
ঢাকায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে বহু প্রাণহানির ঘটনায় শুধু দেশের গণমাধ্যমই নয়, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোও বিষয়টি ফলাও করে প্রচার করেছে। বিবিসি, সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমস, আলজাজিরা, রয়টার্স, ইন্ডিয়া টুডে, গালফ নিউজ ও দ্য স্টারসহ প্রায় সব শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ঘটনাটিকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সময় স্কুল ভবনে চার থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছিল। আগুনে পুড়ে বহু শিক্ষার্থী ও অভিভাবক গুরুতর দগ্ধ হন। এক শিক্ষক মাসুদ তারিক বিবিসিকে বলেন, “আমি পেছনে তাকিয়ে শুধু ধোঁয়া আর আগুন দেখতে পাই।” একই অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও।
রয়টার্স সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, রাজধানী ঢাকার একটি স্কুল-কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ১৯ জন নিহত এবং ১৬৪ জন আহত হয়েছেন।
নিউইয়র্ক টাইমস উল্লেখ করে, বিমানটি যখন আঘাত হানে, তখন স্কুলের দ্বিতীয় তলায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুনে জ্বলতে থাকা বিমানটির জানালা ভেঙে ছাই হয়ে যেতে দেখেছেন তারা। আহতদের দ্রুত বার্লিনসহ বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সিএনএন জানায়, দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ রক্ত দিতে ছুটে আসে। স্কুলের আশপাশে জড়ো হন হাজারো মানুষ—কেউ নিখোঁজ সন্তানদের খোঁজে, কেউ বা আত্মীয়ের দগ্ধ মুখ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আলজাজিরা জানায়, তৃতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আহতদের অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন।
ভারতের ইন্ডিয়া টুডে উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বহরে থাকা চীনের তৈরি একটি এফ-সেভেন যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণ মহড়ার সময় বিধ্বস্ত হয়। এতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বহু শিক্ষার্থী হতাহত হন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের গালফ নিউজ ও মালয়েশিয়ার দ্য স্টার একইভাবে দুর্ঘটনার ভয়াবহতা ও নিহত-আহতদের সংখ্যা তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এখন শুধু বাংলাদেশের নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও গভীর বেদনার সঞ্চার করেছে।
Jahan