
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। বুধবার পর্যন্ত একে একে ৩২টি তাজা প্রাণ ঝরে গেছে। বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছে আরও ১৬৪ জন। এরমধ্যে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছে ৭৮ জন। এদের মধ্যে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ৮ জন। অন্যরাও শঙ্কামুক্ত নয়। নিহত ও আহতদের অধিকাংশই শিশু। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন খোদ চিকিৎসকরাই। মঙ্গলবার রাত সোয়া ১২টার দিকে সর্বশেষ মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয় আরিয়ান আশরাফ নাফি (৯) নামে এক স্কুলছাত্র।
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আগের রাতে তার বোন নাজিয়াও না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। এদিকে অশনাক্ত ৬ লাশের দাবিদার ১১ জনের ডিএনএ সংগ্রহ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অপরদিকে সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা দল কাজ শুরু করেছেন। তারা বার্ন ইউনিটে রোগীদের দেখেছেন।
বুধবার সকাল থেকে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনে ছিল সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যদের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী। ফলে সেখানে সাংবাদিক, রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সাধারণ মানুষকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকি দগ্ধ শিশুদের ক্ষতস্থানে যাতে কোনো ধরনের সংক্রমণ না ছড়ায়, সেজন্য স্বজনদের প্রবেশ সীমিত করে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক নাসির উদ্দীন বলেন, যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে দগ্ধদের মধ্যে আপাতত কাউকেই দেশের বাইরে নেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক দল আরও কয়েকদিন এ রোগীদের পর্যবেক্ষণ করবেন।
বুধবার বিকেলে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক ইউনিটে এক সংবাদ সম্মেলনে ইনস্টিটিউটের পরিচালক জানান, এখন পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় বার্ন ইনস্টিটিউটে ৪৪ জন রোগী ভর্তি আছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক দলের সঙ্গে তাদের চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে প্রতিটি রোগীর বিষয়ে আলাদা আলাদাভাবে পর্যালোচনা হয়েছে।
তারাও গুরুত্বপূর্ণ ডিসিশন দিয়েছেন। তিনি জানান, বৈঠকে রোগীদের অবস্থা পর্যালোচনা করে ৩টি ভাগ করেছি। এখানে ক্রিটিক্যাল ক্যাটাগরিতে ৮ জন রোগী আছে। তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। তাদের অবস্থা ঘণ্টায় ঘণ্টায় পরিবর্তন হচ্ছে। তাদের বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। সিভিয়ার ক্যাটাগরিতে আছে ১৩ জন রোগী। ইন্টারমেডিয়েট ক্যাটাগরিতে আছে ২৩। তাদের দ্রুত ভালোর দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
অধ্যাপক ডা. মো. নাসির উদ্দিন জানান, রোগীদের এই তিন ক্যাটাগরি আমাদের ডায়নামিক প্রসেস। রোগীদের অবস্থাভেদে এসব ক্যাটাগরি পরিবর্তন হতে পারে। সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে এ ক্যাটাগরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের এখানকার প্রত্যেক রোগী নিয়ে আলোচনা করেছি। কারও অপারেশন লাগবে কি না, কার কি পরিমাণ ড্রেসিং লাগবে, ওষুধ পরিবর্তন হবে কি না; সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধি কতদিন থাকবে, এটা এখনো ঠিক হয়নি। তারা কতদিন থাকতে চায়। সেটা পরে জানাব। এখন পর্যন্ত ওষুধ ও চিকিৎসা উপকরণের কোনো সংকট নেই বলেও জানান তিনি।
এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানান, সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রায় বেশ কিছু জায়গায় তিনি আমাদের সঙ্গে একমত। কিছু বিষয়ে তিনি আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন। আমেরিকাও আমাদের সহযোগিতা করতে চাচ্ছে। সবার পরামর্শ নেওয়া হবে। সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট চং সি জ্যাক।
ভারত থেকে চিকিৎসক আনা হবে কি না জানতে চাইলে ইনস্টিটিউটে পরিচালক জানান, এ বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দেখভাল করছেন। আমাদের দেশের যেসব চিকিৎসক বাইরে আছে তারাও আমাদের পরামর্শ দিচ্ছেন। আমরা সবার পরামর্শ নিচ্ছি। বাচ্চাদের বিষয় কোনো ইগোস্টিক বিষয় নাই। যে কারও পরামর্শ নিয়ে যদি বাচ্চারা ভালো হয় আমরা পরামর্শ নেব। এখন পর্যন্ত বার্ন ইনস্টিটিউটে ১১ জন মারা গেছেন বলেন জানান পরিচালক। আর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
