ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ডিজিটাল দেশে আদিম ব্যবস্থাপনা

ওবায়দুল কবির

প্রকাশিত: ২০:৪৫, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ডিজিটাল দেশে আদিম ব্যবস্থাপনা

ট্রাফিক বিভাগ থেকে বলা হচ্ছে শব্দ দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা

খুব ছোট একটি সংবাদ ছাপা হয়েছে পত্রিকার পাতায়। পরিবেশ অধিদপ্তরের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে পরিবেশিত তথ্য অনুযায়ী ট্রাফিক পুলিশে কর্মরত ৪৫ শতাংশ সদস্য স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে কম শুনতে পাচ্ছেন। শব্দ দূষণের প্রত্যক্ষ শিকার হচ্ছেন তারা। একই সঙ্গে দূষণের শিকার পথচারীসহ সাধারণ মানুষও।

পরিবেশিত তথ্যে আরও বলা হয়, দেশের এক কোটি ৩৪ লাখ মানুষ শ্রবণ শক্তির কোনো না কোনো সমস্যায় ভোগছেন। সংবাদে দুটি বিষয় উঠে এসেছে। একটি হচ্ছে রাস্তায় কর্মরত ট্রাফিক পুলিশ এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে শব্দ দূষণ। প্রশ্ন হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশে রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের প্রয়োজন কি? রাস্তায় শব্দ দূষণ হচ্ছে কেন?
বিশে^র প্রায় সকল রাষ্ট্রে বড় শহরগুলোতে এই দুটির একটিও নেই। উন্নত-অনুন্নত রাষ্ট্রের কোনো বড় শহরেই এত ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি নেই। যারা নিজেদের ডিজিটাল বা স্মার্ট বাংলাদেশ দাবি করছেন না তাদের দেশেও নেই। বিশেষ প্রয়োজনে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। গাড়ির হর্নে শব্দ দূষণের প্রশ্নই ওঠে না। কোনো শহরে গাড়ির ড্রাইভাররা খুব প্রয়োজন না হলে হর্ন বাজান না। বাজালেও খুব ছোট করে কাউকে শতর্ক করার জন্য। আমাদের দেশের চালকরা কারণ ছাড়াই হর্ন বাজান, অনেকটা অভ্যাসবশত। এতে পথচারী,  ট্রাফিক পুুলিশ কিংবা কারও কোনো সমস্যা হতে পারে এমন চিন্তাও নেই তাদের মধ্যে।
সম্প্রতি রাজধানীর একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সকাল থেকে শুরু করে রাত একটা পর্যন্ত উচ্চ শব্দে মাইক বাজানো হয়েছে। একই মাঠে পরদিন একটি আনন্দ অনুষ্ঠানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উচ্চ শব্দে মাইক বেজেছে। মাইক শুধু অনুষ্ঠানস্থলেই ছিল না, তার দিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত শব্দের বিস্তৃতি করা হয়েছে। দুদিন ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় কোনো শিশু ঘুমাতে পারেনি। বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষকে আহাজারি করতে শোনা গেছে।

মাঠ সংলগ্ন মার্কেটে আগত হাজার হাজার মানুষকে হাত দিয়ে দুই কান চেপে চলাচল করতে দেখা গেছে। এলাকার মানুষ এই বিভীষিকাময় সময় পার করেছে দাঁতে দাঁত চেপে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। ফতোয়ায় হয়ত মৃত্যুদ- দিয়ে দেওয়া হবে। আনন্দ অনুষ্ঠানের আয়োজন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের। তাদের কিছু বলার সাহস করবে কে? প্রশ্ন হচ্ছে, প্রশাসন কি করেছে?

