
ছবি: জনকণ্ঠ
সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতে চালকদের চশমা প্রদান করার কথা জানিয়েছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা অখতার। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকাল ১০টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বিআরটিসি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) আয়োজনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ২৯, ৩০ এবং ৩১ জুলাই ৩ দিনব্যাপী বাস-ট্রাক চালকদের স্বাস্থ্য ও চক্ষু পরীক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈনুদ্দিন। এসময় তিনি বলেন চালকদের চোখ নিয়মিত পরীক্ষা করানো হলে প্রতি বছর সড়কে বহু মানুষের মৃত্যু ঠেকানো যাবে। তিনি আরও বলেন, অনেক সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হলো চালকদের চোখের রোগ এবং সচেতনতার অভাবে তারা চোখ পরীক্ষা করান না। তিনি এই কার্যক্রম চলমান রাখার এবং দেশের সকল চালককে এই স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আনার আশাবাদ ব্যক্ত করেন, যাতে চালকদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা যায় এবং দুর্ঘটনা হ্রাস পায়।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বের বক্তব্যে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা অখতার বলেন, চালকদের নিয়মিত স্বাস্থ্য ও চোখ পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি। কারণ গাড়ি চালাতে গিয়ে চালকদের শারীরিক, মানসিক ও চোখের উপর প্রচন্ড চাপ পড়ে। বিআরটিএ ও ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন কর্তৃক পরিচালিত গত ২০২৩ সালের কার্যক্রমে দেখা গেছে, প্রায় ৬৩ শতাংশ চালক স্বাস্থ্য সমস্যায় এবং ৬৭ শতাংশ চালক চোখের সমস্যায় ভুগছেন। যাদের চোখের পাওয়ার সমস্যা নির্ণয় হবে, তাদের ভিশন স্প্রিং-এর সহায়তায় বিনামূল্যে চশমা প্রদান করা হবে। এই কার্যক্রমে ব্লাড প্রেসার, ব্লাড সুগার লেভেল, অক্সিজেন লেভেল, উচ্চতা ও ওজন পরিমাপসহ সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চোখের চাপ, কালার ভিশন, গ্লকোমা/রেটিনা, পাওয়ার পরিমাপ ও নাইট ভিশন পরীক্ষাসহ চক্ষু পরীক্ষা করা হবে। এই উদ্যোগকে সফল করতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সহযোগিতা করছে, যার মধ্যে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন ও বারডেম হাসপাতালসহ প্রায় ২০ টি প্রতিষ্ঠানের সহযোগীতায় এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ এহছানুল হক এই উদ্যোগকে "অর্থবহ" বলে উল্লেখ করে বলেন-প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী পরিবহন খাতে প্রায় ৬০ শতাংশ চালক স্বাস্থ্য সমস্যায় এবং প্রায় ৬৬ শতাংশ চালক চোখের সমস্যায় ভুগছেন। তিনি লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নের প্রক্রিয়ায় চক্ষু পরীক্ষাকে আরও প্রতিষ্ঠানগতভাবে অন্তর্ভুক্ত করার উপর জোর দেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মোঃ সাইদুর রহমান বলেন-"গণপরিবহন চালকদের মধ্যে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা একটি সাধারণ বিষয়। এসময় তিনি চালকদের লাইসেন্স প্রদান এবং নবায়নের পূর্বে চক্ষু পরীক্ষা করার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং সকল চালককে এই স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশ নিয়ে নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি সতর্ক হওয়ার অনুরোধ জানান।
এসময় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) আব্দুল লতিফ মোল্লা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র তুলে ধরেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের রোড সেফটি প্রকল্প সমন্বয়কারি শারমিন রহমান।
এই স্বাস্থ্য ও চক্ষু ক্যাম্প রাজধানীর বিআরটিসি তেজগাঁও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল এবং তেজগাঁও ট্রাক টার্মিনালে পরিচালিত হবে।
আবির