
ছবি: জনকণ্ঠ
বরিশালের ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও মাঠ রক্ষার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সর্বস্তরের রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষ।
আজ বুধবার (১৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বরিশালের রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এবায়দুল হক চাঁন।
লিখিত বক্তব্যে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ঐতিহ্য তুলে ধরে এবায়দুল হক চাঁন বলেন, ব্রিটিশ শাসনামলে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবটি বরিশাল শহরে অবিভক্ত বাংলার জাতীয় জাগরণের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
১৯৩৭ সালে বরিশালের জমিদার সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী শহরের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও খেলাধুলায় অংশগ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বরিশাল মৌজায় ৩৩ শতক জমি দান করেন।
১৯৪২ সালে তাঁর ছেলে সৈয়দ ফজলে রাব্বীর আনুকূল্যে শহরের মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবার মিলে এই স্থানে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবটি প্রতিষ্ঠা করেন।
তখন থেকে এখানে সকল খেলাধুলাসহ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সকল কার্যক্রম পরিচালিত স্থান হিসেবে পরিচিতি পায়।
পরবর্তীতে জমির সিএস পর্চা ও দলিল সূত্রে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরবর্তী উক্ত ৩৩ শতক জমি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সেক্রেটারির অনুকূলে বিএস পর্চা ভুক্ত হয়।
জানা গেছে, মুসলিম ইনস্টিটিউটের অনুকূলে এসএ/আরএস অনুযায়ী জমির পরিচিতি: বরিশাল মৌজা-৪৯ এর ৩০৪ নং খতিয়ানের ১৩৮/৮৮১নং দাগে ৩৩০ শতক জমি এবং বিএস জরিপে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সেক্রেটারির অনুকূলে বরিশাল মৌজা-৪৯ এর খতিয়ান ১৮৩১ (ডিপি-২৯), ১৮৪৩ ও ১৮৪৫ দাগে ৩৩০০ সন্ত্রাংশ জমি নিজস্ব অধিকারভুক্ত।
সংবাদ সম্মেলনে এবায়দুল হক চাঁন আরও বলেন, ইতিহাসের প্রথম দিকে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবটি মুসলিম ছেলে-মেয়েদের স্বার্থে পরিচালিত হলেও তা অচিরেই সকল জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সার্বজনীন খেলাধুলার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
ব্রিটিশ থেকে পাকিস্তান আমলসহ বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরবর্তী বরিশালের ক্রীড়া অঙ্গনে এই ক্লাবটির অবদান অপরিসীম।
কিন্তু ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি গভীর রাতে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবটিকে গুড়িয়ে দেয় তৎকালীন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
ওই সময় সকল দলিলপত্র ও আসবাবপত্র লুট করে নেওয়া হয়, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও বর্বরোচিত।
ক্লাব ও মাঠ ফিরে পাওয়ার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করা সত্ত্বেও তৎকালীন স্বৈরাচারের দোসররা আমাদের জমি ফিরিয়ে দেয়নি।
৫ আগস্টের পর ওই জমি জেলা প্রশাসক আমাদের বুঝিয়ে দেন।
আমরা সেখানে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করি। কিন্তু বর্তমান বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ওই জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলে জবরদখল করেন।
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের জমি উদ্ধারের জন্য সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের কাছে গেলে তিনি আমাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন।
বর্তমানে ওই জমিতে সিটি করপোরেশন গাড়ি পার্কিং করে রাখছে। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের জমি বুঝিয়ে না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল আলম ফরিদ, বাসদ নেত্রী ডা. মনীষা চক্রবর্তী, নজরুল হক নিলু, দুলাল মল্লিক, হাফিজুর রহমান হীরাসহ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব রক্ষা কমিটির সদস্যবৃন্দ।
মুমু ২