ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

জুলাই শহীদ দিবস নিয়ে রাবিপ্রবিয়ানদের ভাবনা

রাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ

প্রকাশিত: ১৮:১৬, ১৬ জুলাই ২০২৫

জুলাই শহীদ দিবস নিয়ে রাবিপ্রবিয়ানদের ভাবনা

ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ

‘জুলাই শহীদ দিবস’ উপলক্ষে ১৬ জুলাই রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এদিকে জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহন করেছে রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাবিপ্রবি)। 'জুলাই শহীদ দিবস' নিয়ে রাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন রাবিপ্রবি প্রতিবেদক।

জুলাই এর স্মৃতিচারণ করে সিএসই বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ওবাইদুল হাসান ইমন বলেন, "১৬ জুলাই, বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বেদনাবিধুর দিন, যা আমরা জুলাই শহীদ দিবস হিসেবে স্মরণ করি। এই দিনে যারা অন্যায়, অবিচার এবং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।আমি মনে করি, এই শহীদ দিবস শুধুমাত্র শোক প্রকাশের দিন নয়, বরং এটা আমাদের জন্য একটি শিক্ষা ও প্রেরণার উৎস। শহীদরা তাঁদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ় থাকতে হয়, কীভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হয়, এবং কীভাবে দেশের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে হয়।

তিনি আরো বলেন, "আজকের প্রজন্মের জন্য এই দিবসটি একটি গুরুত্ববহ বার্তা বহন করে—আমাদের উচিত শহীদদের আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করে সমাজে সত্য, ন্যায় এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা। আমরা যদি শহীদদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি এবং তাঁদের দেখানো পথ অনুসরণ করি তবেই তাঁদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।জুলাই শহীদ দিবস আমার কাছে শুধু ইতিহাসের একটি দিন নয়, এটি একটি চেতনা, একটি দায়িত্ব, একটি অনুপ্রেরণা,যা আমাকে ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে এবং ভালো মানুষ হতে উৎসাহিত করে।"

সিএসই বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী তাসফিক সিকদার কৌশিক বলেন, জুলাই — এক ঐশ্বরিক নিয়ামত, আসমানি বিজয় আমার জন্য, আমাদের জন্য। যে মাসে আমার মতো নামাজে অনিয়মিত ব্যাক্তির গভীর রাত কেটেছে নিস্তব্ধতায়, তাহাজ্জুদে অশ্রু ঝরে পড়েছিলো মৌন মাটির বুকে। এ মাস— মন থেকে দেশত্যাগের চিন্তা মুছে ফেলে, জাগায় জন্মভূমির প্রতি নিঃস্বার্থ প্রেম, চেতনার আগুনে পুড়িয়ে দেয় স্বার্থপরতা আর নিস্পৃহতা। পড়ার টেবিল ছেড়ে রাজপথে নামে যুবক-যুবতী, হাতে পতাকা, কণ্ঠে বজ্রসঙ্কল্পের স্লোগান— আকাশ ভারী হয়ে ওঠে বিপ্লবের বজ্রনিনাদে। 

তিনি আরো বলেন, এই মাস আমার কাছে শুধুই সময়ের একটি পর্ব নয়— এ যেন এক জীবন্ত ইতিহাস; যেখানে মিশে আছে আবেগের উত্তাল ঢেউ, শ্রদ্ধার নিঃশব্দ প্রণতি, হারানোর হাহাকার আর প্রাপ্তির অপার বিস্ময়। আজ সেই পবিত্র জুলাইয়ের এক বছর পূর্তিতে— যাঁরা আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বপ্নের জন্য, সত্যের জন্য সংগ্রামে নেমেছিলেন, সকল শ্রেণি-পেশার সেই অদম্য মানুষদের জানাই গভীর বিপ্লবী সালাম, আর বিজয়ের পবিত্র মোবারকবাদ। সবচেয়ে বড় কৃতজ্ঞতা— সেই মহান খোদা তায়ালার প্রতি, যিনি আমাদের জুলাই কে করেছেন শাশ্বত, দিয়েছেন বিজয়, সম্মান আর অবিনাশী আশা। তাঁর দয়ার ছায়ায় আমরা নতশিরে রাখি “কৃতজ্ঞতা-ভেজা” সিজদা।

সিএসই বিভাগের ১ম বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী মো: আম্মার বিন ইসলাম ফাহিম বলেন, একটি দেশের শহিদরা হলেন ওই দেশের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ। তাঁদের সম্মান করা আমাদের কর্তব্য। আওয়ামী লীগ নামের শোষকদের থেকে আমাদের মুক্তি দিতে, যে সকল মানুষ নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন, সেই সকল জুলাই শহিদদের ভুলে গেলে  আমাদের এই নতুন বাংলাদেশ কখনোই মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। তাদের সম্মান জানানোর জন্যই এই  'জুলাই শহিদ দিবস'। জুলাইয়ের চেতনা যেন আমরা সর্বদা মনে রাখতে পারি, এটাই হোক এই দিবস পালনের উদ্দেশ্য।

ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী পৃথি ভট্টাচার্য বলেন, জুলাই বিপ্লব কোনো সাধারণ আন্দোলন ছিল না। এটা ছিল গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম। জুলাই বিপ্লব আমাদের শিখিয়েছে যদি আমরা এক হই, তাহলে বড় বড় শাসকও কেঁপে ওঠে। এটি ছিল মেধা, ন্যায়, আর মানুষের সম্মানের লড়াই। আমরা হারিনি,আমরা জিতেছি। 

তিনি আরো বলেন, জুলাই আমাদের স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেয়, এবং ভবিষ্যৎকে শক্তিশালী গণতন্ত্রের ভিত্তিতে গড়তে অনুপ্রেরণা দেয়।

ফারুক

×