ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২

হাল্ক হোগানের মৃত্যু: কিংবদন্তি রেসলার টেরি বলেয়ার জীবনের অজানা অধ্যায়

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৫ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০৫:৪৫, ২৫ জুলাই ২০২৫

হাল্ক হোগানের মৃত্যু: কিংবদন্তি রেসলার টেরি বলেয়ার জীবনের অজানা অধ্যায়

ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বখ্যাত রেসলিং সুপারস্টার হাল্ক হোগান আর নেই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। যদিও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত্যুর কারণ জানানো হয়নি।

‘হাল্ক হোগান’ নামটির পেছনের আসল মানুষটির নাম টেরি জিন বলেয়া (Terry Gene Bollea)। ১৯৫৩ সালের ১১ আগস্ট জর্জিয়ার অগাস্টা শহরে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি বড় হয়েছেন ফ্লোরিডার ট্যাম্পাতে।

রেসলিং নয়, শুরুটা হয়েছিল গিটার দিয়ে

বলেয়া ছোটবেলা থেকেই সংগীত, বেসবল এবং জিমে সময় দিতেন। রেসলিংয়ের আগেও তিনি ছিলেন একটি রক ব্যান্ডের দক্ষ বেস গিটারিস্ট। তবে ভাগ্য তাঁকে নিয়ে যায় রিংয়ের দুনিয়ায়, যেখানে তিনি হয়ে ওঠেন এক জীবন্ত কিংবদন্তি।

‘হাল্ক হোগান’—একটি স্ট্র্যাটেজিক ক্যারেক্টার

‘হাল্ক’ নামটি আসে তাঁর বিশাল দৈহিক গঠনের কারণে। শোনা যায়, একবার টিভি শোতে ‘দ্য ইনক্রেডিবল হাল্ক’-খ্যাত লু ফেরিগনোর পাশে দাঁড়ালে হোগান ছিলেন আরও বেশি বলিষ্ঠ। সেখান থেকেই ‘হাল্ক’। আর ‘হোগান’ নামটি যোগ করেন WWE-র প্রতিষ্ঠাতা ভিন্স ম্যাকমোহন সিনিয়র, যাতে আইরিশ-ধাঁচের একটা আবেদন তৈরি হয়।

হাল্ক, কিন্তু কাগজে টেরি

অনেক বছর ধরে শুধু স্টেজ বা ব্র্যান্ড নাম হিসেবেই ‘হাল্ক হোগান’ ব্যবহার করতেন। তবে আইনগতভাবে নামটি তাঁর ছিল না। পরে ব্যবসা ও অন্যান্য আইনি বিষয়ে ‘হাল্ক হোগান’ নাম ব্যবহারের অনুমোদন পান। তখনও অনেকেই জানতেন না—হাল্ক হোগান আসলে একজন টেরি বলেয়া।

স্টেরয়েড ও ব্যথানাশকের ছায়া

তার জীবন কেবল গ্ল্যামারেই ভরা ছিল না। হোগান নিজেই স্বীকার করেছিলেন, কেরিয়ারের শুরুর দিকে স্টেরয়েড ব্যবহার করতেন, যা তাঁর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। দীর্ঘদিনের ব্যথা, অস্ত্রোপচার আর পারফর্ম করার চাপ—সব মিলিয়ে ব্যথানাশকের ওপর নির্ভরতা গড়ে ওঠে। কখনও কখনও আশপাশের মানুষ তার মধ্যে রাগের বিস্ফোরণ, মুড সুইং দেখতেন—যা স্টেরয়েড ব্যবহারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।

সংস্কৃতির অংশ হয়ে ওঠা এক চরিত্র

হাল্ক হোগান শুধু রেসলিংয়ের একজন নামী তারকা ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন ৮০ ও ৯০-এর দশকের সাংস্কৃতিক আইকন। সিনেমা, টিভি শো, রিয়েলিটি সিরিজ থেকে শুরু করে ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল পর্যন্ত—সবখানেই ছিল ‘হাল্কামানিয়া’র প্রভাব।

তাঁর মৃত্যুতে সারা বিশ্বের রেসলিংপ্রেমীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে শিগগিরই আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসবে বলে জানা গেছে।

ইমরান

×