তারা এসে আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলতে পারতেন। মাইক বন্ধ কিংবা শব্দ সীমিত করে দিতে পারতেন। কেউই এলেন না। সাধরণ মানুষ এটি তাদের নিয়তি ভেবে মেনে নিয়েছেন। কোনো সভ্য সমাজে এটি সম্ভব কিনা আমার জানা নেই।
বিশে^র কোনো শহরে ট্রাফিক পুলিশ দেখা যায় না। কোনো সুনির্দিষ্ট কারণে তারা উপস্থিত হন। যানবাহন চলে ট্রাফিক নিয়ম অনুযায়ী। সম্প্রতি দার্জিলিং সফরের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি কয়েকটি পাহাড়ের চূড়ায় স্থাপিত শহরটিতে বড় বড় রাস্তা তৈরির সুযোগ নেই। কোনোরকমে দুটি গাড়ি পাশাপাশি চলতে পারে এমন রাস্তাই তৈরি করা হয়েছে। পর্যটন শহরটিতে নানা ধরনের গাড়ির সংখ্যা কম নয়। তবুও ট্রাফিক জ্যামের দেখা পাইনি চারদিনে।

পাহাড়ের গা কেটে তৈরি সরু রাস্তাগুলো খুব আধুনিক কিংবা প্রচুর ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে এমনটা নয়। মোড়গুলোতে ট্রাফিক সিগনাল রয়েছে। কোনো ড্রাইভারকে সিগনাল অমান্য করতে দেখিনি। এমনকি জ্যাম তৈরি হতে পারে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন গাড়ি চালাতে কাউকেই দেখা যায়নি।
উন্নত দেশের কথা বাদ দিলাম। বাড়ির পাশে ব্যাংকক, কুয়ালালামপুর এবং ভারতের শহরগুলোতেও ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে রাস্তার যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় না। ব্যাংকক ও কুয়ালালামপুর শহরের পুরনো এলাকাগুলোর রাস্তা এখনো খুবই সরু। এসব রাস্তায় ট্রাফিক সিগনালও বসানো হয়নি। গাড়ির ড্রাইভাররা নিজ দায়িত্বে ট্রাফিক আইন মেনে চলেন। মোড়গুলোতে কোনো গাড়িরই আগে যাওয়ার তাড়া দেখিনি। অন্য গাড়িকে আগে যেতে দিয়ে তারা ধন্য হন।

এটিই তাদের কৃষ্টি। এ কারণে এসব শহরে বিনা কারণে ট্রাফিক জ্যাম দেখা যায় না। আমাদের দেশে এগুলো কল্পনা করাও কঠিন। প্রায় সকল যানবাহনের ড্রাইভারের মনোভাব হচ্ছে ‘আমি চলে যাই, পরে তাদের যা হয় হোক, আমার কি?’
প্রশ্ন হচ্ছে ড্রাইভারদের এই মনোভাব কেন তৈরি হয়েছে। তারা ক্যান্টমেন্ট এলাকায় ঢুকে এমন আচরণ করেন না। ওখানে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য রাস্তায় কেউ দাঁড়িয়ে নেই। এই ড্রাইভাররাই ওখানে সিগনালের জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন। রাস্তা খালি থাকলেও তারা গাড়ি চালিয়ে দেন না। এই দৃশ্য নগরবাসীর সবার দেখা। এই পার্থক্যের কারণ খুব স্পষ্ট। রাস্তার ট্রাফিক সিগনাল দূরের কথা, দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্ট কিংবা কনস্টেবলকে চালকরা পাত্তাই দেন না।

দুই হাত তুলে আটকে রাখা গাড়িগুলো সুযোগ পেলেই ফাঁক-ফোকর গলিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করে। এতে গোটা এলাকায় সৃষ্টি হয় ট্রাফিক জ্যাম। অনেক ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনকারী সার্জেন কিংবা কনস্টেবলকে খুবই অসহায় মনে হয়।
রাজধানীর মগবাজার কিংবা বাংলামোটর মোড়ে অনেক সময় ১৫/২০ মিনিটও যানবাহন আটকে রাখা হয়। দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি যতক্ষণ মনে করেন ততক্ষণই আটকে রাখেন। অনেক ক্ষেত্রে বিরক্ত কোনো ড্রাইভারের গালি তাদেরকে উত্তেজিত করে দেয়। কখনো কখনো বিরক্ত ড্রাইভাররা একযোগে হর্ন বাজাতে থাকেন।

