
বৃষ্টি প্রকৃতির এক অপরূপ রহস্য এবং আল্লাহর এক অশেষ নিয়ামত ও রহমত। বৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহ দুনিয়ায় কল্যাণ ও রিজিকের ব্যবস্থা করেন। রহমতের এই বৃষ্টিতে সিক্ত করে জমিকে জীবন্তকরণ ও ফসল উৎপাদনের উপযোগী করেন। সবুজ শ্যামল প্রাকৃতিক বনভূমিকে সজীব, সতেজ ও প্রাণবন্ত করেন। বৃষ্টি সৃষ্টিকুলের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। ফসল উৎপাদনের জন্য পানির কোনো বিকল্প নেই। পানিবিহীন পৃথিবীর অস্তিত্ব অকল্পনীয়। ধরাপৃষ্ঠের দুই-তৃতীয়াংশজুড়েই পানি। নদী-নালা, খাল-বিল, ডোবা-পুকুর কিংবা ভূগর্ভস্থ পানির উৎস সবই বৃষ্টির মাধ্যমে পূরণ হয়। ফসলি জমিতে পানির প্রধান জোগানদাতা বৃষ্টি। গ্রীষ্মের দাবদাহ কমাতে, রাস্তাঘাটের ধুলোবালি ধুয়ে দিতে, প্রকৃতির বায়ু বিশুদ্ধ করার্থে বৃষ্টির গুরুত্ব অপরিসীম। শুধু কি তাই?
বৃষ্টি ভেজা দিনে প্রকৃতি এক নির্জনতা খুঁজে পায়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য উৎসব ছড়িয়ে পড়ে মাঠে, ঘাটে, পুকুরে বনে সর্বত্র। বৃষ্টির সৌন্দর্য শুধু প্রকৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়-এটা মনকেও ছুঁয়ে যায়। শিশুদের কাছে বৃষ্টি মানে কাদামাটি মাখামাখি খেলা, কাগজের নৌকা ভাসানো, উঠোনে বা আঙিনায় ছোটাছুটি লাফালাফি ঝাপাঝাপি। বৃষ্টি মানে কেবলই পথঘাট আর গাছপালা ভেজানো নয়। বৃষ্টিতে তরুণদের মনও ভিজে। তাদের মনে এক অন্যরকম আবেগের রং ছড়ায়- কখনো প্রেম, কখনো সাহিত্যের ছোঁয়া লাগায়। শান্তিপ্রিয় লেখক মন নিরিবিলি পরিবেশে কাঁথামুড়ি দিয়ে শুনে টিনের চালে কিংবা গাছের পাতায় টাপুরটুপুর শব্দ আর রিনিঝিনি ছন্দ। বৃষ্টির শব্দ ছন্দে মাতোয়ারা হয়ে অনেকেই লিখে ফেলেন কবিতা, গল্প, উপন্যাস। সখের বশে অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজেন, সর্দি-জ¦রের ভয় থাকা সত্ত্বেও ভিজেন। বৃষ্টিতে ভেজার পর এক অন্যরকম সুখানুভূতি হয়। বৃষ্টিতে ভিজলে অনেক উপকার। বৃষ্টির পানিতে প্রাকৃতিকভাবে অ্যালকালাইন থাকে, যা চুলের ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। ভারি বর্ষণের ফলে পরিবেশে সৃষ্ট জলীয়বাষ্প ত্বকের জন্য উপকারী। শরীরের খসখসে ভাব, ফুসকুড়ি ও চুলকানির সমাধান হয়। ১০-১৫ মিনিট বৃষ্টিতে ভিজলে ভিটামিনের অভাব দূর হয়। বৃষ্টির পানি পান করলে শরীরে জমে থাকা টক্সিন বের হয় এবং হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে এসিডিটির মাত্রা এবং রোগের প্রকোপ কমে আসে।
কিশোরগঞ্জ থেকে
প্যানেল/মো.