
ছবি: সংগৃহীত
মাইলস্টোন স্কুলে ভয়াবহ যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনার পেছনে কারিগরি ত্রুটি নাকি পাইলটের সিদ্ধান্তজনিত ভুল—এ নিয়ে চলছে তদন্ত। তবে সাবেক সহকারী বিমানপ্রধান এয়ার কমোডর (অব.) এম শফিকুল ইসলাম এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, পাইলট ছিলেন একজন অত্যন্ত অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা। তিনি এফ-৭ সিরিজের যুদ্ধবিমানে কয়েকশ ঘণ্টা ফ্লাইট সম্পন্ন করেছেন, ছিলেন একজন প্রশিক্ষক এবং স্কোয়াড্রন কমান্ডারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ছিলেন।
শফিকুল ইসলাম বলেন, “যেদিন দুর্ঘটনা ঘটে, সেটি ছিল ঐ পাইলটের ফার্স্ট সোলো ফ্লাইট এই ধরনের বিমান দিয়ে।” তিনি ব্যাখ্যা করেন, ফার্স্ট সোলো মানে এই না যে তার এটি প্রথম ফ্লাইট; বরং এই নির্দিষ্ট বিমানের ধরনে এককভাবে প্রথম উড্ডয়ন ছিল এটি।
স্কোয়াড্রন কমান্ডার (ইন্সট্রাক্টর) নিজে তাকে ফ্লাইটের জন্য ক্লিয়ারেন্স দেন এবং রানওয়ের পাশে থাকা একটি মোবাইল হাইট পয়েন্ট থেকে সরাসরি ফ্লাইট পর্যবেক্ষণ করছিলেন। প্রথমে সবকিছু স্বাভাবিক ছিল—উড্ডয়ন, জয়েন, এমনকি ১৫০০ ফিট উচ্চতায় ফ্লাইথ্রুও সম্পন্ন হয়।
পরবর্তী পর্যায়ে টাওয়ার থেকে জানানো হয়, একটি সিভিল ট্রাফিক অবতরণ করতে যাচ্ছে—তাই তাকে পাঁচ মিনিট হোল্ড করতে বলা হয়। তিনি নির্ধারিত খোলা স্থানে হোল্ডিংয়ে ছিলেন এবং পরবর্তীতে ল্যান্ডিংয়ের জন্য ফাইনালে জয়েন করেন। তবে তখনই ইনস্ট্রাক্টর দেখতে পান, *টার্নটি লেভেল হওয়ার বদলে ক্রমাগত নিচে নামছে*, যা ছিল অস্বাভাবিক।
পাইলট এক পর্যায়ে খুব সংক্ষেপে টাওয়ারকে জানায়, “টেকনিক্যাল প্রবলেম”, কিন্তু এরপর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ভেবেছিলেন নিজেই সমস্যা সামাল দিতে পারবেন।
ইন্সট্রাক্টর যখন দেখেন, বিমানটি ইজেকশন লিমিটের নিচে চলে যাচ্ছে, তখন তিনি রেডিওতে তাকে দুইবার ইজেক্ট করার নির্দেশ দেন। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বিমানের উচ্চতা তখন এতটাই কম ছিল যে নিরাপদে প্যারাসুট খোলা সম্ভব হত না। অবশেষে বিমানটি মাটি ছুঁয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।
এয়ার কমোডর (অব.) শফিকুল ইসলাম বলেন, “বিমানে হাজার হাজার যন্ত্রাংশ থাকে, তার মধ্যে কোনো একটি সিস্টেম—বিশেষ করে হাইড্রলিক ফেলিয়র হলে কন্ট্রোল সিস্টেম অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।” এমন পরিস্থিতিতে বিমানকে যত দ্রুত সম্ভব অবতরণ করানো উচিত, যা সম্ভবত ওই পাইলট চেষ্টা করেছিলেন। তবে এক্ষেত্রে লংজিটিউডিনাল কন্ট্রোল ব্যর্থতার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, সবকিছু এখনো তদন্তাধীন। তদন্তের মাধ্যমেই জানা যাবে আসলেই কারিগরি ত্রুটি ছিল নাকি অন্য কোনো কারণ পেছনে ছিল।
সূত্র:https://youtu.be/vlMAfz5I6gY?si=UiZw3-TT91ZMtkBe
ছামিয়া