
ছবি: জনকণ্ঠ
চমৎকার ভাবে মাদ্রাসার পুরো আঙ্গিনা জুড়ে করা হয়েছে দেশীয় প্রজাতির সকল ধরনের সবজির চাষ। মাদ্রাসার মুল ফটক থেকে দুই ধারে সারিবদ্ধভাবে ব্যাগিং পদ্ধতিতে করা হয়েছে আদারও চাষ। ফসলের যেন ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্য তারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে পুরো বাগানটি। বাগানে রয়েছে লেবু, কাঁচা মরিচ, ঢেড়শ, পেঁপে, পুঁইশাক, বেগুন, ডাটা, পেয়ারা, লাল শাক, কলমি শাক, আঁখ গাছ সহ বিভিন্ন সবজির গাছ।
শিক্ষকদের নির্দেশে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজ হাতে বাগান পরিচর্যা করে থাকেন। ইতোমধ্যে মাদ্রাসার বাগানের গাছে ফলন আসতে শুরু করেছে। বাগানের এসব ফল, সবজি দেখে ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্ছ্বসিত। অভিভাবকসহ দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে এ পুষ্টি বাগানটিতে। রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার ৬নং, মাড়িয়া ইউনিয়নের জয় কৃষ্ণপুর (মোহাম্মাদীয়া) গ্রামের মাদ্রাসায়ে মোহাম্মাদীয়া মাদ্রাসার সবজি বাগানের এমন সুন্দর দৃশ্য। জানা যায়, দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি অফিসারের দিক নির্দেশনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: আরশাদ আলীর তত্ত্বাবধানে গত এপ্রিলের শুরুতে এ পুষ্টি বাগানটি স্থাপন করা হয়। সবজির এবাগানে একদিকে যেমন শিক্ষার্থীরা প্রকৃতির কাছাকাছি আসার সুযোগ পাচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে নিজেদের উৎপাদিত বিষ মুক্ত সবজি খেয়ে তারা স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করতে পারবে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের এই ধরনের উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা এবং দায়িত্ববোধ তৈরিতে সাহায্য করবে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ব্যাগিং পদ্ধতির মাধ্যমে প্রায় ৫০০ ব্যাগে আদার চাষ করা হয়েছে। মাদ্রাসার দক্ষিণ আঙ্গিনায় নানান ধরনের সবজি চাষ করা হয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষকদের পরামর্শে শিক্ষার্থীরা বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। অনেক গাছে ফলনও এসেছে। দেখে মনে হচ্ছে যেন এ এক ব্যতিক্রম উদ্যোগ। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আরশাদ আলী বলেন, কয়েকমাস আগে প্রথমে আমরা কোন কোন জায়গায় সবজি চাষ করা হবে, তার একটি সঠিক পরিকল্পনা তৈরী করি। এরপর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে পুষ্টি বাগান করা হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা সবজি বাগানে এসে প্রতিনিয়ত পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়া মাদ্রাসার বাচ্চারা নিজের হাতে গাছ লাগানো এবং পরিচর্যা করা শিখছে। অনেক মানুষ আমাদের সবজি বাগান দেখে উৎসাহী।
দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার সাহানা পারভীন লাবনী জানান, বিষমুক্ত সবজি চাষের মাধ্যমে সুস্থ এবং পরিবেশ-বান্ধব পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব তারই একটি উদাহরণ মাদ্রাসার আঙ্গিনায় গড়ে তোলা বাগানটি। আমরা সেখানে নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করছি। এই বাগানের উৎপাদন হয়তো সীমিত হবে। তবে এর বার্তা সুদূর প্রসারী। তিনি বলেন, আমাদের অনেকের বাসা বাড়িতে অনাবাদি জমি পতিত অবস্থায় থাকে, ব্যবহার হয় না। আমি আশাবাদী মাদ্রাসার বাগানটি দেখলে অনেকে আঙ্গিনায় সবজি চাষে উৎসাহী হবে।
সাব্বির