১১ জনের ডিএনএ সংগ্রহ ॥ যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বিকৃত হয়ে যাওয়া ৬টি মরদেহ শনাক্তে ১১টি ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এসব মরদেহের বিপরীতে ১১ দাবিদারের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত এই নমুনা সংগ্রহ করা হয় বলে জানান সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) শম্পা ইয়াসমিন।
এসপি শম্পা জানান, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে থাকা ছয় মরদেহ বা দেহাবশেষ থেকে ১১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর বিপরীতে সিআইডিতে এসে এখন পর্যন্ত ১১ জন দাবিদার তাদের রক্তের নমুনা দিয়ে গেছেন। এদের মধ্যে এক পরিবারের একাধিক ব্যক্তিও রয়েছেন।
এদিকে এই ঘটনায় নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যদের মালিবাগে সিআইডি ভবনে ডিএনএ ম্যাচিংয়ের জন্য নমুনা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে সরকার। বুধবার সরকারি তথ্য বিবরণীতে এই অনুরোধ জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের প্রকাশিত তালিকায় যাদের সন্তান বা স্বজনের নাম নেই, সেসব পরিবারের সদস্যদের মালিবাগে সিআইডি ভবনে ডিএনএ ম্যাচিংয়ের জন্য নমুনা প্রদানের অনুরোধ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী ডা. মো. সায়েদুর রহমান এ অনুরোধ জানিয়েছেন।
এতে আরও বলা হয়, সিএমএইচের মর্গে রাখা ছয়টি মৃতদেহ এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে ইতোমধ্যে মৃতদেহগুলোর ডিএনএ অ্যানালাইসিসের (প্রোফাইলিং) জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, যা সিআইডির ল্যাবরেটরিতে ডিএনএ প্রোফাইলিং করা হবে। নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যদের নমুনা পাওয়া গেলে সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই ডিএনএ ম্যাচিংয়ের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করা হবে।
হতাহতের সর্বশেষ যে তথ্য মিলল ॥ হতাহতের সংখ্যা নিয়ে সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল হোসেন। তার সই করা এক পরিসংখ্যানের তথ্যের বরাতে দিয়ে বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধান উপদেষ্টার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব ফয়েজ আহম্মদ। তিনি জানিয়েছেন, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বুধবার দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ জনে। এ ছাড়া জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন ৬৯ জন।
পরিসংখ্যান বলছে, নিহত ২৯ জনের মধ্যে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ১১ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১৫ জন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একজন, লুবানা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে একজন (পরিচয় জানা যায়নি) ও ইউনাইটেড হাসপাতালে একজন মারা গেছেন।
এতে বলা হয়েছে, অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে বর্তমানে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ৪৪ জন, সিএমএইচে ২১ জন, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে একজন, শহীদ মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একজন, উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একজন ও হিউম্যান এইড রিসার্চ ল্যাব অ্যান্ড হাসপাতালে একজন চিকিৎসাধীন আছেন।
ডা. আবু হোসেনের পরিসংখ্যান মোতাবেক, জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে মারা যাওয়া ১১ জন হলেন-তানভীর (১৪), আদনান ফাইয়াজ (১৪), মাহেরীন (৪৬), বাপ্পি (৯), মাসুকা (৩৭), এবি শামীম (১৪), শায়ান ইউসুফ (১৪), এরিকসন (১৩), আরিয়ান (১৩), নাজিয়া (১৩) ও নাফি (৯)।