এই শব্দ ট্রাফিক পুুলিশের কানের ক্ষতির পাশাপাশি মানসিকভাবেও উত্তেজিত করে দেয়। তখন এই রাস্তার যানবাহন ছাড়তে হয়ত ৩০ মিনিটও লেগে যায়। রাস্তায় তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। কেউ কিছু বললে সোজাসাপটা জবাব, ‘ওপরের মহলে কথা বলেন।’ অর্থাৎ ওপরের মহলে কথা বলেও কোনো লাভ হবে না সেটি তারা নিশ্চিত। তাদেরকে ‘যেমন খুশি তেমন’ দয়িত্ব পালনের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বিশে^র কোথাও এমন দৃশ্য দেখা যাবে না।             
পরিবেশ অধিদপ্তরের এই আয়োজনটি ছিল চমৎকার। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সার্জেন্ট ও ট্রাফিক বিভাগের সদস্য এবং গাড়িচালক, সামাজিক ও পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংস্থার সদস্য ও বিশেষজ্ঞরা এতে উপস্থিত ছিলেন। ট্রাফিক পুলিশ ও গাড়ির চালকরা শব্দ দূষণ নিয়ে তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। বিশেষজ্ঞরা সংকট সমাধানে নানা উপায় নিয়ে বিস্তর মতামত দিয়েছেন।

তারা জানান, দায়িত্বে থাকা ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের ১১ দশমিক ৮ শতাংশ সদস্যের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩৩ দশমিক ৯ ভাগ ট্রাফিক পুলিশের অন্যদের কথা শুনতে কষ্ট হয়। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের ৯ দশমিক ৬ শতাংশ জনগণ অর্থাৎ ১ কোটি ৩৪ লাখ মানুষ কোনো না কোনো ধরনের শ্রবণ হ্রাসজনিত জটিলতায় ভুগছে। শ্রবণ হ্রাসের অন্যতম কারণ শব্দ দূষণ। এটি একটি নীরব ঘাতক।

কানের সমস্যার পাশাপাশি শব্দ দূষণ উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, হার্টের রক্তনালী ব্লক, ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরল বাড়াতেও ভূমিকা রাখে, মানসিক অবসাদ তৈরি করে। শব্দ দূষণের সবচেয়ে বেশি শিকার রাস্তায় দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শব্দ দূষণে সৃষ্ট রোগের চিকিৎসার চেয়ে দূষণ প্রতিরোধ জরুরি। শব্দ দূষণের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। যানবাহন এবং নির্মাণ কাজে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে শব্দ দূষণ কমানো যায়। প্রশাসনের উচিত উচ্চ ডেসিবল শব্দ সৃষ্টিকারী হর্ন আমদানি বন্ধ করা এবং পর্যায়ক্রমে বিদ্যমান হর্ন নষ্ট করা।

সপ্তাহে যে কোনো একটি দিন বা একটি ঘণ্টা অথবা একটি স্থান হর্নমুক্ত ঘোষণা করা যেতে পারে এবং তা বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে শব্দদূষণ রোধে পুলিশ, প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে কোনো বক্তা রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের অবস্থান, হাত দিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কারণ জানতে চাননি। কেউ প্রশ্ন করেননি ডিজিটাল বাংলাদেশে আদিম যুগের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কেন? প্রশ্ন করলেও লাভ কিছুই হতো না। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রচুর লেখালেখি হয়েছে। প্রকাশিত হয়েছে তথ্যভিত্তিক প্রচুর রিপোর্ট। এগুলো নিয়ে পাত্তাই দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

বিষয়টি নিয়ে ট্রাফিক বিভাগ একই বক্তব্য গত এক যুগের বেশি সময় ধরে প্রচার করছে। এক যুগ আগে তারা যে কারণ বলেছেন এখনো তাই বলছেন। ‘রাস্তার পরিমাণের চেয়ে গাড়ির সংখ্যা বেশি, দিনের একেক সময় একেক ধরনের গাড়ির প্রবাহ থাকে।’ এক যুগ আগের এই পরিসংখ্যানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও লাখ লাখ গাড়ি। তাদের বক্তব্য পরিবর্তন হয়নি। বক্তব্য পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনাও নেই। আদিম যুগের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বিশাল অঙ্কের অর্থনৈতিক লেনদেনের সম্পর্ক। জড়িয়ে রয়েছে হাজার হাজার মানুষের চাকরি।

