
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে সারা বিশ্বে বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। উন্নত দেশগুলো এ ক্ষেত্রে অগ্রগামী হলেও পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ। বাংলাদেশেও এখন বন্ধ্যাত্বের আধুনিক চিকিৎসা শুরু হয়েছে। এর সফলতার হারও উন্নত, বিশ্বের সমকক্ষ। এখন আর বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হবে না। সারা বিশ্বের ন্যায় ২৫ জুলাই ‘বিশ্ব আইভিএফ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় দেশের বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসা নিয়ে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন চিকিৎসকবৃন্দ।
২৫ জুলাই, শুক্রবার দিনব্যাপী ‘বিশ্ব আইভিএফ দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে নানা আয়োজন করে লুমিনা আইভিএফ। এ দিবসটি প্রতি বছর পালন করা হয় বন্ধ্যাত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য। বাংলাদেশেও এই দিবসকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকায় আয়োজন করা হয় দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি— যার মধ্যে রয়েছে র্যালি, ফ্রি স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প, সচেতনতামূলক সেমিনার এবং বিনামূল্যে চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান।
বক্তারা জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রজনন বয়সী দম্পতিদের প্রায় ১৫% বিভিন্ন ধরনের বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভুগছেন। বাংলাদেশেও এই হার ক্রমবর্ধমান। চিকিৎসকদের মতে, সামাজিক কুসংস্কার, দেরিতে বিয়ে ও সন্তান গ্রহণ, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস), পুরুষদের প্রজনন সমস্যাসহ নানা কারণ এর পেছনে দায়ী।
অনুষ্ঠানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রজনন, এন্ডোক্রিনোলজি এবং বন্ধ্যাত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফ্লোরিডা রহমান বলেন, “আমাদের সমাজে বন্ধ্যাত্বকে এখনও লজ্জার বিষয় মনে করা হয়। অথচ এটি একটি চিকিৎসাযোগ্য স্বাস্থ্য সমস্যা। সচেতনতা বাড়ানো গেলে এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে অনেক দম্পতি মাতৃত্ব ও পিতৃত্বের স্বাদ পেতে পারেন। তাই স্বল্প খরচে দেশেই উন্নত মানের চিকিৎসা সম্ভব।”
লুমিনা আইভিএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুদ হোসেন বলেন, “বাংলাদেশেই এখন আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব হয়েছে। আমরা এ দিক থেকে চ্যালেঞ্জ করতে পারি। আমাদের সফলতার হারও যেকোনো উন্নত দেশের চেয়ে কম নয়। সুতরাং সংকোচ ভেঙে আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্যের সঙ্গে চিকিৎসা করলে ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব।”
আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ ও লুমিনা আইভিএফ-এর পরামর্শক ডা. উম্মে তাহমিনা সীমা, ফাইন্যান্স ডিরেক্টর মুজাহিদ হোসেন, অপারেশন ডিরেক্টর নাজমুল আজম পলাশ, হেড অব বিজনেস মুনিরুল সালেহীনসহ আরও অনেকে।
আলোচনা সভার আগে বিশ্ব আইভিএফ দিবসের সচেতনতা নিয়ে ধানমন্ডি লেকে র্যালি হয়। র্যালির পর আয়োজন করা হয় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, যেখানে ব্লাড প্রেসার ও বিএমআই মাপা এবং সাধারণ প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য প্রদান করা হয়।
সানজানা