ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইউরোপের রাজার আরেক কীর্তি

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ২৯ নভেম্বর ২০১৮

ইউরোপের রাজার আরেক কীর্তি

জিএম মোস্তফা ॥ উয়েফা ক্লাব পর্যায়ে সবধরনের প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ গোল ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সর্বোচ্চ গোলদাতা। এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড। একমাত্র ফুটবলার হিসেবে তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে গোল। গ্রুপপর্বের সব ম্যাচে গোলের রেকর্ড অবিস্মরণীয় রেকর্ড। এসব কারণেই ইউরোপের ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন্স লীগকে বলা হয় ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর টুর্নামেন্ট। সেই কথাটাকে যেন অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলেছেন সিআর সেভেন। অতীত পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগে নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করলেন ইউরোপের রাজা রোনাল্ডো। ইউরোপ সেরার এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসে প্রথম ফুটবলার হিসেবে ১০০ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়লেন তিনি। ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে এদিন জয়ের পরই এই রেকর্ডটাকে নিজের করে নিলেন জুভেন্টাসের পর্তুগীজ সুপারস্টার। একযুগেরও বেশি সময় ধরে খেলে এই রেকর্ড গড়েন রোনাল্ডো। এই সময়ে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ক্লাবের জার্সিতে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সিআর সেভেন। ৩৩ বছর বয়সী এই তারকা ফুটবলার ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের সবচেয়ে সফল ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে জিতেছেন ২৬ ম্যাচ। এরপর রিয়াল মাদ্রিদে। স্প্যানিশ জায়ান্টদের হয়ে সর্বোচ্চ ৭১ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েন তিনি। বাকি তিন ম্যাচ জিতেছেন বর্তমান ক্লাব জুভেন্টাসের হয়ে। ইউরোপ সেরার এই টুর্নামেন্টে এ যাবতকালের ইতিহাসে ১৪০টি দল খেলেছে। এর মধ্যে ১৩৬ দলের চেয়ে বেশি ম্যাচ জয়ের অবিশ্বাস্য রেকর্ড একাই করলেন রোনাল্ডো। তাতেই প্রমাণিত হয় সিআর সেভেনের গোল করার যে কি অবিশ্বাস্য ক্ষমতা। গত গ্রীষ্মেই রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে নতুন করে ঠিকানা গড়েন ইতালিয়ান সিরি’এ লীগে। বলা হচ্ছে, জুভেন্টাসের শুরুটা খুব ভাল করতে পারেননি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক এই তারকা ফুটবলার। অথচ ইতালিয়ান ক্লাবটির হয়ে ১৭ ম্যাচ খেলে ইতোমধ্যেই নামের পাশে ১৬ গোল যোগ করেছেন তিনি। মঙ্গলবার ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে গোলের সুযোগ এসেছিল তার। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। তবে ক্রোয়েশিয়ান স্ট্রাইকার মারিও মানজুকিচের করা একমাত্র গোলটিও এসেছে রোনাল্ডোর এ্যাসিস্ট থেকে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে রোনাল্ডোর গোল রেকর্ড সর্বোচ্চ ১২১টি। এই তালিকায় দুই নম্বরে রয়েছেন তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসি। বার্সিলোনার আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের গোলসংখ্যা ১০৫। অন্যদিকে ৭১ গোল নিয়ে তিনে রয়েছেন রাউল গঞ্জালেস। এ বছর অসাধারণ পারফর্মেন্সের সৌজন্যে গ্লোব সকার এ্যাওয়ার্ডের সেরা তিনেও জায়গা করে নিয়েছেন জুভেন্টাসের পর্তুগীজ সুপারস্টার। তবে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন বার্সিলোনার আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার লিওনেল মেসি। সিআর সেভেনের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছেন ফ্রান্সের এ্যান্থনি গ্রিজম্যান ও তার স্বদেশী সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপে। সোমবার গ্লোব সকারের প্রধান নির্বাহী তোমাসো বেনদোনি ঘোষণা করেছেন রোনাল্ডো, গ্রিজম্যান ও এমবাপের নাম। ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি ১৩তম দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস কনফারেন্সে ‘গ্লোব সকার এ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠানে ঘোষণা করা হবে বিজয়ীর নাম। বেনদোনি এ সময় বলেন, ‘গ্লোব সকার এ্যাওয়ার্ডের দশম বর্ষ বিশেষ এক মাইলফলক। আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সেরা খেলোয়াড়ের ক্যাটাগরির ফাইনালিস্ট হিসেবে থাকছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো, কিলিয়ান এমবাপে ও এ্যান্থনি গ্রিজম্যান।’ রোনাল্ডো রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে গত আট বছরে চারবার জিতেছেন এই পুরস্কার। এবার তার সামনে টানা তৃতীয়বার জেতার হাতছানি। রাশিয়া বিশ্বকাপে ফ্রান্সকে ২০ বছর পর চ্যাম্পিয়ন করানোর ফলে এমবাপে-গ্রিজম্যানের সামনেও রয়েছে এই শিরোপা উঁচিয়ে ধরার দারুণ সুযোগ। এ বছরটা দুর্দান্ত কেটেছে লুকা মডরিচের। ব্যালন ডি’অরের দৌড়েও ফেবারিটের তকমাটা গায়ে মাখানো রিয়াল মাদ্রিদের এই ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডারের। কিন্তু দুবাইয়ের গ্লোব সকার এ্যাওয়ার্ডের আয়োজকরা অবশ্য এই তালিকার সেরা তিনে রাখেননি ইতোমধ্যেই ফিফার ‘দ্য বেস্ট’ ও ইউরোপের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার জেতা লুকা মডরিচকে।
×