ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

মহাকাশ থেকে স্বামীর কলে চমকে উঠলেন স্ত্রী: যে প্রযুক্তিতে ভিডিও কল করেন নভোচারীরা

প্রকাশিত: ০১:০১, ২৬ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০১:০২, ২৬ জুলাই ২০২৫

মহাকাশ থেকে স্বামীর কলে চমকে উঠলেন স্ত্রী: যে প্রযুক্তিতে ভিডিও কল করেন নভোচারীরা

ছবি: সংগৃহীত

প্রযুক্তির অগ্রগতি আজ আমাদের পৃথিবীকে এনে দিয়েছে হাতের মুঠোয়। দূরত্ব যেন এখন আর কোনো বাধা নয়অডিও, ভিডিও কল কিংবা মেসেজিংয়ের মাধ্যমে মুহূর্তেই যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। তবে ঘটনা যদি হয় মহাকাশ থেকে ভিডিও কলেরতাহলে তা নিঃসন্দেহে চমকে ওঠার মতোই!

সম্প্রতি এমন এক অনন্য ঘটনার সাক্ষী হয়েছে ভারত। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে নিজের স্ত্রীকে ভিডিও কল করে ইতিহাস গড়েছেন ভারতীয় নভোচারী গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। আর সেই কল ধরেই ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন তাঁর স্ত্রী কামনা শুক্লাযিনি হয়েছেন প্রথম ভারতীয় নারী, যিনি সরাসরি মহাকাশ থেকে স্বামীর ফোন কল পেয়েছেন।

মহাকাশের মায়া ও ভালবাসার গল্প

স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটে ‘এক্সিয়ম-৪’ মিশনের অংশ হিসেবে শুভাংশু শুক্লা ২৫ জুন যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে যাত্রা করেন। পরদিন ২৬ জুন পৌঁছান আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে। আর সেদিনই সেই ঐতিহাসিক ভিডিও কল করেন স্ত্রী কামনার সঙ্গে।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন বলছে, সেই কলের সময় শুভাংশু মহাকাশে তাঁর দৈনন্দিন কাজ, বৈজ্ঞানিক গবেষণার অভিজ্ঞতা ও মহাকাশ থেকে দেখা পৃথিবীর অসাধারণ দৃশ্য নিয়ে কথা বলেন। স্ত্রীর সঙ্গে এমন এক সংযোগ, যা শুধুই ভালোবাসার নয়প্রযুক্তির নতুন দিগন্তেরও প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কীভাবে সম্ভব হলো মহাকাশ থেকে ভিডিও কল?

মহাকাশে তো নেই কোনো মোবাইল টাওয়ার বা সাধারণ নেটওয়ার্ক। তাহলে কীভাবে সম্ভব হলো এই যোগাযোগ?

এর পেছনে কাজ করেছে অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন প্রযুক্তি। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে পৃথিবীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে ব্যবহৃত হয় Tracking and Data Relay Satellite System (TDRSS)। এটি নাসা পরিচালিত একটি ব্যবস্থা, যা ভূস্থির কক্ষপথে থাকা উপগ্রহের মাধ্যমে আইএসএস থেকে আসা ভিডিও ও অডিও সিগনাল গ্রহণ করে।

সিগনাল প্রথমে কেউ-ব্যান্ড রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে TDRSS উপগ্রহে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তা চলে আসে পৃথিবীর গ্রাউন্ড স্টেশনে। এরপর সেই তথ্য যুক্ত হয়ে যায় সাধারণ ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের সঙ্গেফলে সেটি রূপ নেয় একটি সাধারণ ভিডিও কলে।

বৈজ্ঞানিক বাস্তবতা আর আবেগের সম্মিলন

এই অভিনব প্রযুক্তির মাধ্যমে মহাকাশ আর পৃথিবীর দূরত্ব যেন আরও একটু কমে এলো। একই সঙ্গে এই ভিডিও কলের অভিজ্ঞতা মহাকাশ গবেষণায় মানুষের অংশগ্রহণ ও আবেগের এক নতুন অধ্যায় রচনা করল। মহাকাশপ্রেমীরা বলছেনএই মুহূর্তটি ভালোবাসা, প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের এক অসাধারণ সংমিশ্রণ।

মহাকাশ থেকে একজন নভোচারীর কল কেবলই একটি ভিডিও কল নয়এটি হয়ে উঠেছে দুইটি হৃদয়ের মাঝে এক অনন্য সংযোগ, পৃথিবী ও মহাকাশের মধ্যকার এক প্রাণবন্ত সেতুবন্ধন।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=bs3xeNMyJEY

রাকিব

×