
ছবিঃ সংগৃহীত
চ্যাটজিপিটির সহায়তায় এক নারীর মায়ের জীবন রক্ষা পেয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতের এক এক্স (পূর্বে টুইটার) ব্যবহারকারী শ্রেয়া। ১৮ মাস ধরে মায়ের ক্রমাগত কাশির সঠিক কারণ খুঁজে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। নামী ডাক্তার, একাধিক চিকিৎসা পদ্ধতি—হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ, অ্যালোপ্যাথি—সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত আশার আলো দেখান চ্যাটজিপিটি, যার বিশ্লেষণ চিকিৎসকদের চোখ খুলে দেয়।
AI-র চমক: যা চিকিৎসকরাও ধরতে ব্যর্থ হন
শ্রেয়া জানান, তার মা একটানা প্রায় দেড় বছর ধরে কাশছিলেন। চিকিৎসার পর চিকিৎসা চললেও কাশির উপশম হচ্ছিল না, বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছিল। শেষপর্যন্ত অভ্যন্তরীণ রক্তপাত শুরু হয়—একটি বিপজ্জনক লক্ষণ, যা জীবন-হানির সম্ভাবনা বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।
নানা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শেও কোনও অগ্রগতি না দেখে শ্রেয়া প্রযুক্তির দ্বারস্থ হন। এই পরিস্থিতিতে তিনি সাহায্য চান OpenAI-এর কনভারসেশনাল AI চ্যাটজিপিটির কাছ থেকে। তখনই সামনে আসে চমকপ্রদ তথ্য।
AI-র নিখুঁত প্রশ্ন: "BP ওষুধে এই উপাদান আছে কি?"
চ্যাটজিপিটি, শ্রেয়ার মায়ের উপসর্গগুলো বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য কারণগুলোর একটি তালিকা দেয়। সেখানে একটি উল্লেখযোগ্য ইঙ্গিত ছিল—মায়ের উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা। এরপর AI এক নির্দিষ্ট প্রশ্ন তোলে: “এই উপাদানযুক্ত BP ওষুধ তিনি কি খাচ্ছেন?”
শ্রেয়া যখন মায়ের প্রেসক্রিপশন পরীক্ষা করে দেখেন যে, হ্যাঁ—ওই উপাদানটি সত্যিই রয়েছে—তখন চ্যাটজিপিটির কথাটিকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি আবার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
চিকিৎসকও মেনে নিলেন AI-এর তথ্য
চ্যাটজিপিটির পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসক দল পুনরায় মূল্যায়ন করে এবং নিশ্চিত হয়—উক্ত উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের একটি সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল দীর্ঘস্থায়ী কাশি ও রক্তপাতের ঝুঁকি। সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ পরিবর্তন করা হয়, এবং কিছু সপ্তাহের মধ্যেই শ্রেয়ার মায়ের অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটে।
শ্রেয়া সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন,
"এখন মা ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন। অতিরঞ্জন করছি না, সত্যিই চ্যাটজিপিটি ওনার জীবন বাঁচিয়েছে।"
তিনি OpenAI এবং এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্যাম অল্টম্যানকে ধন্যবাদ জানান এই "অসাধারণ সৃষ্টি"র জন্য।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসা ও বিতর্ক
শ্রেয়ার এই পোস্ট ভাইরাল হয়ে পড়ে। হাজারো মানুষ লাইক, শেয়ার ও মন্তব্য করেন। অনেকে AI-র ভূয়সী প্রশংসা করেন, আবার অনেকেই প্রশ্ন তোলেন প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থার ব্যর্থতা নিয়ে।
একজন লিখেছেন—
"আপনার মায়ের সুস্থতা দেখে খুব ভালো লাগলো। কিন্তু একইসঙ্গে এটা দেখায়, কত বড় গ্যাপ আছে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়। এটা তো সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া—চিকিৎসকদের এটা আগেই বুঝে ফেলা উচিত ছিল।"
আরেকজন বলেন—
"চ্যাটজিপিটি এখন যেন প্রথমসারির প্রাথমিক সহায়ক। গুগল যেখানে শুধু তথ্য ছুঁড়ে দেয়, AI সেখানে বুঝিয়ে ব্যাখ্যা করে।"
শেষ কথা:
এই ঘটনা প্রমাণ করে—যদিও AI এখনো চিকিৎসকের বিকল্প নয়, তবে এটা অনেকক্ষেত্রে হতে পারে এক শক্তিশালী সহায়তাকারী। বিশেষ করে, যখন প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যর্থ হয়, তখন নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
ইমরান