
স্কুল-কলেজ শির্ক্ষাথীদের চলাচলে দুর্ভোগ
পটুয়াখালীর বাউফল-দশমিনা উপজেলার সীমানায় বাঁশবাড়িয়া বগী বাজার খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের প্রায় ৫ বছর গত হলেও নির্মাণ করা হয়নি ব্রিজের সংযোগ সড়ক। এতে ভোগান্তিতে রয়েছেন দুই উপজেলার চলাচলরত অন্তত অর্ধলাখ মানুষ। এ ছাড়াও খালের উভয় দিকের চলাচলরত মানুষ ও আশপাশের স্কুল কলেজের কোমলমতি শির্ক্ষাথীদের দুর্ভোগ চরমে। দ্রুতই সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীসহ ভুক্তভোগীরা।
পটুয়াখালী এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালীর দশমিনা-বাউফল উপজেলার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরবিচ্ছিন্ন করতে ২০১৯-২০২০ সালে দরপত্র আহ্বান করে সেতুটির কার্যাদেশ দেওয়া হয় মেসার্স আবুল কালাম আজাদ এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। দরপত্রের চুক্তি অনুযায়ী ২০২১ সালে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। বাশবাড়িয়া ইউপির গছানি জিসি বগি বাজার সড়কে আরসিসি গার্ডার ব্রিজ যার দৈর্ঘ্য ২৪ মিটার ও প্রস্থ সাড়ে ৭ মিটার। ব্রিজটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কেটি ৮২ লাখ ১০ হাজার ৫০৬ টাকা। বগী বাজার খালের দুই পাড়ে রয়েছে অন্তত ১১টি গ্রাম।
সরেজমিনে দেখা যায়, দশমিনা-বাউফল সীমান্তবর্তী বগী বাজার খালের ওপর সেতু নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ। বাকি আছে রংকরণ ও সংযোগ সড়কের কাজ। খালের গভীরতা এবং ট্রলার চলাচলের জন্য পুরানো রাস্তা থেকে নির্মাণাধীন সেতুটি অনেক উঁচু। তাই সেখান থেকে রাস্তার সংযোগ স্থাপনের জন্য কিছু সিসি স্ল্যাব বসিয়ে কোনো রকম পারাপার হচ্ছে চলাচলরত মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, এর আগে লোহার সেতু (আয়রন ব্রিজ) ছিল। লোহার কাঠামোর ওপর সিমেন্টের স্ল্যাব ছিল। ২০১৯-২০২০ সালে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য পুরানো সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়। চলাচলের জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এর পর থেকেই চলাচলরত মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
কর্পূরকাঠী ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা কত যে কষ্টে আছি তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। ব্রিজ করে ফেলে রেখেছে, কিন্তু দুই পাশের সংযোগ সড়কটা করছেনা অনেক বছর। ব্রিজে উঠতে নামতে আমাদের খুব সমস্যা হয়। বর্ষা মৌসুম বৃষ্টিতে কাদা-মাটিতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।
বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের কর্পূরকাঠী ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি ঘোষ বলেন, ব্রিজের সংযোগ সড়ক না থাকায় আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ ছাড়াও এ ব্রিজ পারাপারে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি অনতিবিলম্বে সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি ঘটে। তিনি আরও বলেন, এর আগেও কর্তৃপক্ষসহ জনপ্রতিনিধিদের কাছে বহুবার ধর্ণা ধরেছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। চলতি বর্ষা মৌসুমে এ ব্রিজ থেকে যাতায়াত করা শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে।
বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউয়িন পরিষদের সাবেক সদস্য ও ব্রিজের পশ্চিম পাশের বাসিন্দা মোয়াজ্জেম হোসেন বাদল জানান, প্রায় সময় এখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। আমরা বয়স্ক ও রোগী এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাত ধরে পার করে দেই।
দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করেন। বিষয়টি নিয়ে বহুবার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কোনো লাভ হয়নি।
পটুয়াখালী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন আলী মীর জানান, ভূমি অধিগ্রহনের মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে মামলা সংক্রান্ত জটিলতা না থাকলেও সংযোগ সংড়ক নির্মাণ করতে গেলে স্থানীয়দের দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
স্থানীয়দের দোকানপাট রক্ষার জন্য সংযোগ সড়কটি নতুন করে ডিজাইন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। ডিজাইনের কাজ চলছে। শেষ হওয়া স্বাপেক্ষে টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ শুরু করতে হবে।
প্যানেল হু