
ছবি: প্রতীকী
অফিসে প্রতিদিন একই রুটিন, একই কাজ, একই চেহারা দেখতে দেখতে অনেকেই বিরক্ত হয়ে পড়েন। কাজের চাপ, বসের রাগ, কলিগদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব – সব মিলিয়ে একটা সময় অফিস লাইফ একঘেয়ে হয়ে যায়। কিন্তু একটু চেষ্টা করলেই এই একঘেয়েমি দূর করা সম্ভব। পাঁচটি ছোট ছোট পরিবর্তন আনলে অফিস জীবন আবার নতুন করে উপভোগ্য হয়ে উঠতে পারে।
প্রথম পরিবর্তন আনতে পারেন আপনার ডেস্কে। প্রতিদিন যেখানে আপনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটান, সেই জায়গাটা যদি প্রাণহীন হয়, তাহলে আপনার মনোভাবও হয়ে উঠবে ক্লান্তিকর। ডেস্কে ছোট একটা গাছ রাখুন। সুকুলেন্ট বা ক্যাকটাস জাতীয় গাছ দেখতেও সুন্দর আর যত্নও কম লাগে। একটা প্রিয় ছবির ফ্রেম, মজার কোটেশন বা রঙিন স্টেশনারিও আপনার ডেস্কে আলাদা প্রাণ আনতে পারে। ডেস্কটা নিজের মতো করে সাজিয়ে তুলুন। এতে করে আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়বে এবং একটা ব্যক্তিগত স্পর্শও পাবেন।
দ্বিতীয় পরিবর্তন আনতে পারেন আপনার দৈনন্দিন রুটিনে। অনেকেই অফিসে গিয়ে একনাগাড়ে কাজ করেন বা লাঞ্চ টাইম ছাড়া অন্য সময় উঠে হাঁটেন না। এটা শরীরের জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমন মনও বিরক্ত হয়। প্রতি এক ঘণ্টা পর পর দুই-তিন মিনিট উঠে হাঁটুন। জানালার পাশে গিয়ে বাইরে তাকান, একটু পানি খান, সহকর্মীর সাথে হালকা গল্প করুন। এতে কাজের গতিও বাড়বে, মনও ফুরফুরে থাকবে।
তৃতীয় পরিবর্তন আনতে পারেন পোশাকের ভেতর দিয়ে। আমাদের অনেকের ধারণা, অফিস মানেই গম্ভীর রঙের ফর্মাল পোশাক। কিন্তু একটু রঙিনতা আপনার মুড বদলে দিতে পারে। সপ্তাহে একদিন হলেও এমন কিছু পড়ুন যা আপনার পছন্দের, আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। এটা হতে পারে রঙিন শার্ট, প্রিয় কোনো স্কার্ফ বা এমন কিছু যা আপনার স্টাইলের সাথে যায়। নিজের প্রতি যত্ন নিলে নিজেকে ভালো লাগবেই।
চতুর্থ পরিবর্তন হলো মানুষের সাথে যোগাযোগে। অনেক সময় আমরা শুধু কাজ নিয়েই কথা বলি, অথচ একটু হালকা আলাপচারিতা অফিসের পরিবেশকে অনেক বেশি বন্ধুসুলভ করে তুলতে পারে। একদিন সহকর্মীদের সঙ্গে এক কাপ চা খেতে যান, কাজের বাইরে সিনেমা বা খেলাধুলা নিয়ে কথা বলুন, হয়তো কোনোদিন একটা টিফিন শেয়ার করুন। এতে সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হবে এবং অফিস হবে দ্বিতীয় বাড়ির মতো।
পঞ্চম পরিবর্তনটি হচ্ছে আপনার কাজের মানসিকতায়। অফিস মানেই শুধু বেতন আর দায়িত্ব নয়, এখানে আপনি প্রতিদিন শিখছেন, নিজের দক্ষতা বাড়াচ্ছেন। প্রতিদিন কাজের মধ্যে কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করুন। নিজের জন্য ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন – আজ নতুন কিছু জানবো, এই সপ্তাহে একটি প্রতিবেদন একটু ভিন্নভাবে তৈরি করব, ইত্যাদি। নিজের অগ্রগতি লক্ষ্য করুন, এতে আপনি অফিসকে আর কেবল বোঝা ভাববেন না, বরং নিজের উন্নয়নের ক্ষেত্র ভাবতে পারবেন।
একঘেয়ে অফিস লাইফকে একটু প্রাণবন্ত ও আনন্দদায়ক করে তুলতে এসব ছোট ছোট পরিবর্তন খুবই কার্যকর। এগুলো করতে কোনো বাড়তি সময় বা খরচ লাগে না, বরং নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী। নিজেকে ভালো রাখতে হলে ছোট ছোট আনন্দ খুঁজে নিতে হয়। অফিস জীবন তো চলবেই, তবে সেটাকে যদি আপনি নিজের মতো করে গুছিয়ে নিতে পারেন, তাহলে প্রতিদিন নতুন এক আগ্রহ নিয়ে কাজ শুরু করা সম্ভব। তাই আজ থেকেই শুরু করুন পরিবর্তন, এবং অফিস জীবনকে করে তুলুন একটু রঙিন, একটু প্রাণবন্ত।
এম.কে.