ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

লোডশেডিংয়ে কেরাণীগঞ্জে জনজীবন বিপর্যস্ত, বিদ্যুৎ অফিস বলছে—আমাদের কিছু করার নেই

ইস্পাহানী ইমরান, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, ঢাকা

প্রকাশিত: ০০:৫৯, ২৫ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০০:৫৯, ২৫ জুলাই ২০২৫

লোডশেডিংয়ে কেরাণীগঞ্জে জনজীবন বিপর্যস্ত, বিদ্যুৎ অফিস বলছে—আমাদের কিছু করার নেই

ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকার কেরাণীগঞ্জে লোডশেডিং চরমে পৌঁছেছে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার কারণে এলাকার প্রায় সব ইউনিয়নের মানুষ অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন। কেরাণীগঞ্জের শুভাড্যা, আগানগর, জিনজিরা, কোন্ডা, তেঘরিয়া, কালিন্দী, রুহিতপুর, বাস্তা ও হাসনাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় দিনের বেশিরভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না।

লোডশেডিং শুধু গৃহস্থালিতে নয়, শিল্প-কারখানাতেও মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। অনেক পোশাক ও প্লাস্টিক কারখানায় উৎপাদন বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জেনারেটর চালিয়ে উৎপাদন চালু রাখার চেষ্টা করলেও তাতে খরচ বহুগুণে বেড়ে যাচ্ছে।

আব্দুল করিম, জিনজিরা এলাকার একটি গার্মেন্টস কারখানার ব্যবস্থাপক বলেন, “প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। জেনারেটরের ডিজেল কিনতেই এখন মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। লাভ তো হচ্ছেই না, উল্টো লোকসান গুনতে হচ্ছে।”

শুধু কারখানায় নয়, অনলাইনভিত্তিক সেবাও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কোন্ডা এলাকার ফ্রিল্যান্সার সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমার সব কাজ কম্পিউটার ও ইন্টারনেটনির্ভর। বিদ্যুৎ না থাকলে নেটও থাকে না। ক্লায়েন্ট ডেলিভারি মিস হলে আয় হারাচ্ছি, রেটিং নষ্ট হচ্ছে।”

এদিকে শিক্ষার্থীরা বলছে, লোডশেডিং তাদের পড়ালেখার বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে।
সুমাইয়া আক্তার, শুভাড্যার একটি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী বলেন, “রাতেই পড়ি বেশি। কিন্তু মাঝরাতে বারবার বিদ্যুৎ চলে গেলে কিছুই করা যায় না। গরমে ঘুমানো যায় না, পড়াও হয় না।”

এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা।
আবদুল্লাহপুর বাজারের মুদি দোকানি হারুন-অর-রশিদ বলেন, “ফ্রিজে রাখা দুধ-ঘি সব নষ্ট হচ্ছে। দুপুরে ক্রেতা এলে অন্ধকারে কিছুই দেখা যায় না। বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে।”

ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এর জেনারেল ম্যানেজার খালেদুল ইসলাম জনকণ্ঠ–কে জানান, “বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতির কারণে এই সমস্যা হচ্ছে। আমরা কিছু করতে পারছি না। কবে নাগাদ সমাধান হবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।”

মো. সেন্টু মিয়া, দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের বাসিন্দা বলেন, “বিদ্যুৎ বিল ঠিকমতো নিচ্ছে, অথচ সেবা শূন্য। জবাবদিহিতা কোথায়? সব কিছুতেই উন্নয়নের গল্প, কিন্তু ঘরে আলো নাই!”

কেরাণীগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ সরকারের কাছে দ্রুত লোডশেডিং সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

ইমরান

×