ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২

অ্যাডহক কমিটির নিয়োগের এখতিয়ার নেই ॥ শিক্ষা বোর্ড

মনিপুর স্কুলে বিধি ভেঙে শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ

জনকণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০০:১৩, ২৪ জুলাই ২০২৫

মনিপুর স্কুলে বিধি ভেঙে শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ

মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে

রাজধানীর অন্যতম আলোচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যা নিয়ে জোর বিতর্ক উঠেছে সংশ্লিষ্ট মহলে। বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অ্যাডহক কমিটি প্রচলিত আইন ও শিক্ষা বোর্ডের স্পষ্ট নির্দেশনা উপেক্ষা করে পত্রিকায় শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। যা নিয়ে ক্ষোভ ও প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা। 
জানা গেছে, বর্তমানে মনিপুর স্কুল পরিচালনা করছে একটি অ্যাডহক কমিটি, যার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক তাহমিনা আক্তার। গত ৩০ এপ্রিল ঢাকা শিক্ষা বোর্ড তাকে এই দায়িত্ব দেয়। তিনি মূলত এই নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন, যা এখতিয়ার বহির্ভূত। 
শিক্ষা বোর্ডের প্রণীত প্রবিধান অনুযায়ী, কোনো অ্যাডহক কমিটির শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের এখতিয়ার নেই। এ সংক্রান্ত সরকারি বিধানে স্পষ্ট করে বলছে, ‘অ্যাডহক কমিটি কোনো অবস্থাতেই অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সুপারিনটেনডেন্ট, সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট, গ্রন্থাগারিক, সহকারী গ্রন্থাগারিক বা অন্য কোনো কর্মচারী বাছাই ও নিয়োগ করতে পারবে না। তবে শর্ত হচ্ছে, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের তালিকাভুক্ত কোনো প্রার্থী সুপারিশপ্রাপ্ত হলে কেবল তাকে নিয়োগ দেওয়া যাবে।’
এ বাস্তবতা উপেক্ষা করে মনিপুর স্কুলের অ্যাডহক কমিটি সম্প্রতি পত্রিকায় শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলা মিডিয়ামে ৭ জন, ইংরেজি ভার্সনে ৫ জন সহকারী শিক্ষক, কলেজ শাখায় ৩ জন শিক্ষক, ল্যাব সহকারী ২ জন ও কম্পিউটার ল্যাব সহকারী ৬ জন নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ২০ জুলাইয়ের মধ্যে আবেদন করতে বলা হয়েছে এবং লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে ২৬ জুলাই।
স্কুলের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মনিপুর স্কুলে বর্তমানে কোনো শিক্ষক সংকট নেই। বরং গত কয়েক বছরে ফলের অবনতি ও নানা অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে শিক্ষার্থী সংখ্যা ক্রমেই কমছে। সে অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যায়ও উল্লেখযোগ্য কোনো ঘাটতি নেই। তবুও স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে অভিভাবকরা অভিযোগ তুলেছেন। অভিভাবকরা বলছেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়ন নয়, বরং কিছু স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের সুবিধা আদায়ের জন্যই নিয়মবহির্ভূত এই নিয়োগের চেষ্টা করছে। তারা এ ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
এ বিষয়ে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তাহমিনা আক্তার জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা শিক্ষা বোর্ডের কাছে এ বিষয়ে আবেদন করেছি। তারা অনুমতি দিলে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করবো। এর আগে আমরা এটি আপাতত বন্ধ রেখেছি। কিন্তু অ্যাডহক কমিটি কোনো ধরনের নিয়োগ দিতে পারে কী না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এই স্কুলে অনেকবার অ্যাডহক কমিটি নিয়োগ দিয়েছে। অনেক শিক্ষক অবসরে গেছেন যে কারণে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

প্যানেল হু

×