ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

ঐকমত্য কমিশনে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে আজ

জুলাই সনদের খসড়ায় আপত্তি জামায়াত এনসিপিসহ কয়েক দলের

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:৫৬, ২৯ জুলাই ২০২৫

জুলাই সনদের খসড়ায় আপত্তি জামায়াত এনসিপিসহ কয়েক দলের

জুলাই সনদের খসড়ায় আপত্তি জামায়াত এনসিপিসহ কয়েক দলের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে চলমান সংলাপের মাধ্যমে তৈরি হওয়া জুলাই সনদের খসড়ার ভূমিকা ও উপসংহার রাজনৈতিক দলগুলোকে দেওয়া হয়েছে। সনদের এ দুই অংশে বড় ধরনের কোনো আপত্তি নেই রাজনৈতিক দলগুলোর। তবে, ভাষাগত ও শব্দগত কিছু আপত্তি রয়েছে জামায়াত, এনসিপিসহ অনেক দলেরই। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কোনো বিষয়ের ভাষা ও শব্দ ব্যবহার নিয়ে আপত্তি সেটি তারা এখনো জানায়নি, আজ বুধবার কমিশনকে জানাবে।
দলগুলোর দায়িত্বশীলরা বলছেন, কমিশন থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে দেওয়া খসড়ায় ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো পরে যুক্ত করে দেওয়া হবে বলা হয়েছে। এখন কেবল খসড়া সনদের ভূমিকা ও উপসংহারের অংশ দেওয়া হয়েছে। সেগুলোর ব্যাপারে মতামত আজ লিখিতভাবে কমিশনে জমা দেবেন তারা।
মঙ্গলবার দুপুরে মধ্যাহ্নভোজ বিরতির সময় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল, এবি পার্র্টির প্রধান মুজিবুর রহমান মঞ্জু, বিএলডিপির চেয়ারম্যান ও ১১ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম।
বৈঠক শেষে ব্রিফিংকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ প্রসঙ্গে বলেন, জুলাই সনদের খসড়ায় যে অঙ্গীকারের বিষয় বলা হয়েছে, আমরা একমত সেখানে। কোনো ভাষা বা শব্দগত সংশোধনী থাকলে আমরা দেব। আর দুই বছরের বাস্তবায়নের বিষয়েও বিএনপি একমত। 
খসড়া সনদের সমালোচনা করে ব্রিফিংকালে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আবু তাহের জুলাই সনদের খসড়া নিয়ে বলেন, ‘এটি অসম্পূর্ণ এবং কিছু অংশ বিপজ্জনক। যদি এটা শুধু নমুনা হয় তাহলে মন্তব্যের দরকার নেই। কিন্তু যদি এটিই চূড়ান্ত হয় তাহলে আমরা তা মেনে নিতে পারি না।’
তিনি বলেন, আইনি কাঠামো গঠনের ক্ষেত্রে জামায়াত দুটি বিকল্প প্রস্তাব করেছে। তা হলো- অধ্যাদেশের মাধ্যমে কাঠামো তৈরি করে পরে সংসদের অনুমোদন নেওয়া এবং গণভোটের মাধ্যমে জনগণের চূড়ান্ত অনুমোদন নেওয়া। আমরা চাই যেকোনো একটি পদ্ধতিতে কাঠামোটিকে আইনগত বৈধতা দেওয়া হোক। সংলাপ কার্যকর ও বাস্তবভিত্তিক না হলে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ‘অনিশ্চিত’ হয়ে পড়বে বলেও সতর্ক করেন জামায়াতের এই শীর্ষস্থানীয় নেতা।
এনসিপির জাভেদ রাসিন বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তা নির্বাচনের আগেই আইনগত ভিত্তি পেতে হবে এবং সেই ভিত্তিতে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন হতে হবে। এ দাবিতে প্রয়োজনে লিখিত অবস্থান জানাবে তাদের দল। তিনি অভিযোগ করেন, কমিশন ছয়টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতির কথা বললেও তা নিয়ে আলোচনা ছাড়াই হঠাৎ করে জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ করেছে, যা আমরা ‘সঠিক কাজ’ মনে করি না। এভাবে একতরফাভাবে কিছু চাপিয়ে দিলে তা আমরা মানি না।
তিনি আরও বলেন, দলটির ফোরামে আলোচনা করেই জুলাই সনদে সই করা হবে কি না সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমাদের স্পষ্ট অবস্থান আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়নকারী জোনায়েদ সাকি বলেন, জুলাই সনদের এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু, উচ্চকক্ষ, পিআর পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হলেও আমরা ঐকমত্য হতে পারিনি। আবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছি। আশা করছি, আমরা যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছি, কমিশন জুলাই সনদে সেই বিষয়গুলো যুক্ত করবেন।
এবি পার্টির প্রধান মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, বিতর্কমুক্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন ও প্রাকটিস করতে না পারলে গণতন্ত্র আবার হুমকিতে পড়বে। আর খসড়া জুলাই সনদের কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। আশাকরি, আলোচনার মাধ্যমে সেটি ঠিক হবে।

প্যানেল হু

×