পান করুন। সপ্তাহে ১-২ বার শুরু করুন।

৪. আমলকীর পানি
ভিটামিন C-তে ভরপুর এই ফলটি অগ্ন্যাশয়ের কার্যকারিতা সহায়তা করতে পারে এবং খাওয়ার পরে শর্করার হঠাৎ বেড়ে যাওয়া ঠেকাতে পারে বলে ধারণা করা হয়। এটি ত্বক ও হজমের জন্যও উপকারী।

প্রস্তুত প্রণালি:
তাজা আমলকী কুঁচি করে বা চিপে ১ চা চামচ রস সংগ্রহ করে ১ গ্লাস পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিন। সকালে বা দুপুরে পান করুন। এক চিমটি বিট লবণ মেশালে স্বাদ বাড়বে।

৫. অ্যালোভেরা ও তুলসী পানীয়
অ্যালোভেরা শুধুমাত্র ত্বকের যত্নেই সীমাবদ্ধ নয়—সঠিক মাত্রায় খেলে এটি অন্ত্রের সমস্যা কমাতে এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। তুলসী স্ট্রেস কমায় এবং রক্তে গ্লুকোজ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।

প্রস্তুত প্রণালি:
১ টেবিল চামচ তাজা অ্যালোভেরা জেল ও ৩–৪টি তুলসী পাতা হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। তারপর ধীরে ধীরে খালি পেটে পান করুন।

এই ঘরোয়া পানীয়গুলো খুবই সাধারণ এবং সহজলভ্য। এগুলো কোনো ‘মিরাকল কিওর’ নয়—বরং স্বাস্থ্য সচেতন জীবনের ক্ষুদ্র অথচ ধারাবাহিক অভ্যাস হিসেবে বিবেচ্য। তবে যেকোনো নতুন অভ্যাস শুরু করার আগে, বিশেষ করে ডায়াবেটিস বা ওষুধ গ্রহণের ক্ষেত্রে, ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

নোভা

×