
.
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ব্রেটিও ইনডেক্স বা বিআই (বাড়িভিত্তিক এডিস মশার ঘনত্ব) অনুসারে চট্টগ্রাম নগরীর ছয়টি এলাকায় এডিস মশার উপস্থিতি অধিক মাত্রায় পাওয়া গেছে। যা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা রোগের জন্য ‘উচ্চ ঝুঁকির’ বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। ইনডেক্স অনুযায়ী বাড়িভিত্তিক এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব ২০-এর বেশি হলে এলাকাটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত করা হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার ছয় এলাকায় বিআই ৩৩ থেকে সর্বোচ্চ ১৩৪ দশমিক ৬২ পাওয়া যায়। এ ছাড়া লার্ভার নমুনা বিশ্লেষণে এডিস মশার এজিপ্টা প্রজাতি পাওয়া গেছে ৬৫ শতাংশ। যা জিকা, চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গুর জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ।
আইইডিসিআর (রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ, গবেষণা ইনস্টিটিউট) চট্টগ্রাম নগরী চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গু ও জিকা রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ১২ থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত আইইডিসিআরের রোগতত্ত্ববিদ ডা. মো. ওমর কাইয়ুমের নেতৃত্বে এ জরিপ ও গবেষণা হয়। গবেষকেরা সিটি করপোরেশনের চট্টেশ^রী সড়ক, ওআর নিজাম রোড, পাহাড়তলী, হালিশহর ও ঝাউতলা এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে মশার লার্ভা এবং রোগীর নমুনা সংগ্রহ করেন। একইসঙ্গে নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল ও রোগ নির্ণয়কেন্দ্র থেকেও তথ্য সংগ্রহ করেন। উক্ত এলাকার ১২৮টি বাড়ি পরিদর্শন করা হয়। যার মধ্যে ৬২টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এসব বাড়িতে উচ্চ ঝুঁকির ইনডেক্স শনাক্ত হয়। বাড়িগুলোতে এবং এলাকা থেকে সংগ্রহ করা মশার লার্ভা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এসবের এডিস এজিপ্টা, এডিস এলবোপিকটাসের পাশাপাশি জিকা রোগের উচ্চ ঝুঁকিও আছে।
আইইডিসিআরের গবেষকেরা জানান, ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়া তিন রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকাগুলো। পাশাপাশি নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় এসব রোগের বিস্তার রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। গবেষণায় নিয়োজিতরা জানিয়েছেন, এডিস এজিপ্টা মশার মাধ্যমেই মূলত জিকা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া হয়ে থাকে। আক্রান্ত রোগীদের লক্ষণ বিবেচনায় দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে দ্রুত মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে জনগণের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার সুপারিশ করে গবেষক দল।
চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, মশার ঘনত্ব অনুযায়ী বিআই উচ্চ মাত্রার, এ কারণে চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু বেশি হওয়ার আশঙ্কা। প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী মশক নিধন ও নিয়ন্ত্রণে ওষুধ ছিটাতে করপোরেশনকে বলা হয়েছে। ওয়ার্ড পর্যায়ে স্বাস্থ্য সহকারীরা সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছে। নগরীকেও সচেতন হতে হবে। ফুলের টব ও পরিত্যক্ত পাত্রে যাতে পানি না জমে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
প্যানেল