ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

প্রশান্তি ও সুরক্ষা

মো. নাসরুল্লাহ সাকিব

প্রকাশিত: ১৯:২০, ১৬ জুলাই ২০২৫

প্রশান্তি ও সুরক্ষা

পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের দিকে তাকালে আমরা দেখি সময়ের সঙ্গে বদলে যাওয়া জীবনের ছবি। একসময় যিনি ছিলেন কর্মপ্রাণ, পরিবারের মূল ভরসা, বয়সের ভারে তিনিই আজ হয়ে পড়েছেন কর্মশক্তিহীন ও অসহায়। এই সময়ে তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন আমাদের ভালোবাসা, সান্নিধ্য আর যত্ন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা যায়, অনেকেই এই দায়িত্ব  থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
প্রবীণদের যত্ন মানে কেবল শারীরিক যত্ন নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে মানসিক শান্তি আর সামাজিক সুরক্ষা। তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সঠিক ও পুষ্টিকর খাবার এবং অসুস্থতার ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করা জরুরি। একইসঙ্গে তাদের মানসিক সুস্থতার জন্য পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, আনন্দমুখর পরিবেশ তৈরি করা ও একাকিত্ব দূর করা উচিত। দৈনন্দিন জীবনে তারা যেন কষ্ট না পান সেজন্য ছোট  ছোট কাজে সহযোগিতা করা দরকার। যেমন: পোশাক পরতে, স্নান করতে বা খাবার গ্রহণে সাহায্য করা। তাদের জন্য নিরাপদ ও আরামদায়ক আবাসনের ব্যবস্থাও গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় বয়স্কদের জন্য বিশেষ সহায়তাপ্রাপ্ত আবাসন বা নার্সিং হোম প্রয়োজন হয়, যা তাদের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করে। প্রবীণদের জীবনে সামাজিক সমর্থনের ভূমিকা অনেক বড়। তাদের উৎসাহিত করা উচিত পারিবারিক বা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে, তাদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান ভাগ করতে। এতে তারা যেমন সমাজে অবদান রাখতে পারেন, তেমনি নিজেরাও প্রাসঙ্গিক ও প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন। আমাদের মনে রাখা দরকার, প্রবীণদের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা আমাদের নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব। তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া, দৈনন্দিন কাজে সহযোগিতা করা, সামাজিকভাবে সক্রিয় রাখা ও নিরাপদ পরিবেশ দেওয়া আমাদের কর্তব্য।
আজ যারা প্রবীণ, একদিন আমরাও সেই জায়গায় যাবো। তাই আসুন, প্রবীণদের প্রতি ভালোবাসা ও যত্ন দিয়ে তাদের শেষ জীবনের দিনগুলোকে সুন্দর, অর্থবহ ও আনন্দময় করে তুলি। তাদের হাসিই হোক আমাদের গর্বের চিহ্ন।
পূর্ব রামপুরা, ঢাকা থেকে

প্যানেল/মো.

×