ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

আট বছর ধরে পানিতে ডুবে আছে স্কুল! আড়িয়ায় শিক্ষার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায়

আব্দুল কাইয়ুম, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, শাজাহানপুর, বগুড়া

প্রকাশিত: ১৯:২৬, ১৬ জুলাই ২০২৫

আট বছর ধরে পানিতে ডুবে আছে স্কুল! আড়িয়ায় শিক্ষার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায়

দৈনিক জনকণ্ঠ

দীর্ঘ আট বছরেরও বেশি সময় ধরে চরম জলাবদ্ধতায় ভুগছে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া রহিমাবাদ বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়টি

নিচুস্থানে পতিত হওয়ায় ভারী বৃষ্টিতে আশপাশের এলাকার পানি গড়িয়ে বিদ্যালয় মাঠে জমা হয়। ফলে পানি নিষ্কাশনের কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় মাঠে জমে থাকা পানি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়ে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়ছেন এবং মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সালমা খাতুন বন্যা বলেন, স্কুলের মাঠ নীচু জায়গায় হওয়ায় চারপাশের পানি এখানে জমে থাকে। আগে মাঠে পানি থাকলেও শ্রেণিকক্ষ পর্যন্ত পৌঁছাত না। কিন্তু গত দুই মাস ধরে জমে থাকা পানি বারান্দা ছুঁই ছুঁই করছে।

তিনি আরও বলেন, মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার সময় পাশের ড্রেনটি উঠে গিয়ে সড়কের নিচে চলে যায়। ফলে পানি বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলে যাতায়াত এখন দুর্বিষহ। তারা কাদা-পানিতে ভিজে স্কুলে আসতে চায় না।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল সাফি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পানি জমে থাকায় এখন ওই পানি একেবারে নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে গেছে। এতে পা দিলেই চুলকাতে শুরু করে, খুব অস্বস্তি লাগে। এজন্য স্কুলে আসতে আর মন চায় না। তাছাড়া, বিদ্যালয়ের টিউবওয়েলটিও পানিতে ডুবে গেছে, ফলে আমরা সেখানে গিয়েও বিশুদ্ধ পানি নিতে পারি না।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলেন, শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা জরুরি। নইলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতির দায় কেউ এড়াতে পারবে না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রীনা আক্তার বলেন, বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের একাধিকবার জানানো হয়েছে। এমনকি গত বছর ঢাকার একটি টিম পরিদর্শনে এসেছিল। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

এ ব্যাপারে আড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বলেন, এই সমস্যা শুধু স্কুলের জন্যই নয়, পার্শ্ববর্তী পুরো পারার জন্য এটি একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। 

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বেঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কষ্টে থাকলেও শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করবেন। আমরা সমস্যাটি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি।

শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাইফুর রহমান বলেন, আমরা সমস্যাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। দ্রুতই প্রকৌশলীদের নিয়ে স্থানটি পরিদর্শন করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

হ্যাপী

×