
ছবি: প্রতীকী
আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা না থাকায় অনেক সময় পারিবারিক বিরোধ কিংবা সম্পত্তি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতি এড়াতে উত্তরাধিকার আইন সম্পর্কে সবার সচেতন হওয়া জরুরি বলে মত দেন আইনজীবী মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন।
তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তার স্থাবর (যেমন জমি) ও অস্থাবর (যেমন টাকা-পয়সা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র) সম্পত্তির মালিকানা পেতে হলে আদালতের মাধ্যমে উত্তরাধিকার সনদ বা সাকসেশন সার্টিফিকেট নিতে হয়।’
আইনজীবী বেলায়েত হোসেন জানান, মৃত ব্যক্তির ব্যাংকে জমা অর্থ, শেয়ার, ডিবেঞ্চার, সঞ্চয়পত্র, গাড়ি বা অন্য কোনো অস্থাবর সম্পত্তি উত্তরাধিকারীরা নিজেদের নামে স্থানান্তরের জন্য আদালতের কাছ থেকে এই সনদ সংগ্রহ করে থাকেন। এ বিষয়টি “সাকসেশন অ্যাক্ট, ১৯২৫”-এর ৩৭০ থেকে ৩৮৯ ধারায় উল্লেখ আছে।
উত্তরাধিকারী কারা?
মৃত ব্যক্তি যদি মুসলিম হন, তবে ইসলামি উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী যাদের ওয়ারিশ হওয়ার অধিকার আছে, তারা উত্তরাধিকার সনদের জন্য আবেদন করতে পারবেন। অন্য ধর্মাবলম্বীরা তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় আইন অনুযায়ী আবেদন করবেন।
তবে এ ক্ষেত্রে আইনজীবী বেলায়েত হোসেন সতর্ক করে বলেন, ‘কোনো বৈধ ওয়ারিশকে বাদ দিয়ে সনদ সংগ্রহ করা আইনত এবং ধর্মীয়ভাবে অন্যায়।’ কেউ যদি এরকম করেন, তাহলে বঞ্চিত ব্যক্তি আদালতে আবেদন করে পূর্বের সনদ বাতিল করতে পারেন।
কত খরচ পড়ে?
সাকসেশন সার্টিফিকেট পেতে প্রথমে আইনজীবীর ফি ও আবেদন ফাইলিংয়ের খরচ থাকে। আদালত আবেদন মঞ্জুর করলে নির্দিষ্ট হারে কোর্ট ফি দিতে হয়।
- ২০ হাজার টাকার কম মূল্যের সম্পত্তিতে কোর্ট ফি প্রযোজ্য নয়।
- ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ১ শতাংশ হারে।
- ১ লাখ টাকার বেশি হলে ২ শতাংশ হারে কোর্ট ফি দিতে হয়।
কী কী কাগজপত্র লাগে?
- স্থানীয় জনপ্রতিনিধির ইস্যু করা ওয়ারিশান সনদ
- সিটি করপোরেশন বা ইউনিয়ন অফিসের মৃত্যু সনদ
- প্রয়োজনে উত্তয়ন পত্র বা হাসপাতালের মৃত্যু সনদ
- আবেদনকৃত সম্পত্তির প্রমাণপত্র (যেমন ব্যাংক হিসাব বিবরণী, শেয়ার সার্টিফিকেট ইত্যাদি)
সনদ পেতে কত সময় লাগে?
আইনজীবীর মতে, সাধারণত তিনটি তারিখে কাজটি হয়—
১. আবেদন দাখিল
২. সমন জারি ও ফেরত
৩. জবানবন্দি গ্রহণ
সব মিলিয়ে কমপক্ষে ১০ দিন সময় লাগতে পারে, তবে জটিলতা থাকলে সময় বাড়তেও পারে।
সূত্র: https://youtu.be/ZOvrSFSCy2A?si=nt7gu4foEUEWe_su
রাকিব