
ছবি: সংগৃহীত
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার একটি মামলাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, চলতি বছরের জুলাই মাসের একটি অভ্যর্থনা সংক্রান্ত মামলার আসামিদের তালিকা থেকে আওয়ামী লীগপন্থী নেতাদের বাদ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) চিঠি দিয়েছে ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সমর্থক। সেই কারণে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হচ্ছে। তবে এই চিঠির পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক। নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলছেন—তবে কি নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখছে বিএনপি? নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোন রাজনৈতিক সমঝোতা বা কৌশল?
ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসটিএম ফখরুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মিসবার স্বাক্ষরিত চিঠিতে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তে দেখা গেছে, তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
বিশেষ করে তালিকার ৭ নম্বরে থাকা সাইদুর রহমান পিন্টু সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সদস্য এবং ১১ নম্বরে থাকা আমির আলী স্থানীয় যুবলীগ নেতা। অন্যরাও বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগ, যুবলীগ বা আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ও সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দৈনিক সমকালীর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসটিএমএ ফখরুদ্দিন শুরুতে জানান, তিনি চিঠি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। পরে যখন তার স্বাক্ষরের কথা বলা হয়, তখন তিনি দায় চাপান সাধারণ সম্পাদকের ওপর। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মিসবার দাবি করেন, এই ধরনের কোনো চিঠি তারা দেননি।
এই বিষয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এভাবে মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন করা আইনসম্মত নয়। তিনি আরও জানান, আবেদনে কারা স্বাক্ষর করেছেন, সেটি যাচাই করা হচ্ছে। তবে চিঠিতে যাদের বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, তাদের বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও তিনি স্পষ্টভাবে জানান।
এই ঘটনার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে জোরালো আলোচনা। বিএনপির পক্ষ থেকে এমন চিঠি পাঠানো ও তাতে আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে তাদের "বিএনপি সমর্থক" হিসেবে দাবি করা—এটি কতটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা বিভ্রান্তিকর, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেউ কেউ এটিকে স্থানীয় রাজনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট জটিলতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন।
সূত্র:https://youtu.be/TYjHEcOPZtc?si=8wVsi8S6grtNFtnO
ছামিয়া