সিএমএইচে মৃত ১৫ জন হলেন- রজনী ইসলাম (৩৭), এমডি সামিউল করিম (৯), ফাতেমা আক্তার (৯), মেহেনাজ আফরিন হুমায়রা (৯), সারিয়া আক্তার (১৩), নুসরাত জাহান আনিকা (১০), সাদ সালাউদ্দিন (৯) ও সায়মা আক্তার (৯)। তাদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ছাড়া বিধ্বস্ত বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের মরদেহ এরই মধ্যে সমাহিত করা হয়েছে। ওই হাসপাতালে মারা যাওয়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৬ জন রয়েছেন। এ ছয়জনের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গ থেকে ৯ বছরের শিশু জুনায়েতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। লুবানা জেনারেল হাসপাতালে অজ্ঞাতপরিচয় (বয়স উল্লেখ নেই) একজনের মরদেহ রয়েছে। গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে উমায়ের নূর আসফিক নামে ১১ বছর বয়সী এক শিশুর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬৯ জনের মধ্যে পাঁচজন শিক্ষক, ৪১ জন শিক্ষার্থী, একজন স্কুল স্টাফ, একজন ফায়ার ফাইটার, একজন পুলিশ, ১৪ জন সেনাসদস্য, একজন আয়া, একজন ইলেকট্রিশিয়ান ও অন্যান্য চারজন রয়েছেন।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৪৪ জনের মধ্যে ৩৫ জন শিক্ষার্থী, চারজন শিক্ষক, একজন ইলেকট্রিশিয়ান ও একজন আয়া রয়েছেন। অপর তিনজনের পরিচয় জানা যায়নি।
আহতদের মধ্যে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে বর্তমানে আটজন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা হলেন- মাহাতাব (১৪), মাসুমা (৩২), আইয়ান (১৪), মাহিয়া (১৫), জারিফ (১২), শিক্ষিকা মাহফুজা খাতুন (৪৫), নাবিদ নাওয়াজ (১২) ও সাইমন (১৮)।
সেখানে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ২১ জন হচ্ছেন- তাসনুবা মাহবিন (১১), ফারজানা ইয়াসমিন (৪৫), তাসনিয়া (১০), শ্রেয়া (৯), রাইসা (১১), পায়েল (১২), শিক্ষিকা নিশি (২৮), নুসরাত (১২), তৌফিক (১৩), ইউসা (১১), জাকির (৫৫), সায়েবা (৯), আলবিনা (১০), মুনতাহা (১০), রুপি বড়ুয়া (১০), জায়ানা (১৩), নিলয় (১৩), শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম (৩৭), শিক্ষিকা সুমাইয়া লরিন (৩০), লরিন কাব্য (১৩) ও কাফী আহমেদ (১০)।
এছাড়া আহত পুরুষদের মধ্যে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন মাকিন (১৫), আরিয়ান আফিফ (১২), রোহান (১৪), রাইয়ান (১৪) ও আবিদুর রহমান (১০)।
এই ইউনিটে নারীদের মধ্যে আছেন-সামিয়া (৯), সাইবা জাহান (১০), তাসনিয়া (১৫), মেহেরিন (১১), আইমান (১০), সায়রা (১০), সবুজা বেগম (৪০) ও হাফসা খান (১১)। আয়ান খান (১২) ও কাজী আমজাদ সাঈদ (২০) নামে দুজন জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৮ জনের মধ্যে পাঁচজনকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। দুজনকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে ২১ জন চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে শিক্ষার্থী ৩ জন, শিক্ষক ১ জন, স্কুল স্টাফ ১ জন, ফায়ার সার্ভিস কর্মী ১ জন, পুলিশ ১ জন ও সেনাসদস্য ১৪ জন।
সিএমএইচে বার্ন আইসিইউতে আছেন চারজন। তারা হচ্ছেন- আকিব (১২), আনোয়ার (৩৪), আতিক (২১) ও বিল্লাল হোসেন (১২)।
এছাড়াও অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন- আহসান (৪৫), হাবিবুল্লাহ (২৪), আব্দুল্লাহ (২৪), মুত্তাকিন (২৪), শাকিল (২৬), নাফিস (২২), হযরত (২২), মানিক (৪৬), সোহাগ (২৭), ফারহান শাফি (১৭), কামরুজ্জামান (২৫), শাহরিয়ার (২৪), রাকিবুল (২৩), বাবুল (২২), রবিউল (২২), কামাল (২১) ও তাহসান (২৪)।
অগ্নিদগ্ধদের অন্যদের মধ্যে বর্তমানে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে জান্নাতুল মাওয়া নামে ১১ বছরের এক শিশু ও শহীদ মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মেহুরুন্নেসা নামে ১৪ বছরের এক শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন একজন। তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। হিউম্যান এইড রিসার্চ ল্যাব অ্যান্ড হাসপাতালে তাকরিম হক নামে ১৬ বছরের এক শিশু আইসিইউতে আছে।
২২ লাশ হস্তান্তর ॥ বুধবার রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, নিহতদের মধ্যে ২২ জনের পরিচয় শনাক্ত করে ইতোমধ্যে তাদের পরিবার ও আত্মীয়দের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া ৬ জনের মরদেহ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে এবং অজ্ঞাত ১ জনের মরদেহ লুবানা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারের মর্গে সংরক্ষিত আছে। এ মরদেহগুলো তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম চলমান আছে।
ভারতের চিকিৎসক দল ঢাকায় ॥ রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধদের চিকিৎসায় রাতে ঢাকায় এসে পৌছেছে ভারতের একটি বিশেষজ্ঞ দল। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। জানা যায়, এই বিশেষজ্ঞ দলে দুইজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং দুইজন অভিজ্ঞ নার্স রয়েছে। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, রাতে ঢাকায় পৌঁছেই তারা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যোগ দেন।
প্যানেল হু