ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

শাহজালাল বিমানবন্দরের রানওয়ে যেন মরণ ফাঁদ!

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ২৫ জুলাই ২০২৫

শাহজালাল বিমানবন্দরের রানওয়ে যেন মরণ ফাঁদ!

ছবি: সংগৃহীত

উত্তরায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকেই দেশের বিমান ব্যবস্থাপনার সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি মাত্র রানওয়েতে একইসঙ্গে সামরিক ও বেসামরিক উড়োজাহাজ ওঠানামা করায় তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। এছাড়া কাছাকাছি হেলিকপ্টার ওঠানামাও নিয়মিত হচ্ছে। এই ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন নীতিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন।

 

 

 

সাবেক সামরিক ও বেসামরিক পাইলটরা বলছেন, স্থান সংকট ও আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে এই অনিরাপদ পদ্ধতি চালু রয়েছে। তাদের মতে, একই রানওয়েতে সামরিক ও বাণিজ্যিক বিমান চলাচল করায় যেকোনো সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এছাড়া ফ্লাইট শিডিউল এলোমেলো হওয়ার পাশাপাশি যাত্রীদের ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর্যন্ত টেকঅফের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

বিশ্বের কোথাও এমনভাবে বিমান পরিচালিত হয় না, এমন মন্তব্য করে অবসরপ্রাপ্ত পাইলটরা বলছেন, এখনই সময় এসেছে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের। যদিও শাহজালালের রানওয়েতে এখন পর্যন্ত কোনো বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি, তবে ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, বিমানবন্দর ঘিরেই গড়ে উঠেছে ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। এ কারণে যেকোনো দুর্ঘটনায় বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা থেকে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এত ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালনা করাটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এর সাথে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর মূল ঘাঁটিও, যা একে আরও অনিরাপদ করে তুলছে।

 

 

 

সাবেক সেনা পাইলট কর্নেল মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী একটি রানওয়েতে সামরিক ও বেসামরিক উড়োজাহাজ একসঙ্গে ওঠানামা করতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশে অবকাঠামোগত ও অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেখা যায়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুদ্ধবিমান চলাচলের জন্য বিকল্প পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। এ প্রসঙ্গে তারা চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে বিবেচনার পরামর্শ দেন, কারণ এটি সমুদ্রের নিকটবর্তী এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নয়।

প্রসঙ্গত, আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে শাহজালাল বিমানবন্দরকে আরিয়াল বিল এলাকায় স্থানান্তরের একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক চাপে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। এখন সময় এসেছে সেই পুরনো পরিকল্পনাটি নতুন করে ভাবার।

ছামিয়া

×