
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, তারেক রহমান মুক্ত অর্থনীতি নিয়ে ভাবছেন। রাজনীতিতে যেমন মুক্ত রাজনীতির সুযোগের কথা ভাবছেন, তেমনি অর্থনীতিতেও মুক্ত অর্থনীতির সুযোগের কথা ভাবছেন। অর্থনীতিকে গণতান্ত্রিক করার কথা ভাবছেন। অর্থনীতিতে ব্যুরোক্রেসি ও দখলদারিত্ব কোনোটাই চলবে না। রাজনীতির মতো ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, অর্থাৎ সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে। কোনো ধরনের বাধা সেখানে থাকবে না। আগামী দিনে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন করা হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের আইন পরিবর্তন করা হবে।
বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর সিলভার ক্যাসেল হোটেলে ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ৬টি জেলা নিয়ে বিভাগীয় ব্যবসায়ী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, সরকারের কাজ হচ্ছে ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনীতিকে ফ্যাসিলিটেট করা, অর্থাৎ সহযোগিতার মাধ্যমে জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু বিগত দিনে জনগণের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে কিছু লুটেরাদের হাতে অর্থনীতি তুলে দেওয়া হয়েছিল। এই লুটেরারা ব্যাংক লুট করেছে, শেয়ারবাজার লুট করেছে, বিদেশে অর্থ পাচার করেছে। বাংলাদেশে যত মেগা প্রকল্প সবগুলোর মাধ্যমেই লুটপাট হয়েছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়ার রেখে যাওয়া মুক্ত বাজার অর্থনীতি থেকে সরে গিয়ে তাদের কিছু লোক অর্থনীতিকে কুক্ষিগত করেছিল। একই সঙ্গে রাজনীতিকেও কুক্ষিগত করেছে। কারণ, অর্থনৈতিক শক্তি যার কাছে থাকবে রাজনৈতিক শক্তিও তার কাছেই যাবে।
এজন্যই জিয়াউর রহমান অর্থনীতিকে গণতান্ত্রিক করার কথা বলেছেন। শুধু রাজনীতিতে গণতান্ত্রিকতা আনলে মানুষের মুক্তি হবে না। শুধু রাজনৈতিক গণতন্ত্রের মাধ্যমে দেশ এগোবে না। অর্থনৈতিক গণতন্ত্রও করতে হবে। অর্থনীতিতেও গণতন্ত্র আনতে হবে। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ যেন অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারে, সেজন্য নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের দৌরাত্ম্যে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা যে কষ্টের সম্মুখীন হন সেখান থেকে তাদের বের করে আনতে হবে। ব্যবসায়ীদের মাধ্যমেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। কারণ, অর্থনীতির চালিকাশক্তি হলো ব্যবসায়ীরা। গত দেড় দশকে কেউ মুক্ত অর্থনীতির পরিবেশে কাজ করতে পারেননি। দেশের অর্থনীতি এখন গর্তের কিনারায় আছে। সেখান থেকে অর্থনীতিকে টেনে তুলতে হলে ব্যবসায়ীদের সমর্থন ছাড়া তা সম্ভব নয়।
ময়মনসিংহ বিভাগ ব্যবসায়ী সম্মেলনের সমন্বয়ক মনসুর আলম চন্দনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ জেলার চেম্বার এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ীগণ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেস আলী মামুন, আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, সদস্য সচিব মোতাহার হোসেন তালুকদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, সম্মেলনের সহ-সমন্বয়ক জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আবু সাঈদ, তৌহিদুজ্জামান ছোটন প্রমুখ।
আফরোজা