ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২

অস্ট্রেলীয় নারীদেরকে আপত্তিকর তল্লাশি, কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি

প্রকাশিত: ০৫:০২, ২৫ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০৫:০৪, ২৫ জুলাই ২০২৫

অস্ট্রেলীয় নারীদেরকে আপত্তিকর তল্লাশি, কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি

ছবি: প্রতীকী

কাতারের দোহা বিমানবন্দরে অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ নারী যাত্রীকে জোরপূর্বক আপত্তিকর তল্লাশি চালানোর ঘটনায় কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল আদালত। আদালতের আপিল বিভাগ এক রায়ে জানায়, এ ঘটনায় কাতার এয়ারওয়েজের দায় অস্বীকার করা ঠিক হয়নি।

২০২০ সালে দোহা বিমানবন্দরের একটি টয়লেট থেকে একটি নবজাতক শিশুর মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পর ওই পাঁচ নারীকে উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে এনে নার্সদের দ্বারা গোপনে পরীক্ষা করা হয়, তারা সন্তান জন্ম দিয়েছেন কিনা তা জানার জন্য। গোটা ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

মামলার পেছনের ঘটনা ও প্রাথমিক রায়

২০২১ সালে কাতার এয়ারওয়েজ, কাতারের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অপারেটর প্রতিষ্ঠান মাতারের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়। বাদীপক্ষের অভিযোগ ছিলঅবৈধ শারীরিক স্পর্শ ও মিথ্যা কারাবন্দির কারণে তাদের মানসিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিষণ্নতা ও পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার।

তবে ২০২৩ সালে বিচারপতি জন হ্যালি রায় দেন যে, কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মামলা চলতে পারে না এবং তাদের কর্মীরা পুলিশের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারতোএমন ধারণা ‘অবাস্তব ও অযৌক্তিক’।

আপিল রায়ে নতুন মোড়

মামলার বাদীরা পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ জানায়, প্রাথমিক বিচারপতি এমন কিছু বিষয়ে রায় দিয়েছেন, যেগুলো কেবল ট্রায়ালে নির্ধারিত হওয়া উচিত ছিল।

ফেডারেল কোর্টের এই রায়ে বলা হয়, কাতার এয়ারওয়েজ ও মাতার-এর বিরুদ্ধে মামলাটি ট্রায়ালে চলবে, তবে কাতারের বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা চলবে না।

ভুক্তভোগীদের বক্তব্য

নারীদের আইনজীবী ড্যামিয়ান স্টুরজাকার জানান, ‘আমাদের মক্কেলরা সেদিন দোহাতে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। তারা ন্যায়বিচার পাওয়ার যোগ্য।’

একজন নারী জানান, ‘আমার মনে হচ্ছিল, আমাকে যেন ধর্ষণ করা হয়েছে।’ আরেকজন বলেন, ‘আমি ভাবছিলাম, আমাকে অপহরণ করা হয়েছে।’

ঘটনার পর কাতার সরকার একজন বিমানবন্দর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক মামলা করেছিল, যার রায়ে তার কারাদণ্ড হলেও পরে তা স্থগিত হয়। কিন্তু ভুক্তভোগীরা জানান, দোহা কর্তৃপক্ষের দিক থেকে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তারা এখনো কাতারের পক্ষ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক ক্ষমাপ্রার্থনা এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তা প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন চাচ্ছেন।

 

সূত্র: বিবিসি।

রাকিব

×