আইনশৃঙ্খলার বাইরে ঊর্ধ্বতন মহল এ নিয়ে মাথা ঘামায় না কখনো। নিজের অবস্থান, চাকরি ঠিক থাকলেই হলো। দেশ গোল্লায় যাক। যা করার প্রধানমন্ত্রী করবেন। তিনি হাতে তুলে খাইয়ে দিবেন। আমরা শুধু ভোগ করব।
সত্তরোর্ধ্ব একটি মানুষ দিনে ১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম করেন। তার এই কঠোর পরিশ্রমে দেশ আজ সম্মানজনক স্থানে আসীন। বিশ^ অর্থনৈতিক মন্দায় এখনো দেশটি দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচু করে। দেশের যোগাযোগ খাতে বিপ্লব ঘটেছে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, রূপসা থেকে পাথুরিয়া এখন সড়ক যোগাযোগের নেটওয়ার্কে। রাজধানীর যানজট নিরসনে মেট্রোরেলের ব্যবস্থা করেছেন। শুরু হয়েছে পাতালরেল নির্মাণের কাজ। মানুষের জন্য তিনি একটি উন্নত জীবন ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন।

গড়ে তুলেছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষ ডিজিটাল সুবিধা ভোগ করছেন। হাতের মুঠোয় এখন গোটা পৃথিবী। দেশ প্রবেশ করেছে ক্যাশলেস সোসাইটিতে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পর প্রধানমন্ত্রী এখন স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি শুধু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায়। আদিম যুগের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জিজিটাল দেশের মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। শুধু রাজধানী নয়, সারাদেশের সড়ক ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা।

মহাসড়কে অটোরিক্সা চলতে পারবে না এমন আইন হয়েছে অনেক আগে। এখন দূরপাল্লার বাসগুলোকে রিক্সার পেছনের লাইন দিয়ে চলতে হচ্ছে। সড়ক নিরাপত্তায় আরও অনেক আইন হয়েছে। আইন কার্যকরের কোনো কর্তৃপক্ষ রয়েছে বলে মনে হয় না। 
ট্রাফিক বিভাগ থেকে বলা হচ্ছে শব্দ দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা। শুধু শব্দ দূষণ কেন, প্রখর রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে তাদেরকে পালন করতে হয় অমানবিক দায়িত্ব। বায়ু দূষণে তাদের ব্রঙ্কাইটিসসহ ফুসফুসের নানা রোগ হচ্ছে। টানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদে  দাঁড়িয়ে থেকে জন্ডিস হয়ে যাচ্ছে। এর দায় কার? ডিজিটাল যুগে রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাদেরকে কেন এমন অমানবিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।

বিশ্বের কোন্ শহরে ঢাকা বা চট্টগ্রামের চেয়ে যানবাহন কম? তারা অটো ট্রাফিক ব্যবস্থা কায়েম করতে পারলে আমরা কেন পারছি না। আমরা পারছি না স্বার্থসংশ্লিষ্টতার জন্য। পারছি না সদিচ্ছার অভাবে। ছোট শিশুও বুঝতে পারে এই ডিজিটাল যুগে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করার কোনো প্রয়োজন নেই। দায়িত্বশীল ব্যক্তি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে এই কাজটি সহজে করতে পারেন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে অপরাধী যানবাহনকে ধরা যায়, জরিমানা করা যায়।

সারাবিশ্বে তাই হচ্ছে। অজানা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসে শুধু অনৈতিক অর্থ আদায় করা সম্ভব নয়। অনৈতিক অর্থ আদায় বন্ধ করতে পারলে নিশ্চিত শাস্তির ভয়ে যানবাহনের কোনো চালক আইন ভঙ্গ করতে সাহসী হবেন না। সাহস পাবেন না উচ্চ শব্দে গাড়ির হর্ন বাজাতে। দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা, নাগরিক দুর্ভোগ কমানো এবং ট্রাফিক বিভাগের সদস্যসহ নাগরিকদের ক্ষতি কমাতে খুব দ্রুত বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। 

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, জনকণ্ঠ

×