
ছবি: সংগৃহীত
ওজন কমানোর জন্য ক্যালোরি গণনা কিংবা ব্যায়াম করা যেমন জরুরি, তেমনি দিনের শুরুটা কেমন হচ্ছে, সেটাও শরীরের মেটাবলিজম ও হরমোনের উপর বড় প্রভাব ফেলে। সকালে কিছু ছোট ছোট অভ্যাসই আপনার শরীরকে ওজন কমানোর অনুকূল অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সকাল ১০টার আগেই যেসব কাজ আপনি করবেন, তার প্রভাব পড়বে পুরোদিনের খাওয়া, চলাফেরা ও শক্তি ব্যবহারে। নিচে এমনই সাতটি কার্যকর সকালের অভ্যাস তুলে ধরা হলো—
১. প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠা
ছুটির দিন হোক বা কর্মদিবস—প্রতিদিন এক সময়ে জেগে ওঠা শরীরের সার্কেডিয়ান রিদম ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এতে করে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে, যেমন ক্ষুধার হরমোন ঘ্রেলিন এবং লেপটিন। এছাড়া কর্টিসল নিয়ন্ত্রণে থাকায় মেটাবলিজম ঠিকঠাক কাজ করে ও অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে।
২. চা-কফির আগে পানি পান করুন
রাতভর শরীর ডিহাইড্রেটেড অবস্থায় থাকে। ঘুম থেকে উঠে ৪০০-৫০০ মিলিলিটার পানি পান করলে হজম প্রক্রিয়া সক্রিয় হয়, টক্সিন বের হয় এবং ক্যালোরি পোড়ার হার বাড়ে। পাশাপাশি সারাদিন পানির প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দেয়, যা ফ্যাট বার্নিংয়ের জন্য জরুরি।
৩. হালকা ব্যায়াম করুন
সকালে ভারী এক্সারসাইজ না করলেও চলবে। ১০ মিনিটের হালকা স্ট্রেচিং, হাঁটা কিংবা যোগব্যায়ামও কর্টিসল হরমোন কমাতে সাহায্য করে। এতে মন ভালো থাকে, এনার্জি বাড়ে এবং সারাদিন স্বাস্থ্যকর সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
৪. সকালবেলা রোদে যান
ভিটামিন ডি-র জন্য নয় শুধু, রোদের আলো আপনার ঘুম-জাগরণের চক্রকে ঠিক করে এবং ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ায়। এতে কার্বস বেশি কাজে লাগে, চর্বি হিসেবে জমা হয় না। সকালের সূর্যালোক মেলাটোনিন কমিয়ে মনকে সতেজ রাখে ও শারীরিক সচেতনতা বাড়ায়।
৫. প্রোটিনসমৃদ্ধ নাস্তা করুন
সকালের নাস্তা বাদ না দিয়ে বেছে নিন প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার—যেমন ডিম, গ্রিক দই, বা প্রোটিন স্মুদি। এতে করে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে, ক্ষুধা কমে ও সারাদিন স্থির এনার্জি পাওয়া যায়। প্রোটিন হজম করতেও বেশি ক্যালোরি খরচ হয়।
৬. দিনের খাবারের পরিকল্পনা আগেভাগে করে নিন
সকালে কয়েক মিনিট সময় নিয়ে দিনের খাবারের একটি মানসিক পরিকল্পনা করে রাখলে তাৎক্ষণিক ভুল সিদ্ধান্ত বা অস্বাস্থ্যকর খাবারের ঝুঁকি কমে যায়। যেমন—দুপুরে কী খাবেন, বিকেলে কী নেবেন, রাতে কী খাবেন—সেটা ভেবে রাখলে অপ্রয়োজনে চিপস বা ফাস্টফুডে ঝুঁকবেন না।
৭. ওজন মাপুন (যদি মানসিকভাবে স্বস্তি পান)
সকালে খালি পেটে ওজন মাপা সবচেয়ে নির্ভুল হয়। এটি ওজনের ওঠানামা সম্পর্কে আপনাকে সচেতন করে তোলে। তবে যদি এটা মন খারাপ বা উদ্বেগ বাড়ায়, তাহলে এটি এড়িয়ে গিয়ে নিজের এনার্জি লেভেল বা জামাকাপড়ে স্বস্তি কেমন লাগছে সেটার দিকেই নজর দিন।
ওজন কমানো শুধু খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ বা ব্যায়ামের ওপর নির্ভর করে না। বরং সকালবেলা শরীরকে সঠিকভাবে প্রস্তুত করাই দীর্ঘমেয়াদে সফলতা এনে দিতে পারে। নিয়মিত এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলো আপনাকে স্থায়ীভাবে স্লিম ও সুস্থ রাখার পথে এগিয়ে নেবে—কোনো চাপ ছাড়াই।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
রাকিব